News update
  • Hurricane Melissa: UN Appeals $74M to Aid 2.2M in Cuba     |     
  • Doha Summit Stresses Urgent Investment in People and Peace     |     
  • Sand syndicates tighten grip on Bangladesh's northern region     |     
  • Prof Yunus orders security forces to hunt down Ctg attackers      |     
  • IU suspends 3 students for assaulting journos, warns 9 others     |     

ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোর নজরদারির সিদ্ধান্ত, সর্বোচ্চ রেট ১২০ টাকা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক অর্থনীতি 2024-08-31, 6:47am

img_20240831_064218-c93556ec36d8e7a17973ae89740bf9cd1725065250.jpg




বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই অস্থিরতা বিরাজ করছে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে; বিশেষ করে ডলারের দামে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবার এ অস্থিরতায় লাগাম টানতে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোর নজরদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত, ব্যাংকগুলোতে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়ায় ডলারের দাম কিছুটা কমানোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমদানির দেনা পরিশোধ ও নতুন এলসি খোলায় ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ১২০ টাকা করে ডলার বিক্রি করতে পারবে। কোনো ব্যাংকই এর চেয়ে বেশি দাম রাখবে না।

এসব খাতে বর্তমানে ব্যাংক ভেদে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে প্রতি ডলারের দাম। এ হিসাবে নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দাম সর্বোচ্চ স্তর থেকে ৫ টাকা কমবে; যা আমদানি ব্যয় কমাতে কিছুটা হলেও সহায়ক হবে। স্বাভাবিকভাবেই আমদানি পণ্যের দাম কমে গেলে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপও কিছুটা কমে যাওয়ার কথা। তবে আগাম ডলার বেচাকেনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণ করবে।

এ ক্ষেত্রে নীতিমালা অনুযায়ী মেয়াদের ভিত্তিতে সুদ আরোপ করবে ব্যাংকগুলো। তবে নগদ ডলার বা ভ্রমণের ক্ষেত্রে ডলার ড্রাফট বিক্রিতে ব্যাংকগুলো প্রচলিত নীতিমালা অনুসরণ করবে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ডলার বেচাকেনার সঙ্গে সম্পর্কিত কর্মকর্তা ও ট্রেজারি বিভাগের প্রধানদের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈদেশিক মুদ্রা বেচাকেনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) সদস্যভুক্ত প্রায় সব ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানরা বৈঠকটিতে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বলা হয়, ব্যাংকগুলোতে ডলারের প্রবাহ বেড়েছে। ডলার সংকট নিয়ে যেসব সংশয় ও শঙ্কা ছিল সেগুলোও বেশ খানিকটা কমেছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ, বৈদেশিক অনুদান, রপ্তানি আয় দেশে আনার প্রবণতা বেড়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের খ্যাতি ব্যবহার করে বিদেশি বিনিয়োগ ও বৈদেশিক ঋণ প্রবাহ বাড়ানো সম্ভব হবে।

এছাড়া নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক খাতে অনিশ্চয়তাও অনেকটা কমে গেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলো ডলার বিক্রির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা করে দাম রাখবে। কোনো ব্যাংকই এর বেশি দামে ডলার বিক্রি করবে না। যেসব ব্যাংক এখনও ১২০ টাকার বেশি দামে ডলার বিক্রি করছে তারাও দাম ১২০ টাকার মধ্যে দ্রুতই নামিয়ে আনবে।

এর আগে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে আরও স্থিতিশীলতা আনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বার্তা দেওয়া হয়। বলা হয়, কোনো অনিয়ম হলে, তা সহ্য করা হবে না। এমন বার্তা পেয়েই ট্রেজারি প্রধানরা ওই বৈঠক করেন। আমদানির দেনা পরিশোধ ও নতুন এলসি খোলা ছাড়াও আন্তঃব্যাংকে ডলার লেনদেন সর্বোচ্চ ১২০ টাকার মধ্যেই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রেজারি প্রধানরা। বর্তমানেও সর্বোচ্চ ১২০ টাকা দরেই আন্তঃব্যাংকে ডলার বেচাকেনা হচ্ছে।

এদিকে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ১২০ টাকা করে আন্তঃব্যাংক থেকে ডলার কিনে তা আবার ১২০ টাকা করেই কীভাবে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করবেন? তাদের মতে, এতে ব্যাংকের লোকসান হবে।

বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন আইন অনুযায়ী, ডলার বেচাকেনার ক্ষেত্রে কোনো ক্রমেই লোকসান দিতে পারবে না কোনো ব্যাংক। কারণ এর আগে কয়েকটি ব্যাংক ডলার বেচাকেনায় বড় অঙ্কের লোকসান দেওয়ায় তাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছিল। সে কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই বিধান করেছে। এ অবস্থায় আন্তঃব্যাংক থেকে ১২০ টাকার কমে কিনলে তা গ্রাহকের কাছে ১২০ টাকায় বিক্রি করতে পারবে। কিন্তু এখন আন্তঃব্যাংকে ডলারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দাম ১২০ টাকায় স্থির হয়ে আছে। আলোচ্য সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হলে আন্তঃব্যাংকে ডলারের দাম ১০ থেকে ২০ পয়সা বা তার বেশি কমাতে হবে।

বৈঠকে রেমিট্যান্সের ডলারও সর্বোচ্চ ১২০ টাকা করে কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন থেকে কোনো ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলারের দাম ১২০ টাকার বেশি বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোকে অফার করবে না। বর্তমানে অনেক ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলার ১২২ থেকে ১২৪ টাকা করেও কিনছে। ফলে কিছু ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলারের দাম কমাতে বাধ্য হবে। তখন রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে কি না সেদিকে নজর রাখতেও বলা হয়।

এ প্রসঙ্গেও প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, রেমিট্যান্সের ডলার সর্বোচ্চ ১২০ টাকায় কেনা হলে তা কীভাবে ১২০ টাকায় বিক্রি করা যাবে? এ খাতে ব্যাংকের যে পরিচালন ব্যয় হবে, তা কীভাবে মেটানো হবে? তাই, রেমিট্যান্সের ডলারের দাম কিছুটা হলেও কমাতে হবে। এছাড়া দাম কমিয়ে প্রণোদনা দিয়ে প্রবাসীদের সুবিধা দিতে হবে। আগে ব্যাংকগুলো নিজস্ব তহবিল থেকে রেমিট্যান্সের প্রতি ডলারের বিপরীতে প্রবাসীদের সর্বোচ্চ আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিত। এখন প্রায় সব ব্যাংকই তা তুলে দিয়েছে। শুধু সরকারি খাতের আড়াই শতাংশ প্রণোদনা বহাল রয়েছে।

এসব সমস্যা সমাধানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, রপ্তানি আয়ের প্রতি ডলার ব্যাংকগুলো এখন কিনছে ১১৮ টাকা ১২ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১১৯ টাকা করে। এই দামে ডলার কিনে বিক্রির ক্ষেত্রে ব্যাংক ভালো মুনাফা করছে। সেই মুনাফা দিয়ে অন্য খাতে ডলারের দাম সমন্বয় করা যায়।

এছাড়া, নীতিমালা অনুযায়ী, আগাম ডলার বেচাকেনার ক্ষেত্রে মেয়াদ অনুযায়ী দাম কিছুটা বাড়াতে পারবে ব্যাংকগুলো। সে নীতিমালা মেনে ডলার বেচাকেনা করতে বলা হয়েছে। এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও ক্রলিং পেগের আওতায় ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১২০ টাকা নির্ধারণের বিধি জারি করেছে। ফলে ব্যাংকগুলোও ওই নীতিমালার মধ্যে থেকেই ডলার বেচাকেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।