ইংল্যান্ডের সঙ্গে আফগানিস্তানের ৮ রানের জয়টাকে নিছক দুর্ঘটনা বলার কোনো সুযোগ নেই। একটা দলকে যখন ক্রিকেট পণ্ডিতরা কোনো টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে দেখেন, তখন তাদের সাফল্যকে দুর্ঘটনা কীভাবে বলা যায়! চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আফগানিস্তানকে নিয়েও তা করা যাচ্ছে না।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আফগানিস্তানের গ্রুপে আছে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের মতো ভারী ভারী দল। তা সত্ত্বেও প্রতিযোগিতাটির সবশেষ শিরোপা জেতা অধিনায়ক সরফরাজ খান হাশমতউল্লাহ শহিদি বাহিনীকে সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে ধরেছিলেন। সেই সামর্থ্য যে রশিদ খানদের আছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টিই তার উদাহরণ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরে টুর্নামেন্ট শুরু না করলে আজ ৪ পয়েন্ট নিয়ে একটি সেমির স্পটের বড় দাবিদার হতে পারত তারা। তবুও সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি, আগামীকাল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিতলেই মিলবে শেষ চারের টিকিট।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর আগে আফগানিস্তানকে নিয়ে বাজি ধরেছিলেন অজি কিংবদিন্ত রিকি পন্টিংও। রশিদ খানরা অন্তত বাংলাদেশের চেয়ে ভালো করবে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। পন্টিং বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয় আফগানিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে ভালো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কাটাতে যাচ্ছে।’
আফগানিস্তানের এই পরিবর্তন আকস্মিক হয়নি। গত কয়েক বছর ধরেই দারুণ ক্রিকেট খেলছে তারা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের জয়টি যে দুর্ঘটনা নয়, তার প্রমাণ সাদা বলে গত দুটি বিশ্বকাপ। যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে আফগানিস্তান অস্ট্রেলিয়াকে ২১ রানে হারিয়েছিল, খেলেছিল সেমিফাইনালেও। ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা বধের পর অজিবধও তো হচ্ছিল, যদি না গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ২০১ রানের অতিমানবীয় ইনিংসটি না খেলতেন। এই দলটি নিয়ে তাই অনেকে আশাবাদী।
আশাবাদীর এই কাতারে আছেন ইংলিশ কিংবদন্তি নাসের হুসেইনও। সঙ্গে বাংলাদেশকে একটা খোঁচাও দিয়েছেন, অবশ্য খোঁচা না বলে সেটাকে কেউ চরম সত্যও ধরতে পারেন। হুসেইন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখনও ১৫ বছর আগের জায়গায় আছে। তারা এখনও আগের মতোই খেলছে। আফগানিস্তান যে কোনো দলের সঙ্গে লড়াই দেওয়ায় সক্ষম।’
নাসেরের বক্তব্যকে অযৌক্তিক বলার সুযোগ নেই। আইসিসি টুর্নামেন্টগুলোতে আফগানিস্তান যখন সেমির স্বপ্ন দেখছে এবং কখনও খেলছে, তখন বাংলাদেশের ভাগ্যে অনবরত হারই জুটছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে টাইগারদের অর্জন মাত্র এক পয়েন্ট, তাও সেটা বৃষ্টির কল্যাণে। বাকি দুই ম্যাচেই হেরেছে নাজমুল হোসেন শান্ত বাহিনী। অথচ তারা গিয়েছিল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বাসনা নিয়ে।