News update
  • Dhaka seeks global pressure on Myanmar for lasting peace     |     
  • BSEC Chairman’s resignation urged to stabilise stock market     |     
  • Rain, thundershowers likely over 8 divisions: BMD     |     
  • First freight train leaves Mongla carrying molasses     |     
  • 2 dead, six hurt in Sherpur micro-autorickshaw-motorbike crash     |     

খেলাপি ঋণ ও মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ অর্থনীতিতে, চাপ থাকবে একবছর

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক অর্থনীতি 2024-10-15, 4:35pm

reterter-195bf2f0310a7cdd3eb126b5c81046ba1728988509.jpg




চলতি অর্থবছরের পুরোটা জুড়েই দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের চাপ বিরাজ করবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। একইসঙ্গে খেলাপি ঋণ ও উচ্চমূল্যস্ফীতিকে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি। পাশাপাশি আছে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাও। যার ফলে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) এবার ৪ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে তারা। অবশ্য, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরেই দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা দেখছে সংস্থাটি।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট আপডেট প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ইকনোমিস্ট ধ্রুব শর্মা, ইকনোমিস্ট নাজমুস খান এবং বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহেরিন এ মাহবুব। এ ছাড়া ওয়াশিংটন থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এই মুহূর্তে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো উচ্চমূল্যস্ফীতি, বহিস্থ খাতের চাপ, আর্থিক খাতের দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। এসব কারণে প্রবৃদ্ধি খুব বেশি বাড়বে না।

আর্থিক খাত নিয়ে বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ, ব্যাংকিং খাতে বিভিন্ন ধরনের সংকট রয়েছে, বিশেষ করে খেলাপি ঋণ অনেক বেশি। সরকারের অনেক প্রচেষ্টার পরও সেটি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি কমাতে ঋণের সুদেও হার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বেসরকারি খাতে ঋণ গ্রহণ কমেছে।

এ ছাড়া বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রেও বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বিরাজ করছে বলে অভিমত বিশ্বব্যাংকের। সংস্থাটি বলছে, এখনও বাংলাদেশের ৮৪ দশমিক ৯ শতাংশ কর্মসংস্থান অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। এটি অত্যন্ত উচ্চসংখ্যা। ২০১৬ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে শুধু ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে কর্মসংস্থান কমেছে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ হারে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে ৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ২ শতাংশের মধ্যে থাকবে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, মধ্যবর্তী এ পয়েন্ট হবে ৪ শতাংশ।

এর আগে গত এপ্রিলে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৫ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে চলমান অর্থবছরের বাজেটে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। সেই হিসাবে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস সত্য হলে, সরকারি লক্ষ্যের চেয়ে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ কম প্রবৃদ্ধি হবে এবার। সেইসঙ্গে এটি হবে কোভিড মহামারির পর সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।

চলতি অর্থবছরের পূর্বাভাস কমানোর পাশাপাশি বিশ্বব্যাংক গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলনও কমিয়ে ৫ দশমিক ২ শতাংশে নামিয়েছে। গত অর্থবছরের জন্য সরকারের সাময়িক প্রাক্কলন ছিল ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ।

কর্মসংস্থানের চাপ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে কর্মের বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। এটি একটি বড় সমস্যা। এক্ষেত্রে রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং শিক্ষার মান বাড়াতে হবে। দক্ষতার সঙ্গে বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার অমিল আছে। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে এসব বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ের পরিস্থিতিও খারাপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে খুব বেশি ভূমিকা রাখতে পারেনি। অথচ, প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ কর্মের বাজারে প্রবেশ করছে। বিশেষ করে শিক্ষিত ও শহুরে বেকার বৃদ্ধি পাওয়াটা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ।

তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জন্য উল্লেখযোগ্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে উচ্চমূল্যস্ফীতি। বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও এটি কমানো যাচ্ছে না। বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। এর ফলে সাধারণ মানুষের জীবনমান নিচে নেমে যাচ্ছে। পাশাপাশি বৈষম্যও বাড়ছে বাংলাদেশে। এ ক্ষেত্রে বৈষম্য কমানোর উদ্যোগ দরকার। অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং আর্থিক খাতে বিভিন্ন সংস্কার দ্রুত করতে হবে।আরটিভি