বিপজ্জনক রূপ ধারণ করেছে পূর্ব আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট হারিকেন ‘বেরিল’; প্রবল বেগে ধেয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব ক্যারিবিয়ান উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জের দিকে। দুর্যোগপূর্ণ আবাহাওয়ায় সতর্কতাস্বরূপ ইতোমধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের সব বিমান চলাচল। এতে বার্বাডোজে আটকা পড়েছে সদ্য টি-টিয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দল। শক্তিশালী হারিকেনটি অতিক্রম করার পর আবাওহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে দেশে ফেরা হচ্ছে না রোহিত-কোহলিদের। খবর বিবিসির।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের বিশ্বকাপজয়ী দলটিতে ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ, পরিবারের সদস্য এবং কর্তা মিলিয়ে প্রায় ৭০ জন রয়েছেন। সবাই একসঙ্গে ফিরবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাতে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আটলান্টিক মহাসাগর পেরিয়ে বার্বাডোস, ডোমিনিকা, গ্রানাডা এবং মার্টিনিকের ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দিকে অগ্রসর হচ্ছে হারিকেন বেরিল। এগিয়ে চলার সঙ্গে প্রবল শক্তি সঞ্চয় করছে এই ঝড়। সোমবার (১ জুলাই) স্থানীয় সময় ভোরে উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে প্রাণঘাতী বাতাস এবং ঝড় আঘাত হানবে।
ইউএস ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) বলেছে, হারিকেন ‘বেরিল’ বর্তমানে বারবাডোসে থেকে প্রায় ৮৫০ কিলোমিটার পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থান করছে। সোমবার সকালের দিকে উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানতে পারে এটি। সেই সময় ভয়াবহ বিপজ্জনক ঝড়ে পরিণত হতে পারে ‘বেরিল’।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভয়াবহ ঝড় আঘাত হানার আশঙ্কায় বার্বাডোজের রাজধানী ব্রিজটাউনের গ্যাস স্টেশনগুলোয় সারিবদ্ধভাবে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া সুপার মার্কেট এবং মুদিদোকানে খাবার, পানি ও অন্যান্য সামগ্রী কেনার জন্য মানুষের ভিড় লক্ষ করা গেছে।
প্রসঙ্গত, হারিকেন একটি আঞ্চলিক ঘূর্ণিঝড়। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর, মধ্য ও পূর্ব-উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর, ক্যারিবীয় সাগর এবং মেক্সিকো উপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়কে হারিকেন বলা হয়। সাধারণ যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, কিউবা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে হারিকেন আঘাত হানে।
এবারের মৌসুমে ক্যারিবীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে যাওয়া প্রথম হারিকেন হলো ‘বেরিল’। ইতিমধ্যে এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক ক্যাটাগরি থ্রি-তে উন্নীত হয়েছে। এর মানে হলো ঘূর্ণিঝড়টি ক্যারিবীয় উপকূলে ১৭৯ থেকে ২০৯ কিলোমিটার বেগে আচড়ে পড়তে পারে। ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ বার্বাডোস, ডোমিনিকা, গ্রেনাডা ও মার্টিনিক উপকূলের কাছাকাছি অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি আরও শক্তিশালী হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
সেখানকার আবহাওয়াবিদরা বলছেন, পূর্ব আটলান্টিক মহাসাগর লাগোয়া উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে সবার আগে আঘাত হানতে পারে এ ঘূর্ণিঝড়। ডমিনিকা, মার্টিনিক, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রানাডাইনস ও গ্রেনাডা নিয়ে গঠিত উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জ। ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানার সময় এসব দ্বীপদেশের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় ভয়াবহ উচ্চতার ঢেউয়ের পাশাপাশি ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।