News update
  • Guterres Urges Leaders to Act as UNGA Week Begins     |     
  • BNP to go door to door for hearts and votes     |     
  • Chittagong port tariffs increased up to 50 per cent     |     
  • Rising Heat Cost Bangladesh $1.8 Billion in 2024     |     
  • Stocks extend gains; turnover drops in Dhaka, rises in Ctg     |     

ইরানের কাছে পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

বিবিসি বাংলা কুটনীতি 2025-06-01, 12:50pm

fgrtrtertr-e5f572a4eb0b52da268d1df8fd6d43251748760643.jpg




তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে এক পরমাণু চুক্তির জন্য ইরানের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজ শনিবার এটি নিশ্চিত করেছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, তিনি তেহরান সফরকালে ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আলবুসাইদি 'যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তির কিছু বিষয়' তার কাছে উপস্থাপন করেছেন।

এ খবরটি আসার আগে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বলেছে যে, ইরান উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত বাড়িয়েছে। এটি পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লিয়াভিট শনিবার বলেছেন, চুক্তিটি গ্রহণ করে নেয়াই ইরানের জন্য সর্বোত্তম হবে। তিনি এও বলেন, "প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটা পরিষ্কার করেছেন যে ইরান কখনোই পরমাণু বোমার অধিকারী হতে পারবে না"।

লিয়াভিট বলেন, একটি 'বিস্তারিত ও গ্রহণযোগ্য' প্রস্তাব প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মাধ্যমে ইরানকে পাঠানো হয়েছে।

"নীতি, জাতীয় স্বার্থ ও ইরানের জনগণের অধিকারের সাথে সঙ্গতি রেখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের যথাযথ জবাব দেয়া হবে"- মি. আরাঘচি লিখেছেন সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ।

চুক্তিটির বিস্তারিত এখনো পরিষ্কার করা হয়নি। তবে এই প্রস্তাবটি এসেছে আইএইএ-এর রিপোর্টের পর। রিপোর্টটি বিবিসি দেখেছে।

এতে বলা হয়েছে, ইরানের হাতে ৬০ শতাংশ মাত্রার ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত আছে। এটি পরমাণু অস্ত্রের জন্য দরকারি ৯০ শতাংশ মাত্রার কাছেই।

তবে এটি পারমানবিক বিদ্যুৎ ও গবেষণার কাছে ব্যবহারের জন্য দরকারি মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। এছাড়া আরও পরিশোধন করলে দশটি পরমাণু অস্ত্রের জন্য এটা যথেষ্ট। এর মাধ্যমে পরমাণু অস্ত্র নেই এমন দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ইরানেরই এই মাত্রার ইউরেনিয়াম আছে।

ওই রিপোর্টের কারণে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির আইএইএ বোর্ড অব গভর্নরসকে ইরান অস্ত্র বিস্তার রোধের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করলো কি-না তা পর্যালোচনার জন্য চাপ দেয়ার পথ তৈরি হয়েছে।

ইরান বরাবরই বলে আসছে যে তার পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। শনিবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত মিডিয়ায় আইএইএ' র রিপোর্টকে ভিত্তিহীন অভিযোগ সম্বলিত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

ইরান বলেছে, আইএইএ গভর্নরস মিটিংয়ে তেহরানের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা হলে ইরান তার জবাবে পাল্টা ব্যবস্থা নিবে।

যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের পরমাণু সক্ষমতা সীমিত করতে চাইছে। গত এপ্রিল থেকে ওমানের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।

দু পক্ষই আলোচনার বিষয়ে আশাবাদী হলেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রকট মতভিন্নতা আছে। এর মধ্যে একটি হলো ইরান যে কোনো ভবিষ্যত সমঝোতার আলোকে সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যেতে পারবে কি-না।

তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে আলোচনা সত্ত্বেও ইরান পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির গতি শ্লথ করেছে বলে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

আইএইএ বলছে প্রতি মাসে একটি পরমাণু অস্ত্র তৈরির সমান উচ্চমাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ইরান উৎপাদন করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের ধারণা, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নিলে কয়েকমাসের মধ্যে তারা একটি পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারবে।

ইরান এ ধরণের চেষ্টার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে। তবে আইএইএ'র সিনিয়র পরিদর্শকদের ইরান পরিদর্শনের সুযোগ দেয়নি। এমনকি তারা দীর্ঘদিন ধরে থাকা কিছু প্রশ্নেরও জবাব দেয়নি।

এর আগে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির করা পরমাণু চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। এখন তিনি নতুন চুক্তি চাইছেন।

জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ), যা সংক্ষেপে ইরান পরমাণু চুক্তি নামে পরিচিত। এতে ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য স্বাক্ষর করেছিলো।

ওই চুক্তিতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সীমিত ও মনিটর করার কথা বলা হয়েছিলো, যার বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার কথা ছিলো।

কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প এটিকে খারাপ চুক্তি হিসেবে অভিহিত করে যুক্তরাষ্ট্রকে পরে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। তার মতে ওই চুক্তিতে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

এরপর নতুন করে চুক্তিতে আসার জন্য ইরানের ওপর আরও চাপ বাড়াতে ট্রাম্প আবারো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন।

এর মধ্যে তেহরান পরমাণু কর্মসূচি আরও জোরদার করেছে।

ট্রাম্প এর আগে কূটনীতির মাধ্যমে চুক্তি অর্জনে ব্যর্থ হলে ইরানের পরমাণু স্থাপনা লক্ষ্য করে বোমা হামলার হুমকি দিয়েছিলেন।