ব্যক্তি মালিকানাধীন বিপজ্জনক বন্যপ্রাণীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে যুগান্তকারী এক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে। বড় প্রজাতির ‘বিড়াল’, যেমন—বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘ ইত্যাদির বাণিজ্যিক ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে সেখানকার সরকার। এছাড়া, শিগগিরই এই প্রজাতির বিড়ালের জীবাণুমুক্তকরণ কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে পাঞ্জাবে।
সোমবার (৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
সংবাদমাধ্যমটিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে পাঞ্জাবের প্রধান বন্যপ্রাণী রেঞ্জার মুবীন এলাহি বলেছেন যে, প্রথমবারের মতো ‘বড় বিড়ালের’ ব্যক্তিগত মালিকানা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি নিয়ন্ত্রক কাঠামো বাস্তবায়ন করছে পাঞ্জাব সরকার।
এখন পর্যন্ত পাঞ্জাবে ১৮০টি নিবন্ধিত বন্যপ্রাণী প্রজনন খামার তাদের মজুদ ঘোষণা করেছে, বর্তমানে যাচাইকরণ চলছে। ইতোমধ্যে অনিবন্ধিত স্থান থেকে ১৮টি বড় বিড়াল জব্দ করা হয়েছে, ৭টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রেঞ্জার মুবীন এলাহি আরও বলেছেন, কোনও অবস্থাতেই শহরাঞ্চল, আবাসন সমিতি বা আবাসিক এলাকায় সিংহ, বাঘ বা অনুরূপ বিপজ্জনক প্রাণী রাখার অনুমতি দেওয়া হবে না। তবে, বন্যপ্রাণী আইনের অধীনে সঠিক আবাসন পরিকাঠামো গড়ে তোলা বন্যপ্রাণী প্রজনন খামারগুলোকে বড় প্রজাতির বিড়াল রাখার অনুমতি দেওয়া হবে।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবিদ এবং পাঞ্জাব বন ও বন্যপ্রাণী টাস্ক ফোর্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বদর মুনির এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেছেন, বিশ্বের কোথাও আবাসিক বাড়িতে পোষা প্রাণী হিসেবে বিপজ্জনক প্রাণী রাখা হয় না। দুর্ভাগ্যবশত, পাকিস্তানে এটি একটি অদ্ভুত স্ট্যাটাস সিম্বল হয়ে উঠেছে। মানুষজন বাঘ-সিংহ সঙ্গে নিয়ে গাড়ি চালায়, টিকটক ভিডিও তৈরি করে।
মুনির জোর দিয়ে বলেন, বড় প্রজাতির বিড়ালকে চিড়িয়াখানা, বন্যপ্রাণী পার্ক বা নিবন্ধিত প্রজনন কেন্দ্রগুলিতে কঠোরভাবে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। জনবহুল এলাকায় বিপজ্জনক এই প্রাণী পালনে কখনই অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। পাঞ্জাব বন্যপ্রাণী কর্তৃক প্রবর্তিত নতুন নিয়মগুলো কোনোরকম ব্যতিক্রম ছাড়াই প্রয়োগ করা উচিত।