Bitter gourd cultivation has changes fortunes of some farmers in Kalapara.
পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় হাইব্রীড করলা চাষে সফলতা পেয়েছেন কৃষক। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে করলা চাষ করে বাম্পার ফলন পাওয়ায় স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে করলা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কলাপাড়ার আওতায় স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্ট (এসএসিপি) এর সদস্য হয়ে পঁচিশজন কৃষক গ্রুপ করে পাঁচ একর জমিতে করলা চাষ করে সফলতা অর্জন করেছে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারার কৃষক। করলা চাষের জন্য জমির বেড প্রস্তুত, আগাছা নিধন, সার, কীটনাশক প্রয়োগ থেকে ফসল উৎপাদন পর্যন্ত পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ করে বিশ লক্ষ টাকা আয়ের আশা করছেন কৃষক।
সরেজমিনে দেখা যায়, আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষে ২৫ কৃষকের সফলতা অর্জনে, তাদের পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরায় ইউনিয়নের অনেক কৃষক এখন করলা চাষ করে লাভবান। পুরো গ্রাম জুড়ে কৃষকের ক্ষেতে শুধু করলা আর করলা। প্রতি কেজি করলা ক্ষেত থেকেই ৩০-৩৫ টাকা দরে বিক্রী করছেন কৃষক। যা স্থানীয় বাজারে বিক্রী হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা দরে।
স্থানীয় কৃষকের দাবী, প্রভাবশালীরা খাল, স্লুইজগেট দখল করে মাছ চাষের জন্য খালে লবন পানি না ঢুকালে আমরা মিষ্টি পানি ব্যবহার করে সারা বছর কৃষিতে বাম্পার ফলন ফলাতে পারবো।
কৃষক আলতাফ হোসেন গাজী বলেন, ’বাংলাদেশের মধ্যে আমরা নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষকরা এসএসিপি এর প্রশিক্ষন পেয়ে সবচেয়ে বেশি করলা উৎপাদন করতে পেরেছি।’ কৃষক সুলতান গাজী বলেন, ’আগে আমরা সনাতন পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করতাম। এখন আমরা কৃষি অফিস থেকে এসএসিপি এর প্রশিক্ষণ পেয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষাবাদ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছি।’ কুমিরমারা গ্রামের কৃষক আব্দুল হক বলেন, ’আমরা কুমিরমারার কৃষকরা চৈএ মাস থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে মৌসুম উপযোগী সবজি চাষাবাদ করি। এতে আমরা সফলতার মুখ দেখেছি।’
কৃষক আবুল কালাম বলেন, ’আমরা কৃষকরা আগে মাঠের ধূলা টেনে কৃষিকাজ করতাম, বর্ষা এলে ধূলা ধুয়ে গিয়ে গাছের গোড়া পঁচে গাছ মরে যেত আমরা কৃষকরা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতাম। এখন আমরা কৃষি অফিসের পরামর্শে এসএসিপি প্রকল্পের প্রশিক্ষণ নিয়ে মাঠে উঁচু বেড করে সবজি লাগাই, এখন আর বেড ধুয়ে কৃষি নষ্ট হয়না।’
কৃষক আবুল কালাম আরও বলেন, ’আগে লোকাল বীজ দিয়ে চাষাবাদ করতাম, এখন আমরা হাইব্রিড বীজ দিয়ে চাষাবাদ করি। শুকনা মৌসুমে প্রভাবশালীরা মাছ চাষের জন্য খালে লবন পানি না ঢুকালে সারা বছর আমরা বাম্পার ফলন ফলাতে পারবো।’
পাখীমারা বাজারের সবজি আড়ৎদার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ’পাখিমারা থেকে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জায়গায় চারশত থেকে পাঁচশত মন করলা পাঠানো হয়। এতে কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত ফসলের কাঙ্খিক মূল্য পাচ্ছে।’
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আরাফাত হোসেন বলেন, ’নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষকরা প্রচুর পরিমান উচ্চ মূল্যের ফসল করলা উৎপাদন করেছে। তারা স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরন করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে করলা পাঠাচ্ছে।’
আরাফাত হোসেন আরও বলেন, ’এসএসিপি সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা কৃষকদের আমাদের অফিসে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। আধুনিক পদ্ধতিতে রেইজড বেড করে কিভাবে করলা চাষ করতে হয় তা আমরা কৃষকদের হাতে কলমে শিখিয়েছি। আর এ প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে কৃষকরা আজ লাভবান।’ - গোফরান পলাশ