News update
  • Metro rail services disrupted for power fault, passengers suffer     |     
  • UN Security Council condemns Jammu and Kashmir terror attack     |     
  • 250,000 mourners pay last respects to Pope Francis in 3 days      |     
  • US Restructuring Plan May Include World Bank, IMF & UN Agencies     |     
  • AL-BNP clash leaves over 50 injured in Habiganj     |     

সূর্যগ্রহণের সময় প্রাণীরা কেমন আচরণ করে?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক error 2024-04-08, 10:10am

skfjiorw0per9-307a31d9908af5fdc3f26d5a5fb9a2cf1712549482.jpg




সূর্যগ্রহণের সময় মানুষের মধ্যে বিস্ময় দেখা দিলেও প্রাণীদের কী অবস্থা হয় তা জানা নেই। সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদ যখন সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে ফেলে তখন পৃথিবীতে রাতের মতো অন্ধকার নেমে আসে। এই পরিস্থিতি প্রাণীদের মাঝে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।

প্রাণীরা ২৪ ঘণ্টার জীবন পরিচালনার জন্য জৈবিক ঘড়ির ওপর নির্ভর করে। একে বলা হয় সার্কাডিয়ান ছন্দ। আর এটি নির্ভর করে রাত ও দিনের ওপর। মূলত একটি প্রাণীর ঘুমানো, শিকার করার মতো নিত্যদিনের কাজকর্ম এই জৈবিক ঘড়ির ওপর নির্ভর করে।

প্রাণীদের নিয়মিত রুটিন ব্যাহত করে সূর্যগ্রহণ। এ কারণে প্রাণীরাও সূর্যগ্রহণে প্রতিক্রিয়া দেখাবে। মৌমাছিরা গুঞ্জন বন্ধ করে দেবে। পাখিরা শিস বাজাবে না। পোকামাকড় কিচিরমিচির শুরু করবে। কিছু পোষা প্রাণী অস্বাভাবিক আচরণ করবে। আচরণে বোঝা যাবে, তারা বিভ্রান্ত।

দিনের মাঝখানে যখন আকাশ হঠাৎ অন্ধকার হয়ে গেলে প্রাণীদের বিভ্রান্ত হয়ে পড়া স্বাভাবিক! সন্ধ্যার প্রাণীরা যেমন- ঘুরঘুরে পোকা এবং ঝিঁঝিঁপোকারা তাদের সান্ধ্য গান শুরু করে দিতে পারে। গরু ও ঘোড়ারা রাতের নিদ্রার প্রস্তুতি শুরু করে দিতে পারে আর পাখিরা ফিরতে শুরু করবে তাদের নীড়ে।

গাছপালার ওপরও সূর্যগ্রহণের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। ২০১৭ সালে সূর্যগ্রহণের পর বিজ্ঞানীরা খুঁজে পান, গাছেরা সালোকসংশ্লেষণ এবং পানি হ্রাসের হার কমিয়ে দিয়েছিল। যদিও এই হার রাতে যেমনটা ঘটে তার তুলনায় অনেক কম।

এমনকি অতি ক্ষুদ্র অণুজীবগুলোও সূর্যগ্রহণের অদ্ভুত কম্পনের জন্য সংবেদনশীল হয়ে উঠতে পারে। ২০১১ সালে ভারতে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় ল্যাবরেটরিতে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির একটি গবেষণায় দেখা যায়, গ্রহণ শিখরে পৌঁছানোর সময় ল্যাবের পাত্রের ব্যাকটেরিয়াগুলো ছোট এবং ভিন্ন আকারের হয়ে উঠেছে।

তবে সূর্যগ্রহণের সময় প্রাণীদের মাঝে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হয় তা নিয়ে খুব বেশি গবেষণা হয়নি। ফলে এ সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া বিরল সূর্যগ্রহণ অনেক বছর পর পর হয়ে থাকে। এ জন্য সব প্রাণীর আচরণ সমান হয় না।

এ বিষয়ে সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণগত পরিবেশবিদ সিসিলিয়া নিলসন বলেন, সূর্যের আলো পৃথিবীর প্রত্যেক প্রাণীর জন্য অপরিহার্য। একজন জীব বৈজ্ঞানিক হিসেবে আমরা কখনও সূর্যের আলো বন্ধ করতে পারি না। তবে পৃথিবী নিজ থেকেই সূর্যের আলো কিছু সময়ের জন্য বন্ধ করে দেয়। যাকে সূর্যগ্রহণ বলা হয়।

১০০ বছরেরও বেশি আগে নিউ ইংল্যান্ডের একজন কীটবিজ্ঞানী সূর্যের আলো না থাকার বিষয়টি পরীক্ষা করেছিলেন। উইলিয়াম হুইলার স্থানীয় সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন প্রচার করেছিলেন, ১৯৩২ সালের সূর্যগ্রহণের সময় প্রাণীদের আচরণের পরিবর্তনগুলো রেকর্ড করার জন্য জনসাধারণকে নিয়োগ করেছিলেন। তিনি ৫০০ এর বেশি তথ্য সংগ্রহ করেন। এতে দেখা গেছে, অনেক প্রাণি সূর্যগ্রহণের সময় নিজ আবাসস্থল ফিরে আসে।

২০১৭ সালের সূর্যগ্রহণের সময় বিজ্ঞানী এই ধরনের আরও একটি পরীক্ষা চালান। ওই সময়ে ২ মিনিট ৪২ সেকেন্ড ধরে সূর্যের আলোর ডেকে দেয় চাঁদ। এতে পৃথিবী অন্ধকারে ছেয়ে যায়। তখন প্রাণীজগতে যে পরিবর্তন দেখা যায় তা বিজ্ঞানীদের চমকে দিয়েছে। ওই সময়ে জিরাফ এলোপাথারি ছুটতে থাকে, দক্ষিণ ক্যারোলিয়ান একটি চিড়িয়াখানায় কচ্ছপগুলো সঙ্গমে লিপ্ত হয়, ভোমরা তাদের গুঞ্জন বন্ধ করে দেয়।

সোমবার (৮ এপ্রিল) পৃথিবীবাসী আবার একটি বিরল সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হতে যাচ্ছে। ফলে বিষয়টি আবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে। বিরল এই সূর্যগ্রহণ কানাডা, মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খালি চোখে দেখা যাবে। এ সময় মানুষের মাঝে কী ধরনের পরিবর্তন আসে তা লিখে রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। সূত্র: বিবিসি