News update
  • Depositors stranded as Sammilito Islami Bank is in liquidity crisis     |     
  • BNP faces uphill task to reach seat-sharing deal with allies     |     
  • Bangladesh rejects India’s advice; vows free, fair polls     |     
  • Hadi’s condition very critical: Singapore Foreign Minister     |     
  • Asia-Pacific hunger eases, Gaza pipeline fixed, Europe hit by flu     |     

ট্রাম্পের শুল্কের বিপরীতে যে ৫ পদক্ষেপ নিলো চীন

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক কুটনীতি 2025-02-06, 6:42am

china-usa-7837f11f3b52258c8a7145ab586ebf0f1738802529.jpg




মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনি প্রচারণার ঘোষণা অনুযায়ী ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই চীনের ওপর শুল্ক আরোপ করেন। নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর চীনও পাল্টা পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দেয়। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র আকার ধারণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রে চীন থেকে পণ্য আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এটি গতকাল মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হয়। এরপরই বেইজিং প্রতিশোধমূলক কর আরোপের বিপক্ষে পদক্ষেপ নেবে বলে ঘোষণা দেয়।

দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি এই পদক্ষেপ তাদের জন্য নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরে চলা বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে নতুন করে আবারও দুই দেশের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়েছে। এর আগে ২০২৮ সালে বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে ও হুমকি দেওয়া হয়েছে।

ট্রাম্প বলেছেন, তিনি চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সাথে কথা বলার পরিকল্পনা করছেন।

এর মধ্যেই যদি চীন ১০ ফেব্রুয়ারি তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয় তাহলে এর প্রভাব কী হতে পারে?

কয়লা, তেল ও গ্যাস

বেইজিংয়ের পদক্ষেপের মধ্যে একটি হলো, যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে আমদানিকৃত কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ। এছাড়া অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা। এটি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে জীবাশ্ম জ্বালানি রপ্তানি করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাড়তি শুল্ক দিতে হবে।

চীন বিশ্বের বৃহত্তম কয়লা আমদানিকারক দেশ। তবে তারা এর বেশিরভাগই ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও মঙ্গোলিয়া থেকে সরবরাহ করে।

চীনের কাস্টমসের দেওয়া তথ্যানুসারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীন এলএনজি আমদানি বৃদ্ধি করছে। এই আমদানির পরিমাণ ২০১৮ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

২০২৩ সালে বিশ্ববাজার থেকে চীনের কেনা অপরিশোধিত তেলের মধ্যে মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হয়েছে। এর থেকে বোঝা যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তেলের ওপর চীন নির্ভরশীল নয়। তাই নতুন শুল্ক আরোপে তাদের অর্থনীতিতে খুব কমই প্রভাব পড়বে।

ট্রেড ইকোনমিস্ট এবং সেন্টার ফর ইকোনমিক সিকিউরিটি থিংক ট্যাংকের প্রধান নির্বাহী রেবেকা হার্ডিং বলেন, চীন চাইলেই রাশিয়া থেকে সহজেই আরও বেশি সরবরাহ পেতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম এলএনজি রপ্তানিকারক দেশ। বিশ্বব্যাপী যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো এর প্রচুর গ্রাহক দেশ রয়েছে।

কৃষি যন্ত্রপাতি, পিকআপ ট্রাক ও বড় গাড়ি

জ্বালানি তেলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা কৃষি যন্ত্রপাতি, পিকআপ ট্রাক এবং কিছু বড় গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে চীন।

কিন্তু চীন মার্কিন পিক-আপের বড় আমদানিকারক দেশ নয়। বরং ইউরোপ ও জাপান থেকে তাদের বেশিরভাগ গাড়ি আমদানি করে।

বিগত বছরগুলোতে চীন কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে খামারসংক্রান্ত যন্ত্রপাতি তৈরিতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। তাই কৃষি যন্ত্রপাতির ওপর শুল্ক আরোপ দেশীয় শিল্পকে চাঙ্গা করার জন্য চীনের আরেকটি পদক্ষেপ হতে পারে।

ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের চীনা অর্থনীতি বিভাগের প্রধান জুলিয়ান ইভানস–পিচার্ড বলেন, চীনা শুল্কের মুখে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। যা দেশটি থেকে চীনের আমদানি করা পণ্যের প্রায় ১২ শতাংশ। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে চীন থেকে আমদানি করা সাড়ে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য।

গুগলের বিরুদ্ধে তদন্ত

শুল্ক বাড়ানো ছাড়াও চীন যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছে। এর একটি হলো মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলের একচেটিয়া রাজত্ব বিরোধী তদন্ত। তবে কী ধরনের তদন্ত হবে, তা স্পষ্ট নয়। ২০১০ সাল থেকেই চীনে গুগলের সেবা বন্ধ রয়েছে।

তবে চীনে এখনো স্থানীয় ডেভেলপারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাজারে গেমস ও অ্যাপ্লিকেশন সরবরাহের উপস্থিতি রয়েছে। গুগল নিজেদের মাত্র এক শতাংশের মতো সেবা বিক্রি করে চীনে। তাই চীনে যদি গুগলের সেবা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়, তার প্রভাব প্রতিষ্ঠানটির ওপর খুব একটা পড়বে না।

ক্যালভিন ক্লেইন ‘অনির্ভরযোগ্য সত্তা’ তালিকায় যুক্ত হয়েছে

ডিজাইনার ব্র্যান্ড ক্যালভিন ক্লেইন এবং টমি হিলফিগারের মালিকানাধীন আমেরিকান কোম্পানি পিভিএইচকে ‘অনির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানের’ তালিকায় ফেলেছে চীন। চীনের অভিযোগ, এই ব্র্যান্ডগুলো চীনা উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে ‘বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে’।

২০২০ সালে প্রথম অনির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানের তালিকাটি তৈরি করেছিল চীন। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। ক্যালভিন ক্লেইন ও টমি হিলফিগার এই তালিকায় যুক্ত হওয়ার ফলে তাদের চীনে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হবে। ব্র্যান্ডগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে। করা হতে পারে জরিমানাও।

বিরল ধাতুর ওপর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ

যুক্তরাষ্ট্রে ২৫টি বিরল ধাতুর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে চীন। এর মধ্যে কয়েকটি ধাতু ইলেকট্রনিক পণ্য ও সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনের মূল উপাদান। এই ধাতুগুলোর মধ্যে রয়েছে টাংস্টেন। ধাতুটি মহাকাশবিষয়ক শিল্পের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ধাতুটি পাওয়াও কঠিন। চীন এই ধরনের ধাতু পরিশোধন করার ক্ষমতা অর্জন করেছে। বিশ্বব্যাপী পরিশোধিত উৎপাদনের প্রায় ৯০ শতাংশ তারা উৎপাদন করছে।

ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের চীনা অর্থনীতি বিভাগের প্রধান জুলিয়ান ইভানস-পিচার্ড বলেন, রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ দেওয়া হলেও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন চিপ, সেমিকন্ডাক্টর যন্ত্রপাতি, ওষুধশিল্প ও মহাকাশ সংক্রান্ত শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যেসব ধাতু যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীন আমদানি করে সেগুলোর ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে পূর্ববর্তী বিধিনিষেধের অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যাচ্ছে কোম্পানিগুলো লাইসেন্স পেতে হিমশিম খাবে।

চীনের এই বিধিনিষেধ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর প্রভাব কী হবে তা বলতে গেলে আপাতত মনে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরিকল্পনা রয়েছে। সোমবার ট্রাম্প বলেছেন, তিনি চান রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ইউক্রেনকে ৩০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার বিনিময়ে আরও বিরল মাটির ধাতু সরবরাহের নিশ্চয়তা দেবে দেশটি।