ডিপিএলে শাইনপুকুরের বিপক্ষে নামার আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মোহামেডানের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ইতোমধ্যে হার্টে রিং পরানো হয়েছে এই ক্রিকেটারের। শঙ্কা কাটিয়ে এখন কথা বলছেন তামিম। জীবন যুদ্ধে জয়ী হয়ে এসে এবার প্রার্থনারত মানুষদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে মানুষের ভালোবাসা, পরস্পর পাশে দাঁড়ানোর এই নজির ধরে রাখার আহবান জানিয়েছেন তামিম।
পাঠদের সুবিধার জন্য পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলো
দুই বছর আগে এই রোজার সময়েই অনুপের কাছে গিয়েছিলাম। সেদিন জানতে পারলাম, অনুপের বাবা ৪ বছরেও হার্টের অপারেশন করতে পারেন নি। হৃদয়ের স্পন্দনই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। কিন্তু এই স্পন্দন যে কোন ঘোষণা না দিয়েই থেমে যেতে পারে — এই কথাটি আমরা বার বার ভুলে যাই। গতকাল দিনটি শুরু করার সময় কি আমি জানতাম, আমার সাথে কী হতে যাচ্ছে?
আল্লাহতা’আলার অশেষ রহমত আর সকলের দোয়ায় আমি ফিরে এসেছি। আমার সৌভাগ্য, এই বিপদের সময়ে আমি পাশে কিছু অসাধারণ মানুষকে পেয়েছিলাম, যাদের বিচক্ষণতা ও আপ্রাণ প্রচেষ্টায় আমি এই সংকট কাটিয়ে ফিরে এসেছি।
কিছু ঘটনা আমাদের বাস্তবতা মনে করিয়ে দেয়, জানিয়ে দেয় যে জীবন আসলে কতটা ছোট। আর এই ছোট জীবনে আর কিছু করতে না পারি, সবাই যেন একে অপরের বিপদে পাশে দাঁড়ায়— এটিই আমার অনুরোধ।
আপনাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা। সবাই আমার জন্য এবং আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন। আপনাদের ভালোবাসা ছাড়া আমি তামিম ইকবাল কিছুই না।
প্রসঙ্গত, গতকাল (সোমবার) সকালে টসের পর হালকা বুকে ব্যথা অনুভব করলে তামিম বিষয়টি দ্রুত দলের ফিজিও ও ট্রেইনারকে জানান। প্রাথমিকভাবে গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা মনে হওয়ায় গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ গ্রহণ করেন তিনি। তবে কিছুক্ষণ পরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সতর্কতার অংশ হিসেবে নিকটতম হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং চিকিৎসা শেষে আবারও বিকেএসপিতে ফিরে আসেন এই ক্রিকেটার।
এরপর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়। দলের (মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব) ম্যানেজার শিপন ভাইয়ের সঙ্গে আলোচনা করে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা সম্ভব হয়। তবে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়লে তাকে ফের নিকটতম কেপিজে হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে নেওয়া হয়। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ে।
২২ মিনিট ধরে সিপিআর এবং ৩ বার ডিসি শক দেয়ার পর তামিমকে রিং পরানোর সুযোগ পাওয়া যায়। তবে অনেক প্রচেষ্টায় সেই অপারেশন সফল হয়েছে।আরটিভি