কোটা বাতিল আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমকে হল থেকে বের করে দেয়ার খবরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অমর একুশে হলের সামনে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে সারজিসের হল ছাড়ার নির্দেশের খবর ছড়িয়ে পরার পর অমর একুশে হলের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেখানে সারজিসকে হল থেকে বের করে দেয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা।
পরে রাত ১টার দিকে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইসতিয়াক এম সৈয়দ
ঘটনাস্থলে এসে সারজিসকে হল থেকে বের করা হবে না মর্মে নিশ্চয়তা দিলে শিক্ষার্থীরা অবস্থান তুলে নেন।
ছাত্রলীগের হাইকমান্ডের নাম ভাঙিয়ে অমর একুশে হল ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা সারজিস আলমকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। যদিও কারও নাম প্রকাশ করেননি সারজিস আলম।
তিনি জানান, ছাত্রলীগের হাইকমান্ড থেকে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি বলে তাকে জানানো হয়েছে। তার অভিযোগ, হল থেকে বের করে ক্রেডিট নিতে চেয়েছিলেন ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা।
সারজিস বলেন, আমার সঙ্গে ছাত্রলীগের হাইকমান্ডের কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, আমাকে যারা বলেছেন, তাদের সঙ্গে হাইকমান্ডের কথাই হয়নি। এটা ছাত্রলীগের হাইকমান্ডের নির্দেশনা ছিল না। এটা করেছে আমাকে বের করতে পারলে সেটা দেখিয়ে পদ পাওয়ার জন্য। তারা এটা স্বীকার করেছে, মাফও চেয়েছে।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।
ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবির মুখে কোটাপদ্ধতি বাতিল করে ৪ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
কিন্তু কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ২০২১ সালে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফিরে পাওয়ার জন্য উচ্চ আদালতে রিট করেন এবং গত ৫ জুন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এ রায়ের পর গত ৬ জুন থেকেই তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।
তারপর হাইকোর্টের ওই রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। বৃহস্পতিবার কোটার পক্ষের এক আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি করেনি আদালত। কিন্তু আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় স্থগিত না করায় পূর্বের নিয়মানুযায়ী সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা আপাতত বহাল রয়েছে। সময় সংবাদ।