২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী সংগঠনের নামসহ এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করা হয় সরকারী শ্রীনগর কলেজের ইনকোর্স পরীক্ষায়। ছবি: সংগৃহীত
মুন্সীগঞ্জের সরকারী শ্রীনগর কলেজের বিএসএস (অনার্স) ইনকোর্স পরীক্ষার একটি প্রশ্নপত্র নিয়ে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে প্রশ্ন করায় তা সিলেবাসের বাইরে বলে মনে করছেন অনেকে। এরমধ্যে প্রশ্নকর্তা শিক্ষক ৩৫ তম বিসিএসে উর্ত্তীণ হলেও তখন নিয়োগ পাননি তিনি; সম্প্রতি সরকার পতনের পর প্রভাষক হিসেবে কলেজটিতে নিয়োগ হয় তার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে কলেজটির অর্থনীতি বিভাগের ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস' বিষয়টির ইনকোর্স পরীক্ষা হয়। অর্থনীতি বিভাগের পরীক্ষা হলেও, বিষয়টি যেহেতু রাষ্ট্রবিজ্ঞান সংক্রান্ত; তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরাই ক্লাস নিয়েছিলেন।
সে হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিয়োগ দেয়া রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল যুবায়েরই ইনকোর্স পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করেন। তিনি ৩৫তম বিসিএসের হলেও, তৎকালীন সরকার তাকে নিয়োগ দেয়নি।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্র্যাকের চাকরি ছেড়ে তিনি গত পহেলা সেপ্টেম্বর শ্রীনগর সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন।
প্রশ্নপত্রে এই শিক্ষক যেসব প্রশ্ন করেন: ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী সংগঠনের নাম কি? ২০২৪ সালের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নাম কি? ২০২৪ এর ১০ জন বীর শহীদের নাম লিখ। গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশকে স্থিতিশীল রাখতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ছাত্র-জনতার ভূমিকা সংক্ষেপে লিখ। কোটা সংস্কার আন্দোলন কীভাবে ১ দফার আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়? আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায় আলোচনা কর। বাংলাদেশে চাকরিতে কোটা বৈষম্যের স্বরূপ এবং জাতিয় ঐক্য গঠনে কোটা ব্যাবস্থার প্রভাব আলোচনা কর।
এই প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
বিষয়টি নিয়ে কলেজটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মো. নাসির হোসাইন জানান, পুরো প্রশ্নটিই করা হয় সিলেবাসের বাইরে ৷ বিষয়টি তিনি অবগত হওয়ার পরপরই প্রভাষকের সাথে কথা বলেন এবং অধ্যক্ষকে অবহিত করেন ৷
কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তা নিয়ে রোববার (৬ অক্টোবর) আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তবে বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল যুবায়ের। তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুগত শিক্ষকরাই এই প্রশ্নপত্রটি ভাইরাল করেছেন। সিলেবলের বাইরে হলেও সঠিক প্রশ্নই আমি করেছি।’
সিলেবাসের বাইরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ইনকোর্স পরীক্ষাটি যে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে করা হবে, তা আগেই শিক্ষার্থীদের জানানো হয়েছিল।’