News update
  • Total Lunar Eclipse to Be Visible Sunday Night     |     
  • 5 killed when bus plunged in Laxmipur canal     |     
  • Dhaka loses $1.48 bn annually in remittance outflows: NALA     |     
  • 2 killed as bus hits CNG near Hanif Flyover, Jatrabari     |     
  • Fourth-Generation Nuclear Survivor Urges Global Justice     |     

ডাকসু নির্বাচন: কার ইশতেহারে কী?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ক্যাম্পাস 2025-09-07, 1:21am

ff9832a710b20c64622cb4103ffda8114dc251f06c56b37d-ef9a0247e3c2297b2cf6db3e2b3defeb1757186462.jpg




ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে ইশতেহার ঘোষণা করেছে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল সমর্থিত এবং স্বতন্ত্র প্যানেলগুলো। বেশির ভাগ প্যানেলের ইশতেহারেই অনেকটা মিল রয়েছে।

দেখা যায়, প্রায় সবগুলো প্যানেলের ইশতেহারেই আবাসন সংকট, নারীদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি, একাডেমিক পরিবেশ উন্নয়ন, গবেষণার মানোন্নয়ন, ডাকসুর সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছে। তবে কিছু কিছু প্যানেল বৈচিত্র‍্যও এনেছে ইশতেহারে। তবে এসব ইশতেহার বাস্তবায়ন করার সম্ভাব্যতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই।

এবারের ডাকসু নির্বাচনে অন্যতম শক্তিশালী প্যানেল ধরা হচ্ছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটকে। গত সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ৩৬টি সংস্কারের লক্ষ্য নিয়ে ইশতেহার ঘোষণা করে প্যানেলটি। সেগুলো উল্লেখ করা হলো-

১. ডাকসু নির্বাচনকে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করে প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন আয়োজন।

২. ফ্যাসিবাদমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা; গেস্টরুম, গণরুম সংস্কৃতির অবসান এবং সকল নিপীড়নের তদন্ত ও বিচার।

৩. প্রথম বর্ষ থেকেই বৈধ সিট নিশ্চিত করা। আবাসন সমস্যা সমাধানে অস্থায়ী হোস্টেল নির্মাণ বা ভাতা দেয়া এবং নতুন হল নির্মাণ।

৪. স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিতে পুষ্টিবিদের তত্ত্বাবধানে মেন্যু প্রণয়ন, মান পরীক্ষার ব্যবস্থা ও ‘মিল ভাউচার’ চালু।

 ৫. নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা করা। ছাত্রী হলে নারী কর্মচারী ও নারী প্রক্টর নিয়োগ।

 ৬ অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশাধিকার দেয়া এবং অভিভাবকদের জন্য ‘গার্ডিয়ান লাউঞ্জ’ তৈরি।

৭. মাতৃত্বকালীন ছুটি কার্যকর করা। এসময় পরীক্ষায় অংশ নিতে উপস্থিতির বাধ্যবাধকতা শিথিল করা।

 ৮. কমনরুমে নারী কর্মচারী রাখা, ব্রেস্টফিডিং রুম ও চাইল্ড কেয়ার কর্ণার স্থাপন।

 ৯.পেপারলেস রেজিস্ট্রার ভবন ও উচ্চশিক্ষা সহায়তায় ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ চালু।

 ১০. ডাকসু ওয়েবসাইট উন্নয়ন এবং অ্যাপ চালু করে তথ্যপ্রবাহ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ।

 ১১. শিক্ষক মূল্যায়ন পদ্ধতি  বাস্তবায়ন,  ‘মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম’, ই-লাইব্রেরি ও কম্পিউটার সেন্টার স্থাপন।

 ১২. রিসার্চ ফেস্ট, ট্রাভেল গ্র্যান্ট চালু এবং নিয়মিত সেমিনার আয়োজন।

 ১৩.  কেন্দ্রীয়, হল ও বিভাগীয় পাঠাগারকে সম্প্রসার এবং আধুনিকীকরণ করা।

 ১৪.  শিক্ষার্থীদের সফট স্কিল বাড়াতে ওয়ার্কশপ, জব ফেয়ার, স্টার্টআপ সামিট আয়োজন।

 ১৫. অ্যালামনাই নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ এবং উন্নয়নে তাদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিতকরণ।

 ১৬. উপাসনালয়ের উন্নয়ন এবং ছাত্রীদের জন্য উপযুক্ত ইবাদতের পরিবেশ নিশ্চিত করা।

 ১৭. মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ ও কাউন্সেলিং সুবিধা বৃদ্ধি।

 ১৮. মেডিকেল সেন্টার আধুনিকীকরণ; ‘DUMC’ অ্যাপ, বিশেষজ্ঞ নিয়োগ ও নারী চিকিৎসক নিশ্চিতকরণ।

 ১৯. হাসপাতালে বিশেষ ছাড় ও স্বাস্থ্যবীমা সমন্বয়; হলভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা ও ফার্মেসি স্থাপন।

 ২০. শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি’ চালু।

 ২১. ভাষা ইনস্টিটিউট আধুনিকীকরণ; বিদেশি শিক্ষক নিয়োগ ও রিসার্চ সেন্টার স্থাপন।

 ২২. গবেষণা বরাদ্দ বাড়ানো; আধুনিক যন্ত্রপাতি, সফটওয়্যার, বিশেষ করে ILET-এর ল্যাব উন্নয়ন।

 ২৩. বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ ও রিকশা ব্যবস্থাপন; হকার উচ্ছেদ, রেজিস্টার্ড রিকশা ও ভাড়া তালিকা প্রণয়ন।

 ২৪. যৌন হয়রানি ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন ও আইনি সহায়তা।

 ২৫. ফ্রি মেন্সট্রুয়াল হাইজিন প্রোডাক্ট একাডেমিক ভবনে সহজলভ্য করা।

 ২৬. ‘গ্রিভেন্স রেসপন্স টিম’ ও ভিক্টিম সাপোর্ট সেল গঠন এবং Ombudsperson নিয়োগ।

 ২৭. ই-মেইল অ্যাক্সেস বৃদ্ধি; জার্নাল ও অ্যাপ ব্যবহারে সহজলভ্যতা এবং অ্যালামনাইদের জন্য অফিসিয়াল ই-মেইলের ব্যবস্থা রাখা।

 ২৮. নতুন বাস ক্রয় ও ট্র্যাকিং অ্যাপ চালু; রুট, ট্রিপ ও অভ্যন্তরীণ শাটল সার্ভিস চালু।

 ২৯. ‘লিগ্যাল হেল্প ডেস্ক’ গঠন করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আইনি সহায়তা নিশ্চিতকরণ।

 ৩০. শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের উন্নয়ন; অন্তর্ভুক্তিমূলক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও ইনডোর গেমস সম্প্রসারণ।

 ৩১. টিএসসি উন্নয়ন; সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও ‘সাউন্ডবক্স’ ব্যবহারে নীতিমালা প্রণয়ন।

৩২. প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপযোগী ক্লাসরুম ও ওয়াশরুম নিশ্চিত করা।

৩৩. নারী শিক্ষার্থীদের সেলফ ডিফেন্স প্রশিক্ষণ চালু করা।

৩৪. হল কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু।

৩৫. শব্দ দূষণ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা রোধ ও মাসিক পরিচ্ছন্নতা অভিযান।

৩৬. সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক আধিপত্যবাদ মোকাবিলা করে নিজস্ব সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো।

রাজনৈতিক প্যানেলগুলোর মধ্যে সবার আগে ইশতেহার দিয়েছে ছাত্রদল মনোনীত আবিদ-হামিম-মায়েদ পরিষদ। গত ২৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে ১০ দফার লিখিত ইশতেহার পাঠ করেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। ছাত্রদলের ইশতেহার সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো

১. শিক্ষা ও গবেষণাকে প্রাধান্য দিয়ে আধুনিক, আনন্দময়, বসবাসযোগ্য, ও নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলা।

২. নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস, নারী স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি

৩. শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য বীমা নিশ্চিত করা এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাগ্রহণ ও চলাচল সহজতর করা।

৪. কারিকুলাম, অবকাঠামো ও পরীক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং গবেষণার মানোন্নয়ন।

৫. পরিবহন ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ, ব্যাটারিচালিত শাটল সার্ভিস প্রচলন এবং যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ করা।

৬. হয়রানিমুক্ত প্রশাসনিক সেবা, শিক্ষা ঋণ এবং ক্যাম্পাসভিত্তিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা।

৭. তরুণদের গঠনমূলক কাজে সম্পৃক্তকরণ এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বৃদ্ধি।

৮. শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল সুবিধা, সাইবার সিকিউরিটি এবং সাইবার বুলিং প্রতিরোধ।

৯. বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ সংরক্ষণ, সবুজায়ন ও প্রাণীবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরি।

১০. কার্যকর ডাকসু এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধিকরণ।

গত ৩০ আগস্ট ৮ দফার ইশতেহার দিয়েছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস) মনোনীত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেল। ৮ দফা সংক্ষেপে নিচে তুলে ধরা হলো-

১. ডাকসু নির্বাচন নিয়মিত করা, জাতীয় রাজনীতির মহড়া ও ক্যাডারভিত্তিক রাজনীতির অবসান, শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনকারীদের বিচারের আওতায় আনা।

২. স্বচ্ছ নিয়োগব্যবস্থা চালু, ওয়ান স্টপ সলিউশন, পেপারলেস প্রশাসন, ডিজিটাল ক্লাসরুম, ল্যাব আধুনিকায়ন, শিক্ষক মূল্যায়ন, নতুন স্টাডি স্পেস, ক্রেডিট ট্রান্সফার, সিসিটিভি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।

৩. শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ওয়ান কার্ড অল সার্ভিস, ওয়ান স্টুডেন্ট ওয়ান সিট, আবাসন সংকট নিরসন, স্বাস্থ্যবীমা, মেডিক্যাল সেন্টার আধুনিকায়ন, ল্যাপটপে সুদবিহীন ঋণ, হোম টিউটরিং ও হোস্টিং সার্ভিস চালু।

৪. দাড়ি-টুপি, বোরকা-হিজাবসহ পোশাক ও আঞ্চলিকতার বিরুদ্ধে মোরাল পুলিশিং রোধ, ধর্ম, জাতিসত্তা ও মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য বন্ধ করা।

৫. স্টারলিংক ইন্টারনেট, এডুরোম ফ্রি ওয়াইফাই, চক্রাকার বাস, ভর্তুকিযুক্ত খাবার, নতুন ক্যান্টিন, হোম টিউটরিং সার্ভিস চালু করা।

৬. আধুনিক লাইব্রেরি, ই-লাইব্রেরি, ক্যারিয়ার ক্লাব, আউটসোর্সিং প্রশিক্ষণ, উদ্যোক্তা হাব গঠন।

৭. ঢাবিতে মিউজিয়াম ও কালচারাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা, আধুনিক জিমনেসিয়াম তৈরি, সাংস্কৃতিক বরাদ্দ বৃদ্ধি, হলভিত্তিক খেলার মাঠ সংস্কার।

৮. নারী হলগুলোতে খেলাধুলার সুযোগ বৃদ্ধি, ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু, মেয়েদের নামাজের স্থান সম্প্রসারণ, অনাবাসিক নারীদের হলে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা, জনপরিসর নারীবান্ধব করা।

‘নয় দলীয়করণ, নয় বিরাজনীতিকরণ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ডাকসু নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে উমামা ফাতেমার নেতৃত্বাধীন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল।

গত মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন প্রাঙ্গণে ইশতেহার ঘোষণা করে প্যানেলটি। সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার পাঠ করেন প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাজনীতি সচেতন করা, ক্যাম্পাসকে দলীয় রাজনীতি মুক্ত রাখা এবং অ্যাকাডেমিক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ইশতেহারে ১১টি লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী প্যানেল। সেগুলো হলো-

১. প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক কাঠামোতে দলীয়করণের পথ বন্ধ করা। জুলাই অভ্যুত্থানের মানবাধিকার লঙ্ঘন ডকুমেন্টেশন করা। ১৫-১৭ জুলাই হামলায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা। প্রতিবছর ডাকসু নির্বাচন নিশ্চিত করা।

২. গবেষণা বাজেট ২ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত করা। হল, আবাসন, লাইব্রেরি ও রিডিং ফ্যাসিলিটি উন্নয়ন করা। স্মার্ট টেক অবকাঠামো (স্মার্ট ক্লাসরুম, হাই-স্পিড ইন্টারনেট, ক্যাম্পাস অ্যাপ, সিসিটিভি) তৈরি। নিয়মিত শিক্ষক মূল্যায়ন ও শিক্ষার্থীদের ফিডব্যাকের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া। উপস্থিতির ভিত্তিতে নম্বর দেওয়ার নিয়ম শিথিল করা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসকে উন্নত করা ও বই প্রকাশ বাড়ানো। জরুরি অনুবাদকর্মের উদ্যোগ নেয়া।

৩. প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যায্য বেতনে পার্ট-টাইম চাকরির সুযোগ তৈরি।

৪. ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্প্রীতি রক্ষা করা। ধর্মীয় উৎসবের আগে-পরে পরীক্ষা না রাখা। আদিবাসীদের প্রধান উৎসবকে ক্যালেন্ডারে ছুটি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা। সংখ্যালঘু ও আদিবাসী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় স্থায়ী প্রশাসনিক কমিটি গঠন।

৫. যৌন নিপীড়ন সেল কার্যকর করা ও অনলাইন আপডেট নিশ্চিত করা। আইনি সহায়তা সেল গঠন করা। সাইবার সিকিউরিটি সেল গঠন করা। অনলাইন-অফলাইনে নিপীড়ন বা বুলিংয়ের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া।

৬. প্রতিটি হলে প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে ক্যান্টিন ও ডাইনিং চালু করা। বাজেটে শিক্ষার্থীদের খাদ্যে ভর্তুকি। শহীদ ডা. মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার সংস্কার ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা করা। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ই-হেলথ প্রোফাইল করা।

হলে ২৪ ঘণ্টা মেডিকেল সাপোর্ট রাখা। মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় কাউন্সেলিং সেন্টার ও হেল্পলাইনের ব্যবস্থা রাখা।

৭. শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করতে রূপরেখা তৈরি করা।

৮. বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের আপ ও ডাউন ট্রিপ সংখ্যা বৃদ্ধি করা। রাত ৮টা পর্যন্ত ডাউন ট্রিপ বাড়ানো।

৯. বিজনেস ফ্যাকাল্টির ই-লাইব্রেরি পুনরায় চালু করা। ভর্তি থেকে সার্টিফিকেট পর্যন্ত সব লেনদেন স্মার্ট কার্ডে সম্পন্ন করা। ক্যাম্পাসের হটস্পটে ফ্রি ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা করা ।

১০. সম্ভাবনাময় ক্রীড়াবিদদের বৃত্তি ও ইনজুরি সহায়তা দেয়া। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নির্বাচক প্যানেল দিয়ে দল গঠন।

১১. পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা।

গত রোববার (৩১ আগস্ট) ডাকসু নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাম সংগঠন সমর্থিত প্যানেল প্রতিরোধ পর্ষদ। ‘সমতায়-প্রতিরোধে, নিরাপদ ক্যাম্পাস’ স্লোগানকে সামনে রেখে  ইশতেহারে মোট ১৮টি দফা তুলে ধরেছে প্রতিরোধ পর্ষদ। সেগুলোর সারসংক্ষেপ নিচে তুলে ধরা হলো-

১. ডাকসুর কাঠামো ও ক্ষমতা যুগোপযোগী করা।কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের নির্বাচন একাডেমিক ক্যালেন্ডারে নির্দিষ্ট তারিখে আয়োজন। সিনেটে নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি সংখ্যা বাড়ানো এবং তাদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা। প্রতিনিধি অপসারণ বা সংসদ ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের গণভোটের মাধ্যমে নির্ধারণ। অনুষদভিত্তিক ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন চালু করা।

২. শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ও বেসরকারিকরণ বন্ধ করা। শিক্ষা খাতকে বিশ্বব্যাংক–আইএমএফ প্রভাবমুক্ত রাখা। অযৌক্তিক ফি বৃদ্ধি রোধ, পরীক্ষার ফল দ্রুত প্রকাশ। শিক্ষকদের কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের মতামতের প্রতিফলন রাখা। অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত বৃত্তির ব্যবস্থা করা।

৩. বাজেটের ন্যূনতম ১০ শতাংশ গবেষণায় বরাদ্দ রাখা।গবেষণাগার আধুনিকীকরণ। শিক্ষার্থীদের গবেষণা সহকারী ও ফেলোশিপ প্রদানের ব্যবস্থা করা। থিসিসে সিজিপিএ’র বাধা দূর করা।

৪. সন্ত্রাস ও দখলদারিত্বমুক্ত হল গড়া। নতুন হল নির্মাণ ও পুরোনো ভবনের সংস্কার। প্রথম বর্ষ থেকেই সবার জন্য সিট নিশ্চিত করা। র‍্যাগিং, জোরপূর্বক কর্মসূচি বন্ধ, নিরাপত্তা বাড়ানো।

৫. নারীবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরি; সাইবার নিরাপত্তা ও চলাফেরার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। যৌন হয়রানিবিরোধী সেল কার্যকর করা। স্বাস্থ্য ও মাতৃত্বকালীন সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন। নারী হলে অযৌক্তিক নিয়মকানুন বাতিল, রাতের প্রবেশাধিকার উন্মুক্ত করা।

৬. সব জাতিসত্তার ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ। পাহাড় ও সমতলের সব জাতিগোষ্ঠীর মর্যাদা নিশ্চিত করা

৭. প্রশাসনের অধীনে ক্যান্টিন চালু করা। ভর্তুকি দিয়ে দাম কমানো, মান উন্নত করা। বৈচিত্র্যময় মেন্যু ও রাত অবধি খাবারের ব্যবস্থা করা।

৮. মেডিকেল সেন্টারকে আধুনিকায়ন ও আসনসংখ্যা বৃদ্ধি।২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক, নার্স ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করা। প্রতিটি হলে ফার্মেসি চালু করা।

৯. বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্য সাপোর্ট সেন্টার গড়ে তোলা।আত্মহত্যা, আসক্তি প্রতিরোধে সচেতনতা কার্যক্রম আয়োজন। স্বাস্থ্য ও মানসিক প্রশান্তি বিষয়ক কর্মশালা আয়োজন।

১০. কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি সার্বক্ষণিক খোলা রাখা।

নতুন বই, জার্নাল, ই-রিসোর্সে শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার। মেয়েদের হলের রিডিং রুম ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখ। প্রতিটি অনুষদে নিরাপদ কমনরুম।

১১. বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা সংস্থা সক্রিয় করা। মাতৃভাষায় উচ্চশিক্ষার জন্য অনুবাদ কেন্দ্র গঠন।

শিক্ষার্থীদের গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের সুযোগ।

১২. বিশ্ববিদ্যালয়ের দখলকৃত জমি পুনরুদ্ধার।

অবকাঠামো নির্মাণে পরিবেশ সংরক্ষণ। মাস্টারপ্ল্যান শিক্ষার্থীদের মত নিয়ে হালনাগাদ করা।

১৩. নৃত্য, সংগীত, নাটক ও চারুকলার চর্চার জন্য আলাদা রুম। হল ও অনুষদে নিয়মিত সাহিত্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন। লোক উৎসব ও জাতিসত্তাভিত্তিক সাংস্কৃতিক কর্মসূচি চালু করা।

১৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস ক্রয় ও রুট সম্প্রসারণ। রাত পর্যন্ত বাস সার্ভিস, সপ্তাহান্তে পরীক্ষার্থীদের জন্য চালু রাখা। অভ্যন্তরীণ যাতায়াতে শাটল সার্ভিস চালু।

১৫. বার্ষিক স্পোর্টস ক্যালেন্ডার তৈরি। মাঠ সংস্কার ও নতুন মাঠ সংযোজন। ইনডোর গেমসের সুবিধা বাড়ানো ও আধুনিক জিমনেশিয়াম তৈরি। নারীবান্ধব খেলাধুলার পরিবেশ নিশ্চিত করা।

১৬. ধূলা-দূষণ রোধে নির্মাণকাজ নিয়ন্ত্রণ। ক্যাম্পাসে ডাস্টবিন বাড়ানো, সবুজায়ন এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ। হর্ন ও যানজট নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেয়া।

১৭. বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা। প্রতিটি শিক্ষার্থীর মতপ্রকাশ ও সংগঠনের অধিকার রক্ষা। ক্যাম্পাসে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি।

১৮. মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাস সংরক্ষণে আর্কাইভ ও গবেষণা বৃত্তির প্রচলন করা। বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিরোধী অবস্থান এবং স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে সংহতি প্রকাশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিত ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে সবার শেষে ইশতেহার ঘোষণা করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ সমর্থিত প্যানেল ডাকসু ফর চেঞ্জ। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ১৪ দফা সংবলিত একটি ইশতেহার দেয় প্যানেলটি। এই প্যানেলের ইশতেহারের সারসংক্ষেপ

১. ডাকসুকে নিয়মিত ক্যালেন্ডার ইভেন্টে রূপান্তর।

২. ওয়ান স্টুডেন্ট, ওয়ান বেড, ওয়ান টেবিল নীতি বাস্তবায়ন, আবাসন ও আবাসিক বৃত্তি প্রদান। ৩.খাবারের মানোন্নয়ন ও ভর্তুকি বাড়ানো।

৪. শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি স্কলারশিপ, পার্ট-টাইম জব, ইন্টার্নশিপ ও আউটসোর্সিং জবের ব্যবস্থা করা।

৫. গবেষণা কেন্দ্রকে বিশ্বমানের পর্যায়ে উন্নীত করা।

৬. আধুনিক লাইব্রেরি ও ফ্রি ওয়াই-ফাইয়ের ব্যবস্থা করা।

৭. রেজিস্টার ভবন সংস্কার, ভর্তি-সার্টিফিকেটসহ সব প্রক্রিয়ায় অটোমেশন ও ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালু করা।

৮. একাডেমিয়া-ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্ক জোরদার ও মানবসম্পদ উন্নয়ন।

৯. বহিরাগত ও যান নিয়ন্ত্রণ, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সহজ যাতায়াত নিশ্চিত করা।

১০. পরিবহন সংকট সমাধান, বাস ট্র্যাকার, ইলেকট্রিক শাটল ও বিশেষায়িত রিকশা ব্যবস্থা করা।

১১. আধুনিক মেডিকেল সেবা ও হলে ফার্মেসি দেয়া।

১২. ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা ও পুকুর সংস্কার।

১৩. টিএসসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি।

১৪. গণতান্ত্রিক পরিবেশ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ-জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা সমুন্নত রাখা।