News update
  • Iran retaliates after Israeli strikes on its nukes, military     |     
  • Enact July Declaration, inspire nation make a bold restart     |     
  • Israel warns 'Tehran will burn' if Iran attacks again     |     
  • Projectile hits central Tel Aviv amid warning of Iranian retaliation     |     
  • Dhaka condemns Israeli strikes on Iran as threat to peace     |     

চব্বিশ বছর পর ভ্লাদিমির পুতিনের উত্তর কোরিয়া সফরে যা যা হতে যাচ্ছে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক কুটনীতি 2024-06-19, 3:22pm

etertrt-f1c0555eb92fd7c85b00d1b52dabe1b41718788931.jpg




রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং-এ পৌঁছেছেন এবং বিমানবন্দরের টারমাকের লাল গালিচায় তাকে স্বাগত জানিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং আন।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে মি. পুতিন নয় ঘণ্টার মতো সেখানে অবস্থান করবেন এবং এর মধ্যে বুধবার মি. কিমের সাথে প্রায় দেড় ঘণ্টার একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

মি. পুতিনের আনুষ্ঠানিক সম্বর্ধনা ছাড়াও সফরের শেষ পর্যায়ে একটি সংবাদ সম্মেলন এবং নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক বিষয়ে কয়েকটি যৌথ চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে এই দুই নেতার সাক্ষাৎ হয়েছিলো রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলের একটি শহরে। তবে ২০০০ সালের পর এই প্রথম পিয়ংইয়ং গেলেন মি. পুতিন।

উত্তর কোরিয়ার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভিয়েতনাম সফরে যাবেন এবং বাণিজ্যসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দেশটির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও সউল রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ এনেছে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে।

যদিও দুই দেশই কোন সামরিক চুক্তির বিষয়টি অস্বীকার করেছে, তবে গত বছরই তারা উভয় দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির অঙ্গীকার করেছিলো।

পুতিনের কাছ থেকে যা চাইবেন কিম

কিম জং আনের প্রধান চাওয়া হলো, ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণে এবং মহাকাশ কক্ষপথে স্পাই স্যাটেলাইট পাঠাতে রাশিয়ার সহযোগিতা।

স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য মহাকাশ প্রযুক্তিতে শক্তিশালী রাশিয়ার সাহায্য চাই উত্তর কোরিয়ার।

এছাড়া পারমাণবিক সাবমেরিন ও স্যাটেলাইট নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষায় রাশিয়ার কাছ থেকে সাহায্য চাইতে পারে উত্তর কোরিয়া।

এছাড়া রাশিয়ায় আরও বেশি শ্রমিক পাঠাতে চায় উত্তর কোরিয়া।

বিশ্লেষকরা অবশ্য বলছেন তিনি হয়তো কিছু পাবেন, কিন্তু যা যা চাইবেন তার সব পাবেন না।

“পুতিন জানেন উত্তর কোরিয়া সত্যিকার অর্থে তার সহযোগী নয় এবং তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে এমন সামরিক সক্ষমতা দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন,” বলছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ব্রুস ব্যানেট।

তার সঙ্গে একমত কারনেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের বিশ্লেষক অঙ্কিত পাণ্ডা। তিনি বলছেন, “আমাদের এমনটি মনে করা উচিত নয় যে পিয়ংইয়ং রাশিয়ার কাছ থেকে যা চাইবে তাই পাবে।”

তবে, তিনি মনে করেন উত্তর কোরিয়া গত কয়েক দশক ধরে নিজেরাই নিজেদের সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। যদিও রাশিয়ার প্রযুক্তি আরও বেশি দরকারি উপকরণ হতে পারে।

ব্যানেট বলছেন রাশিয়া মনে হচ্ছে স্বল্প ও দূরপাল্লার ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহে বেশি আগ্রহী, সাথে সম্ভবত কিছু মাত্রার পারমাণবিক অস্ত্র প্রযুক্তিও।

'পুতিন এবং কিমের স্বার্থ ভিত্তিক সম্পর্ক'

বিবিসি নিউজের জোয়েল গুইনতো লিখেছেন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক গভীর হলেও বিশ্লেষকরা বিবিসিকে বলেছেন যে 'এটি আসলে স্বল্প মেয়াদী লক্ষ্য অর্জনে একটি স্বার্থের সম্পর্ক'।

পুতিনের দরকার অস্ত্র আর কিমের প্রয়োজন সামরিক প্রযুক্তি।

“এতে কোন সন্দেহ নেই যে উভয় দেশের মধ্যে গত কয়েক বছরে সম্পর্ক শক্তিশালী হয়েছে।

তারপরেও সাম্প্রতিক সফর ও যোগাযোগগুলো উভয় দেশের ভূকৌশলগত অবস্থানের কারণে কিছুটা সুবিধাবাদী ও লেনদেন ভিত্তিক বলা যায়,” বলছিলেন নর্থ কোরিয়া লিডারশীপ ওয়াচের প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল ম্যাডেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিন উন-সিক বলেছেন, ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া রাশিয়ায় সাত হাজার কন্টেইনার গোলা বারুদ এবং অন্য সামরিক উপকরণ পাঠিয়েছে।

বিনিময়ে, পিয়ংইয়ং মস্কো থেকে দরকারি খাদ্য ও অর্থনৈতিক সহায়তা পেয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা।

ম্যাডেন বলছেন, এবারের সফরে দুই নেতা সম্পর্ককে কতটা এগিয়ে নিতে পারেন তার পরীক্ষা হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ কীভাবে দেখছে?

সউল থেকে শাইমা খলিল লিখেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় সবাই বিষয়টি কূটনৈতিক, রাজনৈতিক বা সাংবাদিকদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখছে না, বরং তাদের মধ্যে এ সফর নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে।

সিউল জি লি সফরটি সফরকে বেশি কিছু জানেন না, তবে তিনি উদ্বিগ্ন এ সফর দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে সম্পর্কে কতটা প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে।

“আমি কিছুটা উদ্বিগ্ন ইউক্রেন যুদ্ধ প্রলম্বিত হওয়া নিয়ে। কিম জং আন এবং পুতিন আবারো সাক্ষাৎ করলে তা দুই কোরিয়ার সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক হবে না। বরং মনে হচ্ছে খারাপের দিকেই যাবে,” বলছিলেন তিনি।

আর ৫৭ বছর বয়সী হিয়াং নিয়ান কিম অবশ্য বলছেন তিনি এ নিয়ে চিন্তিত নন।

“উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ শুরুর পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক মনে হচ্ছে আরও গভীর হচ্ছে।

কিন্তু উত্তর কোরিয়া তার সীমায়, চীনের বিষয়টিও মাথায় আছে। সূতরা আমি মনে করি না যে দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তায় এটি খুব একটা প্রভাব ফেলবে। এ খবরে আমি শঙ্কিত নই,” বলছিলেন তিনি।

ধারণা করা হচ্ছে এই সফরে প্রধান আগ্রহ থাকবে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে কী করে সামরিক সহযোগিতা বাড়ানো যায়, সে দিকে।

একই সাথে অন্যান্য ক্ষেত্র - যেমন অর্থনীতি, সংস্কৃতি, কৃষি, পর্যটন ও সামাজিক নানা বিষয়ে কী করে আরও পারস্পরিক আদানপ্রদান বাড়ানো যায় সেদিকেও নজর থাকবে।

বিশেষ করে সবচেয়ে আগ্রহ থাকবে ঠিক কখন প্রেসিডেন্ট পুতিন উত্তর কোরিয়ার সাথে অত্যাধুনিক অস্ত্র আদানপ্রদান এবং তাদের যে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে সে বিষয়টি উল্লেখ করবেন।  বিবিসি বাংলা