নাটোরের সিংড়া উপজেলায় চলনবিলের সঙ্গে ৬টি নদীও পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। এতে করে মাছসহ জলজ জীব অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে সরকারকে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি। আর স্থানীয় মৎস্য বিভাগ জলজ জীবের অস্তিত্ব সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে বলছে, অনাবৃষ্টি ও দাবদহের কারণে এ পরিস্থিতি।
সারা বছর পানি চলমান থাকায় এ বিলের নাম হয় চলনবিল। এ বিলে এক সময় নদী খাল-বিলে সরা বছর মাছ পাওয়া গেলেও, এখন সেটি কল্পনা। প্রায় ৭০ বর্গকিলোমিটারের চলনবিলের মধ্যে নাটোরের সিংড়া উপজেলায় পড়েছে ২৬ বর্গকিলোমিটার। বর্তমানে সিংড়া উপজেলার ৬টি নদী ও বিলের এই ২৬ বর্গকিলোমিটার পানিশূন্য।
ডাহিয়া এলাকার রাশেদ বলেন, ‘১০ বছর আগেও চলনবিলে ৬ মাস ও নদীতে সারা বছর পানি থাকতো। সারা বছরই পর্যাপ্ত মাছ ও পাখি থাকতো। বর্তমানে বিলে ২ মাস ও নদীতে ৩ মাস পানি থাকে। ৬টি বড় নদীতে হাঁটুর নিচ পরিমাণ পানি থাকায় মাছশূন্য হয়ে যাচ্ছে চলনবিল। গত ১০ বছরে চাঁন্দা ও পাবদাসহ নানা ধরনের মাছ বিল থেকে হারিয়ে গেছে।
চলনবিল গেটের রাশেদ জানান, নদীগুলোতে সারা বছরই পানি ছিল। নৌপথে আরামদায়ক ও নিরাপদ চলাচল হলেও তা থেকে এখন বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু মাছই না, চলনবিল পানিশূন্য হয়ে পড়ায় ব্যাঙ, শামুক ও কাঁকড়া অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। চলনবিলে অবাধে পুকুর খনন ও রাস্তা নির্মাণের ফলে এই পরিস্থিতি। চলনবিল রক্ষা করতে সবাইকে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি সরকারকে নজর দেয়ার দাবি করছি।’
চলতি বছর চলনবিলের মাছসহ জলজ প্রাণির অস্তিত্ব সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে সিংড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন বলেন, ‘টানা দেড় মাসের দাবদহের কারণে এ পরিস্থিতি। পানিশূন্য চলনবিলের ১২টি অভয়াশ্রমে মাছসহ জলজ প্রাণি রয়েছে। এ অভয়াশ্রমগুলোতে সেচ দিয়ে তাদের টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। চলতি বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও বিলে পর্যাপ্ত পানি এলে এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।’
গত বছর সিংড়া উপজেলার আত্রাই, নাগর, গুড়, বারনই, নন্দকূজা ও বানগঙ্গা নদীসহ প্রায় ২৩ হাজার হেক্টর উম্মুক্ত প্লাবনভূমি থেকে ১২ হাজার মেট্রিক টন দেশীয় প্রজাতির মাছ আহরণ করা হয়েছিল বলে জানায় মৎস্য বিভাগ। সময় সংবাদ