News update
  • Dhaka, Delhi agree to bring down border killings to zero     |     
  • Natore’s Baraigram OC closed over negligence in bus robbery case     |     
  • Imported fruit prices surge by up to Tk 100 per kg     |     
  • 35% of air pollution in BD originates from external sources: Experts     |     
  • CPJ denounces Trump administration's action against AP     |     

অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মুক্তি ভোটের ফলে কোন প্রভাব ফেলবে?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক Nation 2024-05-12, 10:34am

fgsdgsdg-201ec6faa95ca0ad0609a0a07b60802e1715489067.jpg




প্রায় ৫০ দিন দিল্লির চূড়ান্ত নিরাপত্তায় ঘেরা তিহাড় জেল থেকে শুক্রবার রাতে ছাড়া পেয়েছেন দিল্লিরই মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ তাঁকে পয়লা জুন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছে। তাঁকে নির্বাচনের প্রচারের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে।

ভারতের চলমান লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম তথা শেষ দফার ভোটগ্রহণ হবে ওই পয়লা জুন, আর তার পরের দিনই আবারও তিহাড় জেলে ফিরতে হবে মি. কেজরিওয়ালকে।

বিরোধীদলগুলির বক্তব্য ছিল যে নির্বাচনের সময়ে সব দলকে সমান সুযোগ দেওয়ার যে নীতি আছে, মি. কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি সেই নীতির পরিপন্থী।

তবে ওই গ্রেফতারের ফলে বিরোধীদের প্রতি মানুষের সহানুভূতি বেড়েছে বলে মনে করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

আবার তিনি জেল থেকে জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরেও বিরোধী-দলগুলি লাভবান হবে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে দিল্লি এবং পাঞ্জাবের মতো রাজ্যে যেখানে আম আদমি পার্টির শক্তিশালী ভিত্তি রয়েছে, সেখানে যেমন নির্বাচনি লাভ তুলতে পারবে মি. কেজরিওয়ালের দল, আবার সামগ্রিকভাবে বিরোধী দলীয় ‘ইন্ডিয়া’ জোটও শক্তিশালী হবে।

আদালত কী আদেশ দিয়েছে?

আদালত তার আদেশে বলেছে যে পাঁচ বছর সময়কালে অনুষ্ঠিত হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া হল লোকসভা নির্বাচন।

অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়ার আগে আদালত এই বিষয়টি বিবেচনা করে দেখেছে।

আদালত বলেছে যে মি. কেজরিওয়ালের কোনও অপরাধমূলক রেকর্ড নেই এবং তিনি ‘সমাজের পক্ষে হুমকি’ও নন। এসব বিষয় বিবেচনা করেই আদালত মি. কেজরিওয়ালকে কিছু শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

নির্দেশে বলা হয়েছে, মি. কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে যাবেন না। দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সম্মতি পাওয়ার জন্য তাঁর স্বাক্ষরের প্রয়োজন না হলে তিনি কোনও ফাইলে স্বাক্ষর করবেন না।

জামিনের শর্তগুলির মধ্যে আরও বলা হয়েছে যে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে চলমান মামলা সম্পর্কে কোনও বিবৃতি দেবেন না এবং মামলার সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলবেন না। তবে তিনি তাঁর রাজনৈতিক কার্যকলাপ চালিয়ে যেতে পারবেন।

দিল্লি-পাঞ্জাবে আম আদমি পার্টির মনোবল বাড়বে?

লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে এখন। তিন দফায় ভোটগ্রহণ হয়েছে, এখনও চার দফা বাকি আছে।

আম আদমি পার্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ দুই রাজ্য দিল্লি ও পাঞ্জাবে এখনও ভোটগ্রহণ হয়নি।

আগামী ২৫শে মে দিল্লির সাতটি আসনে ভোট নেওয়া হবে, যার মধ্যে আম আদমি পার্টি চারটি আসনে এবং কংগ্রেস তিনটি আসনে লড়ছে। দুই দলই একসঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের হয়ে নির্বাচনে লড়ছে।

পাঞ্জাবের ১৩টি আসনেই লড়ছে আম আদমি পার্টি। সে রাজ্যে ভোট হবে পয়লা জুন। এই দুটি রাজ্য ছাড়াও হরিয়ানার একটি আসনে লড়ছে আম আদমি পার্টি। দিল্লির সঙ্গেই সেখানেও ভোট নেওয়া হবে।

লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ভোট হয়েছে ২৮৫টি আসনে, যার অনেকগুলিতেই আম আদমি পার্টির জন-ভিত্তি ছিল।

যেমন, গুজরাতে দল দুজন প্রার্থী দিয়েছে। এর আগে, ২০২২ সালের সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচনে মি. কেজরিওয়ালের দল পাঁচটি আসনে জয়ী হয়েছিল। তাদের প্রাপ্ত ভোট ছিল ১৩% ।

কেজরিওয়ালের মুক্তি কি বিরোধীদের সাহায্য করবে?

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মি. কেজরিওয়ালের জামিন পাওয়ার ফলে শুধু তাঁর দল নয়, গোটা ‘ইন্ডিয়া’ জোটই লাভবান হবে।

এর আগে আম আদমি পার্টির সংসদ সদস্য সঞ্জয় সিং যখন কিছু শর্তসাপেক্ষে জামিন পান, তখনও অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, দলের কর্মীদের মধ্যে নতুন করে উৎসাহ দেখা দিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা আম আদমি পার্টির প্রাক্তন নেতা আশুতোষ বলছেন, "অরবিন্দ কেজরিওয়ালের উপস্থিতি দিল্লি ও পাঞ্জাবে বড় প্রভাব ফেলবে। কেজরিওয়ালের যোগাযোগ দক্ষতা দুর্দান্ত এবং তিনি জনসাধারণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করতে পারেন।

আবার রাজনৈতিক বিশ্লেষক অদিতি ফাদনিস মনে করেন, এটা বিজেপির জন্য বড় ধাক্কা, অন্যদিকে মি. কেজরিওয়ালের জামিন পাওয়াটা আম আদমি পার্টির মনোবল অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে।

মিজ ফাদনিস অবশ্য বলছিলেন যে তার জামিন পাওয়া দিল্লিতে নিশ্চিতভাবেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, কিন্তু অন্যান্য রাজ্য কতটা কাজ করবে, তা নিয়ে খুব নিশ্চিত নন।

"পাঞ্জাবে তাঁর উপস্থিতি খুব একটা প্রভাব ফেলবে না। কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির জোটে সমস্যা রয়েছে সেখানে। দুই দলই একে অপরের বিরুদ্ধে নির্বাচন লড়ছে। তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণের পর থেকে মনে হচ্ছে বিরোধীরা যতটা আশা করা হয়েছিল ততটা খারাপ ফল করবে না।,” বলছিলেন মিজ ফাদনিস।

ফের জেলে যেতে হবে কেজরিওয়ালকে?

মি. কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে যে মূল মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল, শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে যে তারা সেই মামলা শুনবে। ওই শুনানিতে আদালত যদি তার গ্রেফতারিকে বেআইনি ঘোষণা করে, তাহলে মি. কেজরিওয়ালকে আর জেলে যেতে হবে না। কিন্তু তা না হলে দোসরা জুন তিহাড় জেলেই ফিরতে হবে তাঁকে।

কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো বা সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি দুই কেন্দ্রীয় এজেন্সিই দিল্লির মদের দোকানের লাইসেন্স সংক্রান্ত মামলায় মি. কেজরিওয়াল এবং বেশ কয়েকজন রাজনীতিক সহ অনেককে গ্রেফতার করেছে।

মি. কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে এনআইএ-কে চিঠি লিখেছেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর।

তাঁর অভিযোগ, খালিস্তানকে সমর্থনের অভিযোগে অভিযুক্ত নিষিদ্ধ সংগঠন 'শিখস ফর জাস্টিস'-এর কাছ থেকে অর্থ পেয়েছে আম আদমি পার্টি।

আইন বিশেষজ্ঞরা অবশ্য মনে করছেন, পয়লা জুনের মধ্যে মি. কেজরিওয়ালকে অন্য কোনও সরকারি সংস্থার হাতে গ্রেফতার হওয়ার সম্ভাবনা কম। বিবিসি বাংলা