News update
  • LATEST: Attacks on foreign students, including Bangladeshis, in Kyrgyzstan     |     
  • “BB lost ability to make independent decisions for banking sector”     |     
  • Flash floods kill at least 68 people in Afghanistan     |     
  • Spanish tourists among four killed in Afg shooting     |     
  • BD, South Asian students under attack by violent mobs in Kyrgyzstan     |     

কোরবানির চাহিদার চেয়ে দেশে সাড়ে ২৩ লাখ পশু বেশি রয়েছে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2022-07-06, 10:38am

image-49165-1657079878-e988343ec6c575599717a79610adf1491657082333.jpg




দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে উঠা ছোট-বড় খামারিদের উৎপাদিত গবাদিপশুর সংখ্যা বর্তমানে ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯টি। আসন্ন ঈদুল-আযহায় দেশে ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে। কোরবানির জন্য চাহিদার চেয়ে প্রায় সাড়ে ২৩ লাখ পশু বেশি আছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম সম্প্রতি এই তথ্য জানিয়ে আরো বলেছেন- অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রির ক্ষেত্রে হাসিল আদায় করা যাবে না। এমনকি বাজারের বাইরে বাড়িতে বা রাস্তায় কেউ পশু বিক্রি করলে তাদের কাছ থেকেও হাসিল বা চাঁদা আদায় করা যাবে না।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট-বড় খামারিদের সঙ্গে কথা বলে বাসস সংবাদদতারা জানান-

মেহেরপুরে কোরবানীর চাহিদা চেয়ে উদ্বৃত্ত রয়েছে ৯৮ হাজার পশু। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাইদুর রহমান জানান, কোরবানির জন্য এবার জেলার ৪০০টি বাণিজ্যিকসহ পারিবারিকভাবে ২৮ হাজার খামারে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৮৬টি পশু কোরবানীযোগ্য হয়েছে। গরু ৫৮ হাজার ৩৬৩টি , মহিষ ৫৮২টি, ছাগল ১ লাখ ২৬ হাজার ৬৯ টি, ভেড়া ২ হাজার ৭৭২ টি। জেলায় পালিত কোরবানীর পশু জেলার চাহিদা মিটিয়েও দেশের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জেলায় কোরবানীর চাহিদা ৮৯ হাজার ৮২০টি। উদ্বৃত্ত পালন হয়েছে ৯৭ হাজার ৯৬৬টি। জেলায় ৪০০টি বাণিজ্যিকসহ ২৮ হাজার পারিবারিক খামার মালিক রয়েছে। পারিবারিক ও বাণিজ্যিক খামারে প্রায় ১ লাখ প্রায় ৮৮ হাজার পশু পালিত হয়েছে কোরবানীর জন্য। জেলার বেশ কয়েকটি খামার ঘুরে দেখা গেছে, নেপালী, অস্ট্রেলিয়ান, ফিজিয়ান, হরিয়ানাসহ নানা জাতের গরু মোটাতাজা করা হয়েছে।

বগুড়ায় রয়েছে ৬৮ হাজার কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত। গত কয়েক বছর ধরে পার্শবর্তী দেশগুলো থেকে চোরাপথে পশু না আসায় দেশে গো-খামারিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৭৫টি। এবার প্রায় ৬৮ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে বলে জানান, জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, এবার জেলায় কোরবানির পশুর কোন সংকট হবে না। এবার বগুড়ায় কৃষকের ঘরে ও গো খামারের কোরবানি যোগ্য গবাদি পশুর প্রস্তুত রয়েছে ৪ লাখ ২৭ হাজার ২৯৫ টি। মাঝারী ও ছোট গরুর চাহিদা বেশি। তাই তারা ছোট ও মাঝারী গরু লালন পালন করেছে বেশি।


জয়পুরহাটে কোরবানীর চাহিদার চেয়ে প্রায় ৫০ হাজার উদ্বৃত্ত পশু রয়েছে। জেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর সূত্র বাসসকে জানায়, জেলায় ছোট বড় মিলে জেলায় ১২ হাজার ৬৮৪ টি পশুর খামার রয়েছে। ঈদুল আযহা উপলক্ষে জেলায় ১ লাখ ৩০ হাজার ২৫০টি পশু কোরবানি হবে এমন টার্গেট নির্ধারণ করা হলেও খামারে বর্তমানে পশু মজুদ রয়েছে- ১ লাখ ৭৮ হাজার ৬৬০টি। এরমধ্যে রয়েছে ষাঁড় রয়েছে ৩০ হাজার ৪৭৫ টি, বলদ রয়েছে ১৫ হাজার ১৪টি, গাভী রয়েছে ২৫ হাজার ৬৬৩টি, মহিষ ২০৪ টি, ছাগল ৮২ হাজার ৩৪ টি ও ভেড়া রয়েছে ২৫ হাজার ২৭০টি। যা দিয়ে জেলার কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৫০ হাজার পশু দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

কুমিল্লা জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়- জেলায় চাহিদার চেয়ে ১০ হাজারের অধিক বেশী পশু মজুদ রয়েছে। ঈদে জেলার পশুর চাহিদা ২ লাখ ৪৮ হাজারের মধ্যে বর্তমানে জেলায় পশুর মজুদ রয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৩২টি। এদিকে জেলায় কোরবানীর হাটবাজারে মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে গৃহপালিত গয়াল। বিলুপ্তপ্রায় বন-গরু প্রজাতির এ পশুটি কুমিল্লায় বাইসন নামেও পরিচিত। আদর্শ সদর উপজেলার মাঝিগাছা এলাকার ফাতেমা এগ্রোতে কোরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে গয়াল পালন করা হচ্ছে। একেকটি গয়ালের ওজন প্রায় ১১ মণ। হাটে নেয়ার পর দাম তোলা হবে ৫ লাখ টাকা করে। অপরদিকে নগরীর লক্ষীনগর এলাকার রাফি এগ্রোতে কয়েকটি গয়াল রয়েছে। একেকটি গয়ালের ওজন হবে অন্তত ১২০০ কেজি। দাম হাঁকাচ্ছে প্রতিটি ৮ লাখ টাকা। কুমিল্লা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে গয়াল পালন করছেন খামারিরা। মূলত মাংসের জন্যই গয়াল পালন করা হয়। গহীন বনের ছোট ছোট ঝোপে এরা দলবেঁধে থাকে। তবে এটি এখন গৃহপালিত পশু হিসেবে স্বীকৃত। গয়ালের মাংসে কোলেস্টেরল কম হওয়ায় মানবদেহের জন্য কম ঝুঁকিপূর্ণ।

নোয়াখালীতে কোরবানির চাহিদার চেয়ে প্রায় ১০ হাজার পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে। জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা জানান, জেলায় সাড়ে ৬ হাজার খামারি রয়েছে। এতে কোরবানির ঈদের জন্য ৯৯ হাজার গরু-মহিষ ও ছাগল রয়েছে। চাহিদার তুলনায় ১০ হাজার বেশী।

ফেনীতে কোরবানির চাহিদার চেয়ে প্রায় ৭ হাজার পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে লালন পালন করা পশু দিয়ে জেলায় কোরবানির শতভাগ চাহিদা মেটানো যাবে। জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আনিসুর রহমান জানান, এ বছর জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৭৫ হাজার। আর এজন্য লালন-পালন করা হচ্ছে ৮১ হাজার ৯৮০টি পশু। চাহিদার চেয়ে প্রায় ৬ হাজার ৯৩৮টি পশু অতিরিক্ত রয়েছে। প্রাণি সম্পদ

 কর্মকর্তা বলেন, এছাড়া অনেকে ব্যক্তিগতভাবে এক বা একাধিক পশু লালন-পালন করছে।

রাঙ্গামাটিতে কোরবানির চাহিদার চেয়ে প্রায় ৫ হাজার পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বরুন কুমার দত্ত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) বলেন, জেলা সদরসহ ১০ উপজেলায় এবার ষাঁড়,বলদ,গাভী,মহিষ,ছাগল, ভেড়াসহ অন্যান্য গবাদিপশুর চাহিদা ৩৪ হাজার ২২৮টি। জেলার স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও আরো প্রায় ৫ হাজারের মতো উদ্বৃত্ত থাকে বলে জানান এই কর্মকর্তা। তবে উদ্বৃত্তের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।

টুঙ্গিপাড়ায় চাহিদার উদ্বৃত্ত কোরবানীর পশু উৎপাদিত হয়েছে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. প্রকাশ বিশ্বাস জানান, ঈদের চাহিদার তুলনায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এবার উদ্বৃত্ত পশু উৎপাদিত হয়েছে। কোরবানীযোগ্য গবাদি পশুর প্রাপ্যতা ও চাহিদার বিবরণ থেকে জানাগেছে, টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৫০০ ছোট বড় খামারে ২ হাজার ৬৯০টি ষাঁড়, ১০টি বলদ, ৫টি মহিষ, ৭০৩ টি ছাগল, ৮৬টি বন্ধা গাভী ও ১৮টি ভোড় প্রস্তুত করা হয়েছে। সে হিসেবে টুঙ্গিপাড়ায় মোট ৩ হাজার ৫১২ টি পশু মোটাতাজা করা হয়েছে। উপজেলায় মোট কোরবানীর পশুর চাহিদা ২ হাজার ৭৭৫টি। এখানে উদ্বৃত্ত পশুর সংখ্যা ৭৩৭ টি।

নাটোরে গরু মহিষের সৌখিন খামারী রেকাত আলী। গরু আর মহিষের সৌখিন খামার গড়ে সফল হয়েছেন রেকাত আলী। প্রতিদিন অসংখ্য দর্শণার্থী খামারে থাকা দুই শতাধিক গরু-মহিষ দেখতে ভিড় করছেন। নাটোর সদর উপজেলার ডালসড়ক এলাকাতে ড্রিমল্যান্ড ফ্যাটেনিং এন্ড ডেইরি নামে বৈচিত্র্যময় এই খামারের অবস্থান। খামারে বিভিন্ন জাতের বিদেশী গরু রয়েছে- আমেরিকার বাহামা ও জিবিআর, অস্ট্রেলিয়ার ফ্রিজিয়ান ও হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান, নেপালী গীর,পাকিস্তানের শাহীওয়াল, ভারতের রাজস্থান, গুজরাট, উলুবাড়িয়া জাতের। লাল, সাদা, কালো রঙের এসব এক একটি গরু লম্বায় ৯ ফুট আর উচ্চতায় ৬ ফুটের বেশী। ওজনে কোন কোনটি ১ টন ছাড়িয়ে গেছে। এক্ষেত্রে আমেরিকার বাহামা অগ্রগামী। রাজস্থানের রাজকীয় সিং অসাধারণ। একটির গায়ের রঙ তো খানিকটা হরিণের মত। অতিকায় এসব গরুর পাশাপাশি আছে পাহাড়ের গোয়াল আর ক্ষুদ্রকায় সুস্বাদু মাংসে অনন্য ভুটানের ভুট্টি। এই খামারে শুধু গরু নয়, আছে বিহারী ও আফ্রিকান জাতের বিশাল মহিষ। আছে জাফরাবাদী, নিলিরাভী, মুররা জাতের মহিষ। আকৃতিতে কেউ কারো চেয়ে কম নয়। আকর্ষণীয় এসব মহিষ ওজনে ১৫ মণ ছাড়িয়েছে। ব্যতিক্রমী সাদা রঙের এলবিনো মহিষ নিমিষেই নজর কাড়ে। নিরিহ এই মহিষগুলো দর্শণার্থী দেখলেই অপার বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে।

বরিশালে একাধিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও খামারী অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু করেছেন। একই সাথে ইতিমধ্যে ব্যাপক সাড়াও পেয়েছেন বলে জানান- খামারী ও প্রতিষ্ঠানগুলো। সফল খামারী ছাড়াও অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রি করছেন এমন বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানগুলো মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার এমইপি এগ্রো, সদর উপজেলার কড়াপুর প্রমোজেন এগ্রো, দোয়ারিকা রেইট্রিতলা কেমিস্ট এগ্রো। সূত্র আরো জানায়, প্রতিষ্ঠান বা খামারীরা অ্যাপস, ফেসবুক ও বিভিন্ন ওয়েব সাইডের মাধ্যমে পশুর নির্ধারিত মূল্য, ছবি, ওজন (সম্ভব্য মাংস) ও নিজ মোবাইল নম্বর দিয়ে দিচ্ছে। ক্রেতারা তা দেখার পর যোগাযোগ করে পশু ক্রয় করছেন। অনলাইনে পশুর সর্বাধিক তথ্য রয়েছে। আছে পশুর জাত, বয়স ও ওজন সংক্রান্ত সব প্রয়োজনীয় তথ্য, পাশাপাশি থাকছে খাদ্য তালিকা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা সংবলিত বিস্তারিত তথ্য।

টাঙ্গাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর খামারে ৪৫ মণের ষাঁড়। চাকরি নয়, গরুর বড় খামারী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন টাঙ্গাইল সরকারি সা’দত বিশ^বিদ্যালয় কলেজ থেকে ইতিহাসে অর্নাস পাশ করা ছাত্রী হামিদা আক্তার। গরুর বড় খামারী হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে লেখাপড়ার পাশাপাশি গত পাঁচ বছর যাবৎ ধারাবাহিকভাবে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গাভীসহ ষাঁড় গরু লালন পালন করেছেন তিনি। বর্তমানে তার খামারে আছে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের তিনটি গরু। দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করে এরই মধ্যে বড় করে তুলেছেন পাঁচ বছর বয়সী বিশালাকৃতির একটি ষাঁড়। ষাঁড়টি নাম দিয়েছেন মানিক। ঈদুল আযহায় বিক্রির জন্য প্রস্তুত ৪৫ মণ বা ১৮০০ কেজি ওজনের ষাঁড়। যার দাম হাঁকাচ্ছেন ১৫ লাখ টাকা। হামিদা বলেন, আমি পড়ালেখা করছি, চাকরি করার জন্য নয়। আমার স্বপ্ন আমি একজন বড় গরুর খামারী হবো। দেলদুয়ার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বাহাউদ্দিন সারোয়ার রিজভী জানান, এ উপজেলায় হামিদার ষাঁড়টিই সবচেয়ে বড়। আমাদের অনলাইন হাটে তার ষাঁড়টির ছবি, ওজন ও দাম উল্লেখ করে বিক্রির জন্য প্রচারণা চালানো হবে। এছাড়াও আমাদের কাছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বড় ষাঁড় কেনার জন্য গ্রাহক যোগাযোগ করেন। আমরা সেই সকল ক্রেতাকেও হামিদার ষাঁড়টির বিষয়ে অবগত করবো। তথ্য সূত্র বাসস।