মেয়েদের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে স্পিনার নাহিদা আক্তারের ৪ উইকেট শিকারের পর ৩৪ রানে স্কটল্যান্ড নারী দলকে হারিয়ে হ্যাটট্রিক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। এটি বাংলাদেশের টানা তৃতীয় জয়। বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার আরও কাছে পৌঁছে গেল বাংলাদেশ দল।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) লাহোরের ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক জ্যোতির ৮৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস এবং ফারজানা হক পিংকী ও শারমিন আক্তার সুপ্তার ফিফটির সুবাদে নির্ধারিত ওভারে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের রেকর্ড সর্বোচ্চ ২৭৬ রান তোলে।
এর মধ্যে ১৪ রান করা ওপেনার ইশমা তানজিম ৮.৩ ওভারে যখন আউট হন, বাংলাদেশের স্কোর ১ উইকেটে ৩৫। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ইনিংসের ভিত গড়েন শারমিন ও ফারজানা। ১২৭ বলে ১০৩ রানের জুটি গড়েন দুজন, যেখানে ফারজানার অবদান ৪৮ বলে ৪০ ও শারমিনের ৭৯ বলে ৫৭। পরে ৩০তম ওভারে শারমিন আউট হওয়ার পর আট ওভারের মধ্যে ফারজানা ও সোবহানা মোস্তারিকেও (৯) ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয়।
৩৭.৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ১৭৬। এখান থেকে পঞ্চম উইকেটে রিতু মনির সঙ্গে ৩৭ এবং ষষ্ঠ উইকেটে ফাহিমার সঙ্গে ৪৪ বলে ৬১ রানের জুটি গড়েন নিগার। ২২ বলে ২৬ রান করেন ফাহিমা। ৫৩ রানে ২ উইকেট নিয়ে স্কটল্যান্ডের সেরা বোলার অধিনায়ক ক্যাথরিন ব্রাইস।
জবাবে রান তাড়ায় নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে স্কটিশ মেয়েরা তোলে ২৪২ রান। অষ্টম উইকেটে তাদের রেকর্ড জুটি না হলে আরও বড় হারই দেখতে হতো। ১১০ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসে নিগার সুলতানা জ্যোতিদের প্রতিপক্ষরা। সেই বিপর্যয় সামলে স্কটল্যান্ড মেয়েদের ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে অষ্টম উইকেটে রেকর্ড ১১৫ রানের জুটি গড়ে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৭৭ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় ১২ রানেই ওপেনার আবি এইটকেনকে হারায় স্কটল্যান্ড। এরপর ২৩ ও ৩১ রানের মাথায় পড়ে আরও দুই উইকেট। মাঝে ৪৭ রানের একটি জুটি গড়েন স্কটিশ অধিনায়ক সারাহ ব্রাইস ও অ্যাইলসা লিস্টার। ব্রাইস ৪২ এবং লিস্টার ১৮ রান করে আউট হন। ওই সময়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১১০ রানেই ৭ জন নেই স্কটল্যান্ডের।
তবে ঠিকই হয়তো প্রিয়ানাজ চ্যাটার্জি ও র্যাচের স্ল্যাটারের জুটির ব্যাটেই সমান ৬১ রান করে এসেছে। প্রিয়ানাজের বিদায়ে ভাঙে মেয়েদের ওয়ানডেতে অষ্টম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের এই জুটি। শেষদিকে অলআউট হওয়াই কেবল আটকাতে পারে স্কটল্যান্ড।
বাংলাদেশের পক্ষে ৪০ রানে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট দখলে নিয়েছেন নাহিদা আক্তার। এ ছাড়া জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনা ২ এবং মারুফা আক্তার ও রাবেয়া খান একটি করে শিকার ধরেন।
প্রসঙ্গত, টানা তিন জয়ে বাছাইয়ের স্বাগতিক পাকিস্তানকে টপকে পয়েন্ট তালিকার চূড়ায় উঠল বাংলাদেশ। তবে পাকিস্তানি মেয়েরাও এখন পর্যন্ত নিজেদের তিন ম্যাচেই জিতেছে। এই মুহূর্তে দুই দলের পয়েন্ট সমান ৬ করে হলেও নেট রানরেটে এগিয়ে থাকায় বাংলাদেশ শীর্ষে ও পাকিস্তান দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন।
আগামী বৃহস্পতিবার নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ জিতলেই মিলবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মেয়েদের বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসরের টিকিট।
তবে, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে না পারলেও অবশ্য ক্ষতি নেই। শনিবার নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলেও বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেবে বাংলাদেশ। এমনকি শেষ দুই ম্যাচে হারলেও নেট রানরেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে বিশ্বকাপের টিকিট পেয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল।আরটিভি