News update
  • Guterres Urges Leaders to Act as UNGA Week Begins     |     
  • BNP to go door to door for hearts and votes     |     
  • Chittagong port tariffs increased up to 50 per cent     |     
  • Rising Heat Cost Bangladesh $1.8 Billion in 2024     |     
  • Stocks extend gains; turnover drops in Dhaka, rises in Ctg     |     

ইউরোপকে আক্রমণ করে যা বললেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স

বিবিসি বাংলা কুটনীতি 2025-02-15, 6:16pm

ferwerqr-6f46514090ebeba120f03f6f1f18bab81739621768.jpg




যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স ইউরোপের দেশগুলোর উদ্দেশে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিলেন। তিনি বলেছেন এই মহাদেশটির হুমকি রাশিয়া কিংবা চীন নয়, বরং তারা 'নিজেরাই'।

মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের সম্ভাব্য অবসানের বিষয়ে কথা বলবেন বলে আশা করা হচ্ছিলো। কিন্তু তিনি বক্তৃতার বেশিরভাগ সময়ই ব্যয় করেছেন যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের সরকারগুলোকে দায়ী করে। তার অভিযোগগুলোর মধ্যে ছিল মূল্যবোধ থেকে সরে আসা এবং অভিবাসন ও মুক্ত মতের বিষয়ে ভোটারদের উদ্বেগকে উপেক্ষা করা।

মি. ভান্সের বক্তব্যের সময় হল জুড়ে ছিল নীরবতা। আর পরে সম্মেলনে যোগ দেয়া রাজনীতিকরা এর নিন্দা করেছেন। জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টরিয়াস বলেছেন এটা 'গ্রহণযোগ্য' নয়।

ট্রাম্প প্রশাসনের চিন্তাধারাকেই ভান্স বারবার বলেছেনে যে "ইউরোপকে তার নিজের নিরাপত্তার জন্য বড় পদক্ষেপ নিতে হবে"।

ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়টি তার বক্তব্যে এসেছে। যেখানে তিনি বলেছেন একটি যৌক্তিক সমঝোতায় পৌঁছানো যেতে পারে। এর আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে তিনি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শান্তি আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছেন।

ভান্সের ভাষণে সাংস্কৃতিক যুদ্ধ ইস্যু এসেছে। তার অভিযোগ ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধিরা মুক্তমতকে দমন করছেন। তিনি ব্যাপক অভিবাসনের জন্য ইউরোপকে দায়ী করেছেন। একই সাথে ইউরোপের নেতাদের 'এর কিছু মৌলিক মূল্যবোধ' থেকে সরে আসার জন্য অভিযুক্ত করেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাজা কাল্লাস একে ইউরোপের সাথে 'লড়াইকে চাঙ্গা করার চেষ্টা' হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ইউরোপের অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র।

রাশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত মাইকেল ম্যাকফাউল পলিটিকোকে বলেছেন ভান্সের মন্তব্য ছিল 'অপমানজনক' এবং 'অভিজ্ঞতার দিক থেকে অসত্য'।

ভান্স তার ২০ মিনিটের ভাষণকে ব্যবহার করেছেন যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের বিষয়ে বলার জন্য।

তিনি একটি মামলার বিষয়ও তুলেছেন, যেখানে একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা একটি গর্ভপাত ক্লিনিকের বাইরে প্রার্থনা করায় ১৫০ মিটার সেফ জোনের নিয়ম লঙ্ঘন করার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন।

এই সেফ জোনের বিষয়টি চালু করা হয়েছে ২০২২ সালের অক্টোবরে। এতে গর্ভপাতের পক্ষে বা বিপক্ষে যে কোনো তৎপরতা, প্রতিবাদ, হয়রানি কিংবা নজরদারি নিষিদ্ধ করা হয়। ভান্স দাবি করেন 'ব্রিটেনের ধর্মপালনকারীদের মৌলিক স্বাধীনতা' হুমকির মুখে পড়েছে।

জার্মানিতে একটি উত্তেজনাপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের নয় দিন আগে তিনি দেশটিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কট্টর ডানপন্থী অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)কে সহযোগিতা না করার বিষয়টি যে তীব্র বিতর্ক হচ্ছে তা নিয়েও কথা বলেছেন।

নাৎসিদের পরাজয়ের পর গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনের কয়েক দশক ধরে দেশটির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একেবারে ডানপন্থী দলগুলোর সাথে কাজ না করার বিষয়ে একটি ঐকমত্য ছিল।

"গণতন্ত্র এমন একটি নীতি যেখানে মানুষের কণ্ঠস্বর গুরুত্বপূর্ণ। দেয়াল তৈরির কোনো জায়গা নেই। আপনি হয় নীতি মানবেন কিংবা মানবেন না," বলেছেন তিনি।

তার বক্তব্যের পর এএফডির চ্যান্সেলর প্রার্থী অ্যালিস ভাইডেল সামাজিক মাধ্যম এক্স -এ মি. ভান্সের বক্তব্যের একাংশ শেয়ার করে লিখেছেন 'চমৎকার'। তারা পরে সাক্ষাৎও করেছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টরিয়াস তার বক্তৃতায় বলেছেন, "যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট পুরো ইউরোপের গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন এবং আমি যদি ঠিকমতো বুঝে থাকি তাহলে তিনি ইউরোপের একাংশ যেখানে স্বৈরতন্ত্র চলছে তার সাথে তুলনা করেছেন- এটা অগ্রহণযোগ্য।"

ভান্সও তার বক্তৃতায় রোমানিয়ার নির্বাচনের কথা উল্লেখ করেছেন, যেটি গত ডিসেম্বরে বাতিল হয়ে যায়। কিছু ডকুমেন্টস থেকে জানা যায় যে নির্বাচনটি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের শিকার হয়েছে।

ভান্স সম্মেলনে বলেন: "যদি আপনাদের গণতন্ত্র বিদেশি কোনো দেশের এক লাখ ডলারের ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের কারণে ধ্বংস হয় তাহলে সেটি আসলে শুরু থেকেই যথেষ্ট শক্তিশালী নয়।"

রোমানিয়ার প্রধানমন্ত্রী মার্সেল সিওলাসু বলেছেন তার দেশ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ধারক, যেই মূল্যবোধ ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শেয়ার করে।

"রোমানিয়ার সব প্রতিষ্ঠান নাগরিকদের ক্ষমতায়ন এবং স্বাধীনভাবে ভোট দেয়ার নিশ্চয়তার মাধ্যমে একটি মুক্ত ও অবাধ নির্বাচনের জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ," তিনি লিখেছেন এক্স-এ।

মি. ভান্স পরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।

জেলেনস্কি বলেছেন যুদ্ধ অবসানের পরিকল্পনায় আরও কাজ করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আর ভান্স বলেছেন তারা ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন।

ওদিকে ট্রাম্প জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা মিউনিখে সাক্ষাৎ করবেন। যদিও মস্কো বলেছে তারা সম্মেলনে কোনো প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে না।