News update
  • Sirajganj’s luxuriant mustard fields bloom as an oasis of gold     |     
  • Man killed after boat hits sand-laden bulkhead on Padma River     |     
  • Holy Shab-e-Meraj on January 16     |     
  • 2025: Resilient Economies, Smart Development, and More Jobs      |     
  • Dhaka rejects India's statement on incident at BD HC residence, New Delhi      |     

উপকূলে শুঁটকি উৎপাদন শুরু

গ্রীণওয়াচ ডেক্স অর্থনীতি 2023-11-12, 1:06pm

image-114070-1699770010-f801a6d71c0f6fd8a3a873141555d3a01699772807.jpg




বরগুনা ও পটুয়াখালী উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় শুঁটকি উৎপাদন মৌসুম শুরু হয়েছে। শুঁটকি তৈরির কাজে দুই জেলায় জেলে, শ্রমিক, ব্যবসায়ী মিলে ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলাসহ বিদেশের মাটিতেও বাঙালির রসনায় এ অঞ্চলের শুঁটকি তৃপ্তি জোগাচ্ছে। 

বরগুনার তালতলী উপজেলার আশারচর, নিদ্রা, সোনাকাটা, জয়ালভাঙ্গা; বরগুনা সদরের বালিয়তলী; পাথরঘাটা উপজেলার হরিণঘাটা, লালদিয়ার চরে শুঁটকির মৌসুম শুরু হয়েছে। দেশের বৃহত্তম মিষ্টি পানির দেশি মাছের শুঁটকিপল্লী বলে পরিচিত তালতলীর আশার চর। এ পল্লী থেকেই খাবার উপযোগী হয়ে শুঁটকি যাচ্ছে দেশ-বিদেশে। অন্যদিকে পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটার নিজামপুর এলাকায় গড়ে ওঠা ২০টি মহালে শুঁটকি উৎপাদিত হচ্ছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য দপ্তর সূত্র জানায়, এ বছর ৪ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন ৩০ হাজার জেলে, শ্রমিক ও ব্যবসায়ী। 

সাধারণত শুঁটকি পল্লীগুলোতে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পাঁচ মাস ধরে চলে শুঁটকি প্রক্রিয়া জাত করণের কাজ। জেলে, শ্রমিকরা দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। শুঁটকি শ্রমিকরা জানিয়েছেন, নদী থেকে কাঁচা মাছ শুঁটকিপল্লীতে নিয়ে আসার পর নারী শ্রমিকরা সেগুলো পরিষ্কার করেন। এরপর মাছগুলো পরিস্কার পানিতে ধুয়ে মাচায় শুঁকানো হয়। তিন-চার দিনের রোদে মাছগুলো শুঁকিয়ে শক্ত হয়। প্রায় ২৫ প্রজাতির মাছের শুঁটকি তৈরি করা হয় এখানে। এর মধ্যে রূপচাঁদা, ছুরি, কোরাল, সুরমা, লইট্টা ও পোয়া অন্যতম। এছাড়াও চিংড়ি, ভোল, মেদসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছেরও রয়েছে অনেক চাহিদা। এ অঞ্চলের শুঁটকি চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর, খুলনা ও জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হয়। প্রস্তুত করার সময় কোনো প্রকার কীটনাশক বা অতিরিক্ত লবণ দেয়া হয় না বলে এ এলাকার শুঁটকির চাহিদা একটু বেশি থাকে। এছাড়া এখানকার শুঁটকি, মাছের গুঁড়ো সারাদেশে পোল্ট্রি ফার্ম ও ফিস-ফিডের জন্য সরবরাহ হয়ে থাকে। শুঁটকি শ্রমিকরা জানান, আধুনিক পদ্ধতিতে শুঁটকি তৈরি করতে চান। আধুনিক পদ্ধতিতে তৈরি করতে পারলে উৎপাদন আরও বাড়তো; এতে শ্রমিক এবং জেলেদেরও কষ্ট কম হতো, সবাই লাভবান হতো। 

ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি কেজি ছুরি মাছের শুঁটকি ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা, রূপচান্দা ১ হাজার থেকে দেড় হাজার, মাইট্যা ৮শ থেকে এক হাজার, লইট্যা ৬শ থেকে ৭শ, চিংড়ি ৭শ থেকে ৯শ এবং অন্যান্য ছোট মাছের শুঁটকি ৩শ থেকে ৫শ ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। বরগুনার আড়তদাররা জানান, প্রতিটি শুঁটকি পল্লী থেকে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ১শ থেকে ১শ ৫০ মণ মাছ দেশের বিভিন্নস্থানে রপ্তানি হচ্ছে। কুয়াকাটার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এখানে কোনও কোনও দিন দুই কোটি টাকার বেশি শুঁটকি বিক্রি হয়। আড়তদাররা জানিয়েছেন, প্রতি মণ চিংড়ি-শুঁটকি ২৮ হাজার থেকে ৩৬ হাজার ও লইট্টা ২৪ হাজার থেকে ২৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুঁটকি ব্যবসায়ীদের দাবি এখান থেকে সরকারিভাবে এসব শুঁটকি বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। কারণ দেশ থেকে সরকারিভাবে শুঁটকি রপ্তানির কোনো ব্যবস্থা নেই; যদিও মধ্যপ্রাচ্য, ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ আরও অনেক দেশেই বেসরকারিভাতে নানা মাধ্যমে এখানকার শুঁটকি যাচ্ছে।

তালতলীর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম জানিয়েছেন, এ উপজেলা শুঁটকি মাছের জন্য বিখ্যাত। এ পেশাকে আরো আধুনিকায়ন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে মৎস্যজীবীদের বিভিন্ন রকমের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিষ ও কীটনাশক ছাড়া শুঁটকি তৈরির জন্য জেলেদের পরামর্শ দেয়া ও তদারকি করা হয়।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার মেট্রিক টন। আশা করছি, লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানিয়েছেন, বরগুনা-পটুয়াখালীর বিভিন্ন চরে শুঁটকি পল্লীতে বিভিন্নভাবে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা, কর্মসংস্থান হয়েছে। নদী ও সাগরে কয়েক হাজার জেলে, বিভিন্ন চরে কয়েক হাজার শ্রমিক নিরলস কাজ করছেন। ব্যবসায়ী আড়তদারসহ আরও কয়েক হাজার মানুষ এ শুঁটকি কারবারের সাথে জড়িত রয়েছে। জেলে ও ব্যবসায়ীরা যাতে নির্বিঘ্নে শুঁটকি উৎপাদন ও ব্যবসা করতে পারেন সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারিভাবে শুঁটকি রপ্তানির জন্য মৎস্য অধিদফতরে সুপারিশ পাঠানো হবে। তথ্য সূত্র বাসস।