News update
  • Rivers Keep Swallowing Land as Bangladesh Battles Erosion     |     
  • UN Warns Refugees Caught in Climate–Conflict Cycle     |     
  • Mohammadpur Sub-Jail in Magura lies abandoned     |     
  • BD trade unions demand 10-point climate action ahead of COP30     |     
  • Bangladesh criticises Rajnath remarks on Yunus     |     

‘লবণাক্ত হয়ে যেতে পারে ঢাকার চারপাশের জমি’

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক জীববৈচিত্র 2024-03-31, 10:03am

isufis98s-c0d97a8bfc652de620b4024adc580a981711857790.jpg




বৈশ্বিক জলবায়ু বিপর্যয়ের চরম ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ। যার প্রভাব দেশের সব অংশেই লক্ষ্যনীয়। চলমান পরিস্থিতিতে আগামী ১০০ বছরের মধ্যে সমুদ্রের অংশ হয়ে যেতে পারে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলা। এমনকি লবণাক্ত হয়ে যেতে পারে ঢাকার চারপাশের জমিও।

শনিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক এক সংলাপে এসব আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন পানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আইনুন নিশাত। এ সময় জাতিসংঘের সংস্থা ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন তিনি।

১৯৫টি দেশ একমত হওয়ার পর আইপিসিসি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জানিয়ে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত সতর্ক করেন, ১০০ বছর নয়; আগামী ৫০ বছরের মধ্যেও সৃষ্টি হতে পারে এমন পরিস্থিতি।

‘উপকূলের জীবন ও জীবিকা: সংকট ও করণীয়’ শীর্ষক এই জাতীয় সংলাপের আয়োজন করে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) নামক একটি সংগঠন।

সংলাপে রাজশাহী থেকে সিরাজগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ থেকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব-এই সারির মধ্যাঞ্চল লবণাক্ত হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক আইনুন নিশাত। তিনি বলেন, ঢাকা শহর খুব উঁচু। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই শহরের উচ্চতা ২৫ ফুট। তাই পানিতে তলিয়ে না গেলেও লবণাক্ত হয়ে যাবে ঢাকা শহরের চারপাশ। আর কামরাঙ্গীরচর বা জিঞ্জিরার উচ্চতা পাঁচ থেকে ছয় ফুট। তাই পানিতে তলিয়ে চলে যেতে পারে এসব এলাকা।

লবণাক্ততা একটি গুরুতর সমস্যা উল্লেখ করে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক এই বিশেষজ্ঞ বলেন, বাংলাদেশ ভারতকে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের সম্মতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে লবণাক্ততা সমস্যার শুরু। উজান থেকে পানি আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে লবণাক্ততা বাড়তে শুরু করেছে।

অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, নদী পানির সঙ্গে পলিমাটিও নিয়ে আসে। সরকার নদী খননের নামে কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করছে। এসব টাকা কোনো কাজে আসবে না। কারণ, খনন করার পর আবার পলি এসে দু-এক বছরের মধ্যে তা ভরাট হয়ে যায়।

জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, প্রকৃতি বদলাচ্ছে। আমাদের এই প্রকৃতিকে বুঝতে হবে। ষড়ঋতুর বাংলাদেশ আজ চার ঋতুতে পরিণত হয়েছে। আষাঢ়েও এখন বৃষ্টির দেখা পাওয়া যায় না। ফলে জীবন-জীবিকায় সংকট বাড়ছে। তাই উপকূলের মানুষ ভালো নেই। আগামীতে উপকূলে জলোচ্ছ্বাস ও দুর্যোগ বাড়বে। যার প্রভাবে ৫০ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে যশোর থেকে গোপালগঞ্জ, গোপালগঞ্জ থেকে চাঁদপুর ও চাঁদপুর থেকে ফেনী- এসব অঞ্চলের দক্ষিণাংশ সমুদ্রের অংশ হয়ে যাবে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি বাড়াতে হবে।

আসন্ন এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় নদী ও পরিবেশ বাঁচানোর তাগিদ দিয়ে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, নদীর পার দখল করে প্রস্তুত করা স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। নদী দখল করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা যাবে না। নদী বাঁচাতে হবে। পরিবেশ বাঁচাতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

ধরা’র সহ-আহ্বায়ক শরমীন মুরশিদ বলেন, নদী হলো পাবলিক প্রোপার্টি। এই নদীতে বাঁধ দেওয়া হচ্ছে কার সিদ্ধান্ত? নদীতে বর্জ্য ফেলা আইন করে বন্ধ করতে হবে। উপকূল রক্ষায় গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। উপকূলের কম্যুউনিটির মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের বেসরকারি উপদেষ্টা এমএস সিদ্দিকী বলেন, মানুষই যদি না থাকে তাহলে উন্নয়ন দিয়ে কী করবো। মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। বাঁচাতে হবে নদী ও পরিবেশকে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ঠেকাতে সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে।

রোমান ক্যাথলিক চার্চ ঢাকার আর্চবিশপ বিজয় নিসফরাস ডি’ক্রুজের সভাপতিত্বে ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’র সদস্য সচিব শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় জাতীয় সংলাপে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একুয়াকালচার বিভাগের চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ আলী এবং ব্লু প্ল্যানেট ইনিশিয়েটিভের গবেষণা ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন ব্যবস্থাপক মো. ইকবাল ফারুক। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।