News update
  • UNGA urges renewed int’l efforts for a resolution of Rohingya crisis      |     
  • First National AI Readiness Assessment Report Published     |     
  • China calls for implementation roadmap for new finance goal     |     
  • New gas reserve found in old well at Sylhet Kailashtila field     |     
  • Revenue earnings shortfall widens in October     |     

তিন শিক্ষার্থীকে ‘গুপ্তহত্যার’ প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ক্যাম্পাস 2024-12-18, 8:15am

img_20241218_081435-dc3b77913e57313f9e2c1f3f911a3a5a1734488109.jpg




বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তিন শিক্ষার্থীকে ‘গুপ্তহত্যা’র প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে মিছিলটি শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের এই মিছিলের ব্যানারে লেখা ছিল ‘জুলাই অভ্যুত্থান ও ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনের তিন সহযোদ্ধার গুপ্তহত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ মিছিল।’

বিক্ষোভকারীরা সম্প্রতি দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (এআইইউবি) শিক্ষার্থী মো. ওয়াজেদ সীমান্ত ও ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তাজবির হোসেন শিহান ও ভাষানটেক সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুজানা হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেন।

মিছিলটি ভিসি চত্বর ও হলপাড়া হয়ে আবার রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়। এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেন, যে বিপ্লবীদের কাঁধে ভর দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেই বাংলাদেশে বিপ্লবীদের লাশ রাস্তায় পড়ে থাকে। বিপ্লবীদের রক্ত মাড়িয়ে ক্ষমতায় যাওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ ক্ষেত্রে নির্বিকার-নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করছে। এটা অশনিসংকেত। আমাদের স্বপ্নের কথা, প্রত্যাশার কথা আপনারা ভুলে গেছেন। ছাত্র-জনতার ম্যান্ডেট নিয়ে এ দেশে রাজনীতি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিগত সময়ে দেখেছি- আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীরা বলতেন দুর্নীতিবাজরা কোথায় দেখিয়ে দিন, আজকেও দেখেছি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন- ওবায়দুল কাদের কোথায় বলেন, আমরা গ্রেপ্তার করি। বিগত সময়ে কোথাও কোনো ভিন্নমতাবলম্বী মানুষজন ফিসফাস করে সেটা এক মিনিটে জেনে যায়। এখন পুলিশ প্রশাসন মন্ত্রী আমলারা কী করে, আমরা জবাব চাই। ছাত্রলীগ এখনও ৩২ এ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় হামলা, মিটিং, মিছিল, ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে। অথচ প্রশাসন নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে, আমরা ধিক্কার জানাই।

ভূতত্ব বিভাগের ছাত্র আবদুল কাদের বলেন, আমাদের শরীরের শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাব। গুপ্তহত্যা করে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা এখানে কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি জানাতে এসেছি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী, এই নতুন বাংলাদেশে কেন বিপ্লবীদের রক্ত ঝরে তার জবাব দিতে হবে প্রশাসন দিতে হবে। আমাদের বিপ্লবীদের রক্ষা এই সরকারকে করতে হবে। নাহলে এই সরকারের বিরুদ্ধেই আমরা আন্দোলন করব।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি মঞ্জু বলেন, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাতেহা শারমিন এ্যানি, নিতু আক্তার।

সমাবেশ শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক বার্তায় বলেন, দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ অজ্ঞাতনামা একজনের নির্মম মৃত্যু আমাদের সমাজের নিরাপত্তাব্যবস্থার ভয়ানক চিত্র তুলে ধরেছে। ওয়াজেদ সীমান্ত ও তাজবির হোসেন শিহানের মতো স্বপ্নময় তরুণেরা দুর্বৃত্তদের হাতে প্রাণ হারাচ্ছেন, যা একদিকে জাতির ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করছে, অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় আমরা গভীর শোকাহত। কিন্তু শোকের সঙ্গে আমাদের ক্ষোভও আছে। গাজীপুরের তাজবির হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি উত্থাপন করেছেন, যা ন্যায্য ও যুক্তিসংগত। এই দাবি বাস্তবায়নই পারে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার প্রতি প্রশাসনের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত করতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হলেও এখনও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।

বাকের মজুমদার বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাই, অপরাধীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করুন। রাজধানীসহ সারা দেশে টহল জোরদার করুন, যাতে আর কোনো মা-বাবার সন্তান এভাবে প্রাণ না হারান।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ভোরে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাজবির হোসেন শিহানকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। একইদিন নারায়ণগঞ্জে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সীমান্ত। এর দুইদিন পর শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সবশেষ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের লেক থেকে ভাষানটেক সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুজানার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আরটিভি