জলবায়ু সংকটে এক যুগান্তকারী রায় পেল বিশ্ব। এখন থেকে কার্বন নিঃসরণ বা পরিবেশ ধ্বংসের দায়ে এক দেশ আরেক দেশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে বলে রায় দিয়েছেন জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত।
ঐতিহাসিক এই রায়ে বলা হয়েছে, জলবায়ু সুরক্ষায় ব্যর্থ হলে তা হতে পারে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো চাইতে পারবে ক্ষতিপূরণ। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ অনেক উন্নত দেশ আগে থেকেই এই মামলার বিরোধিতা করছিল। তবে তা খারিজ করে দেন আদালত।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে দেখা দিচ্ছে মারাত্মক বিপর্যয়। বাড়ছে দাবানল, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা আর খরা। এই পরিস্থিতিকে ‘অস্তিত্বগত হুমকি’ বলে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত।
গত বুধবার (২৩ জুলাই) হেগে দেয়া ঐতিহাসিক রায়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) বলেছেন, পরিবেশ রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক আইনে দেশগুলোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
রায়ে আরও বলা হয়েছে, যেসব দেশ জলবায়ু রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। এতে ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ের পথ খুলে গেল।
আদালত বলেছেন, ‘পরিষ্কার, স্বাস্থ্যকর ও টেকসই পরিবেশ’ একটি মানবাধিকার, যা লঙ্ঘিত হলে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে পারবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো।
এই মামলার সূচনা হয়েছিল ভানুয়াতুসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের তরুণদের উদ্যোগে। তারা দাবি তুলেছিল, দূষণকারী বড় দেশগুলো ইতিহাসের দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায়ের ফলে জলবায়ু ইস্যুতে আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠার এক নতুন অধ্যায় শুরু হলো।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ অনেক উন্নত দেশ এই মামলার বিরোধিতা করেছিল। তারা বলেছিল, জলবায়ু ইস্যুতে ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির মতো চুক্তিগুলোই যথেষ্ট।
তবে আইসিজে তাদের যুক্তি নাকচ করে জানায়, প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর না করলেও বা ভবিষ্যতে সেখান থেকে সরে গেলেও, জলবায়ু রক্ষা করতে প্রতিটি রাষ্ট্র আন্তর্জাতিকভাবে বাধ্য।