News update
  • Dhaka’s air again turns ‘unhealthy’ Thursday morning     |     
  • SC reinstates caretaker govt system in BD Constitution     |     
  • Bangladesh can't progress sans women’s safety online & offline      |     
  • U.S. trade deficit drops 24% in Aug as tariffs reduce imports     |     

কোথায় যাচ্ছে গবির স্বাস্থ্যবীমার টাকা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ক্যাম্পাস 2024-09-11, 6:22am

img_20240911_062002-98c2b82a23d9a5bd0f632ddc456a7ec31726014141.jpg




প্রতি সেমিস্টারের সেমিস্টার ফি থেকে বিভিন্ন খাতে টাকা কেটে নিলেও সেই অনুযায়ী যথাযথ সুযোগ সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) শিক্ষার্থীরা। গবিতে প্রতি সেমিস্টারে একজন শিক্ষার্থীর থেকে খেলাধুলা বাবদ ৫০০ টাকা, সাংস্কৃতিক বাবদ ৫০০ টাকা, লাইব্রেরি ফি বাবদ ৫৫০ টাকা, স্বাস্থ্যবীমা বাবদ ৭৫০ টাকা নেওয়া হয়। এ ছাড়া ফিল্ড ভিজিট, ল্যাবরেটরি, ছাত্রসংসদসহ আরও অন্যান্য খাতে খরচ দেখিয়ে মোট সেমিস্টার ফি হিসাব করা হয়।

জানা যায়, প্রতি সেমিস্টারে স্বাস্থ্যবীমার নামে ৭৫০ টাকা করে কেটে নিলেও প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরেও কোনো প্রকার মেডিকেল টিম বা প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। খেলাধুলা চলাকালীন সময়ে কিংবা হুট করে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার জন্য যেতে হয় ক্যাম্পাস থেকে ১ কিলোমিটার দূরে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও নানা বিড়ম্বনার স্বীকার হতে হয় বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এ ছাড়াও ২০২০ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের কার্যক্রম পুরোপুরি স্থগিত থাকা সত্ত্বেও ছাত্র সংসদ বাবদ কেটে নেওয়া হয় ২০০ টাকা।

গবিতে বর্তমানে ৫টি অনুষদের অধীনে ১৭ বিভাগে ৮টি সেশনে শিক্ষার্থীরা অধ্যায়নরত আছে। প্রতি সেমিস্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৭০০ জন থেকে ৮০০ জন। ভর্তির হিসাবে প্রতি সেমিস্টারে এক একটি সেশন থেকে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা থেকে ৬ লাখ টাকার মত উঠে আসে।

অন্যদিকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। যেখানে তাদের থেকে ৬ মাস অন্তরের প্রতি সেমিস্টারে জনপ্রতি স্বাস্থ্যবীমা খাতে ৭৫০ টাকা করে প্রায় ৩০ লাখ টাকা উঠছে। সেক্ষেত্রে বাৎসরিক হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের খাতায় প্রায় ৬০ লাখ টাকা উঠছে শুধু এই স্বাস্থ্যবীমা বাবদই।

এদিকে পাশাপাশি একই প্রতিষ্ঠানের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল থেকে গবি শিক্ষার্থী হিসেবে কোনো বিশেষ সুযোগ সুবিধা না পাওয়া এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার প্রতি প্রদানকৃত স্বাস্থ্যবীমার সাথে হাসপাতালের কোনো যোগসূত্র আছে কিনা সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন একাধিক শিক্ষার্থী। টাকা জমা না দেওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

ফলিত গণিত বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মনজুরা আক্তার নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার সূত্র ধরে জানান, সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হলে সহপাঠীরা আমাকে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়। পরবর্তীতে চিকিৎসার পূর্বে ১০ মিনিট বসিয়ে রেখে টাকা আছে কি-না এ ধরনের প্রশ্ন করেন তারা। বিকাশে টাকা আছে জানার পরে সহপাঠীর কাছে ইনজেকশন আনতে দেওয়া হয়। আশেপাশে কোন আউটলেট না থাকায় বিকাশ থেকে ক্যাশ আউট করতে ঘণ্টা পার হলে পরে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। চিকিৎসকদের এমন আচরণ লজ্জাজনক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মবিনুল ইসলাম রাশা বলেন, প্রত্যেক সেমিস্টারে স্বাস্থ্যবীমার টাকা দিয়েও শিক্ষার্থীরা কোন সুবিধা পায় না। এভাবে প্রত্যক সেমিস্টারে নেওয়া টাকা গুলোর সঠিক খরচ না হলে তা জমা থাকার কথা, তবে সে টাকাও নেই প্রশাসনের কাছে। তাহলে এতদিনের এতগুলো টাকা প্রশাসন কী করলো তার সঠিক ব্যাখা দেওয়া এখন সময়ের দাবি। প্রশাসনের কাছে জানতে চাই, বিভিন্ন অজুহাতে যে টাকা নেওয়া হচ্ছে তা কোন খাতে খরচ হচ্ছে? কোথায় যাচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের টাকা?

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্যবীমা এবং ছাত্র সংসদের ক্ষেত্রে নেওয়া অর্থের পরিপূর্ণ হিসাব আমার জানা নাই। এ ব্যাপারে কাদের সাহেব (পরিচালক, অর্থ ও হিসাব বিভাগ) ভালো বলতে পারবেন। এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

স্বাস্থ্যবীমার ফি কোন খাতে খরচ হচ্ছে এ প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল কাদের জানান, পুরাতন প্রসপেক্টাস অনুযায়ী বিভিন্ন খাত উল্লেখ করে সেমিস্টার ফি হিসাব করা হলেও চলতি বছরের জানুয়ারিতে সংস্করণকৃত প্রসপেক্টাসে সেমিস্টার ফি থেকে স্বাস্থ্যবীমা, ছাত্র সংসদ, ফিল্ড ভিজিট (বিশেষ ডিপার্টমেন্ট ব্যতীত) খাতগুলো নেই। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য অন্তত প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা যাতে ক্যাম্পাসেই করা যায় সে ব্যাপারে আলোচনা চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ শিক্ষার্থীদের জন্যেই ব্যয় হয়। যেহেতু আমাদের প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান নয়, সেহেতু বিভিন্ন খাত উল্লেখ থাকলেও তা বিভিন্নভাবে সমন্বয় করা হয়। চিকিৎসা না পাওয়ার ব্যাপারটা দুঃখজনক। এ ব্যাপারে ট্রাস্টি বোর্ডে পূর্বেও জানানো হয়েছে। আবারও আলোচনা করা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। আরটিভি নিউজ।