দ্বিতীয় টেস্টে সাকিবকে খেলানোর বিষয়ে ইতিবাচক ভাবনা বিসিবির। ছবি: ফেসবুক
রাওয়ালপিণ্ডি টেস্ট চলাকালীন সময়ে ঢাকায় সাকিব আল হাসানের নাম জড়িয়েছে হত্যা মামলায়। খুনের মামলা মাথায় নিয়েই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১০ উইকেটের জয়ে অবদান রেখেছেন টাইগার অলরাউন্ডার। কিন্তু সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে তাকে দলে রাখা হবে কিনা -তা এখনও ধোঁয়াশায়। তবে খারাপ সময়ে সাকিবের পাশে দাঁড়িয়েছে তার সতীর্থরা। কেউ কেউ তো মনে করেন, এই মামলা রাজনৈতিক কারণেই হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকায় এক গার্মেন্টস কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫৬ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলার আসামীর তালিকায় আছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নাম।
গত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। দেশে ছাত্র আন্দোলন থেকে যখন গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়ে সরকারের পতন ঘটে, সে সময় তিনি কানাডায় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে খেলছিলেন। তারও আগে অংশ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ ক্রিকেটে (এমএলএস)। অর্থ্যাৎ আন্দোলনের পুরো সময়টাই সাকিব বিদেশে ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত ছিল। তার সতীর্থরা অনেকেই ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে সম্মতি জানিয়ে দমন পীড়ন বন্ধ করতে অনুরোধ জানাচ্ছিলেন, দেশের ক্রিকেটের পোস্টারবয় সাকিব টু শব্দটাও করেননি।
হত্যা মামলা হওয়ার পর সাকিব অবশ্য সতীর্থদের সমর্থন পাচ্ছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের পর সর্বপ্রথম প্রতিবাদ জানান মুমিনুল হক। তিনি এই হত্যা মামলাকে 'মিথ্যা মামলা' হিসেবে অবিহিত করেন। এরপর একে একে মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, রুবেল হোসেনরা সাকিবকে সমর্থন জানিয়েছেন।
সবশেষ গতকাল সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবও সাকিবকে তাদের সমর্থন জানিয়েছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাকিব আল হাসানের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকতে পারে। তবে তারা মনে করে, বাংলাদেশের ক্রিকেটে সাকিবের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
রাওয়ালপিণ্ডি টেস্ট জয়েও সাকিবের অবদান মনে করিয়ে দিয়ে কোয়াব দাবি জানিয়েছে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে যেন সাকিবের বিরুদ্ধে মামলা না করা হয়। তারা আশা প্রকাশ করেন যে, সাকিবের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাটা অন্তরবর্তীকালীন সরকার সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও সহাউভূতি দিয়ে দেখবে।
কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়, রাওয়ালপিণ্ডিতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে সাকিবকে খেলানো নিয়ে কী ভাবছে বিসিবি?
বিসিবি জানিয়েছে, সাকিবকে দেশে ফিরিয়ে আনার উকিল নোটিশটি তারা এখনও হাতে পায়নি। উকিল নোটিশ হাতে পাওয়ার পর বিসিবি এ ব্যাপারে আইনি পরামর্শ নেবে। পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্টের কাছেও গতকাল রাত পর্যন্ত সাকিবের ব্যাপারে কোনো বার্তা পাঠানো হয়নি। সাকিব এখন পর্যন্ত দলেই আছেন এবং ৩০ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া টেস্টে তাকে খেলানোর কথাই ভাবছে বিসিবি।
বিসিবির শীর্ষ পর্যায় থেকে সাকিবকে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার বার্তা দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। সাকিবও নাকি আশ্বাস দিয়েছেন, মামলার বিষয়টি তার খেলায় প্রভাব ফেলবে না। দলের সঙ্গে আজ অনুশীলন করার কথা তার। সময় সংবাদ