News update
  • Bangladesh Faces $1.25 Billion Export Loss from US Tariffs     |     
  • Israel Expands Gaza Assault as UN Warns of ‘Genocide’     |     
  • World Ozone Day Highlights Progress and Future Action     |     
  • DG Health Services gives 12 directives to treat dengue cases     |     
  • Stock market shows recovery as investors back: DSE chairman     |     

শুধু জ্বালানি নয় জীবনের সবক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করতে হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী

খবর 2021-11-03, 12:19pm

Screenshot (723)



শুধু এনার্জি নয় জীবনের সবক্ষেত্রে এফিশিয়েন্সি অর্জন করা প্রয়োজন। বর্তমানে জলবায়ু নিয়ে বিশ্বজনীন যে আলোচনা চলছে সেখানে এনার্জি এফিশিয়েন্সি অত্যন্ত গুরুত্ব পাচ্ছে। স্রেডা, ইডকল এ বিষয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

স্রেডা ও জিআইজেড এর সহায়তা আয়োজিত ‘ইপি টকস অন এনার্জি এফিশিয়েন্সি ফাইন্যান্সিং’অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে যুক্ত হয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জনাব এম এ মান্নান এমপি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রযুক্তিতে উন্নত বিশ্ব অনেক এগিয়ে আছে। তারা আমদের সেটা এমনিতে দিয়ে দিবে না। কিন্তু উন্নত প্রযুক্তি আমরা গ্রহণ করতে পারি। এনার্জি এফিশিয়েন্সি ফাইন্যান্সিং নিয়ে বেশ কিছু সমালোচনা আছে। বলা হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে সুদহার অনেক বেশি। এছাড়া অভিযোগ আছে, ঋণ পাওয়ার জন্য সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেসব যন্ত্রপাতি কিনতে হয় সেগুলোর দাম বাজার মূল্যেও চেয়ে বেশি ধরা হয়। যাতে করে অনেকে এগিয়ে আসতে চান না। সমস্যা হলো এ ধরনের ঋণ পেতে হলে বেশ কিছু শর্ত মানতে হয়। আশা করি এ সমস্ত সমস্যা থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব।

তিনি আরও বলেন, ফসিল ফুয়েল নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। তবে দুষ্টু ফসিল ফুয়েল থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। বিশ্ব জুড়ে আলোচনায় দেখা যাচ্ছে, বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ফসিল ফুয়েল অনেকটাই দায়ী। তবে উন্নয়নের জন্য এতোদিন ফসিল ফুয়েল ব্যবহার করতে হয়েছে। যদিও উন্নয়ন সবক্ষেত্রে সমানভাবে হয়নি। এ ছাড়া জ্বালানি হিসেবে কয়লা থেকে আমাদের সরে আসতেই হবে। না হলে আমরা একা হয়ে যাব। পুরো পৃথিবী যদি কয়লা থেকে সরে আসে তখন আমরা কয়লা ব্যবহার করতে পারব না। এখন গ্রিন জ্বালানি নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে দৃঢ় বক্তব্য রেখেছেন। তাঁর এ অবস্থান এ বিষয়ে অগ্রগতিতে বড় অবদান রাখবে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনফ্রাস্ট্রচার ডেভলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ইউকলের) চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার জনাব নাজমুল হক। প্যানেলিস্ট হিসাবে যুক্ত ছিলেন সাসটেনেবল অ্যান্ড রিনিয়েবল এনার্জি অথরিটির সদস্য (এনার্জি এফিসিয়েন্সি অ্যান্ড কনজারভেশন) জনাব ফারহানা মমতাজ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেনেবল ফাইনান্স ডিপার্টমেন্টের মহা ব্যবস্থাপক জনাব জনাব খন্দকার মুরশেদ মিল্লাত, স্যান্ডার্ড চার্টাড ব্যাংকের লার্জ কর্পোরেট ক্লায়েন্ট কাভারেজ, কর্পোরেট, কর্মাশিয়াল অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল ব্যাংকিংয়ের প্রধান আরিফ আইনুল সুমন এবং জিআইজেড এর আইইইপি ২ প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ইঞ্জিনিয়ার আল মুদাবির বিন আনাম।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ইনফ্রাস্ট্রচার ডেভলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ইউকলের) চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার জনাব নাজমুল হক বলেন, জ্বালানি দক্ষতা অর্জনে বিনিয়োগ করলে তৃ-পক্ষীয় লাভ হবে। প্রথমত যে প্রতিষ্ঠান জ্বালানি দক্ষতা অর্জন করবে সেটি সরাসরি লাভবান হবে। দ্বিতীয়ত স্থানীয়ভাবে দেশ কার্বন দূষণ কমাতে পারবে। আর সর্বোপরি লাভ হবে বিশ্বের। কারণ বিশ্বে কার্বন দূষণ কমাতে এটি ভূমিকা রাখবে।

জাইকা যখন জ্বালানি দক্ষতা বিষয়ে অর্থায়ন করতে যায় তখন ভাবা হয়েছিল এ ঋণ বিতরণে ১০ বছর সময় লাগবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল চাহিদা এতো বেশি যে, মাত্র ৩ বছরে ঋণ প্রদান লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়ে গেছে। বর্তমানে এটি দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। বর্তমানে দেশের বড় শিল্পগুলো জ্বালানি দক্ষতা অর্জনে ঋণ পেলেও এসইমি খাত এ ধরনের ঋণ পাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে ভাবা দরকার। জ্বালানি দক্ষতা অর্জনে অন্তত ১০ বছর লেগে যায়। কিন্তু দেশের ব্যাংকগুলো এতো দীর্ঘ সময়ের জন্য ঋণ দিতে বেশ অসুবিধায় পড়ে যায়। এছাড়া জামানত দিয়ে এ ধরনের ঋণ নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। এক্ষত্রে বিশেষ ব্যবস্থায় ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা থাকা উচিত।

জাইকা আরও তহবিল প্রদানে আগ্রহ দেখিয়েছে। এছাড়া এজন্সি ফ্রান্স ডেপেলপমেন্ট ১০০ মিলিয়ন ইউরো এবং ইউএন ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ ২৫০ মিলিয়ন ডলার তহবিল দিতে সম্মত হয়েছে।

এখন সমস্যা শুধু অর্থায়ন নয়। জ্বালানি দক্ষতা অর্জনে যে দক্ষ জনবল প্রয়োজন তা আমাদের নেই। এনার্জি অডিটর না থাকায় জ্বালানি দক্ষতা অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়ছে। আরেকটি বিষয় হলো, জ্বালানি দক্ষতা অর্জনে কোনো মডেল অনুসরণ করা যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এনার্জি সার্ভিস কোম্পানি মডেল অনুসরণ করা জরুরি।

সাসটেনেবল অ্যান্ড রিনিয়েবল এনার্জি অথরিটির সদস্য (এনার্জি এফিসিয়েন্সি অ্যান্ড কনজারভেশন) জনাব ফারহানা মমতাজ বলেন, এনডিসিতে বাংলাদেশ নতুন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জাইকার সহায়তায় জ্বালানি দক্ষতা বাড়তে ঋণ প্রদান প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে স্রেডা। প্রথমে ১০০ মিলিয়ন পরে ২০০ মিলিয়ন ডলার তহবিল এখাতে পাওয়া গেছে। জ্বালানি দক্ষতা বাড়াতে যেসব প্রতিষ্ঠান ঋণ পেতে চায় সেগুলো পরিদর্শন করে মানসম্মত অবস্থায় পাওয়া গেলে অনাপত্তিপত্র দেয় স্রেডা। পরবর্তীতে নিয়মিত মনিটর করে। প্রতিষ্ঠানটি কতটা জ্বালানি দক্ষতা অর্জন করলো বা জ্বালানি দক্ষ যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে কত কার্বন দূষণ কমাতে পারলো তা দেখে। যদিও প্রতিষ্ঠানগুলির বাধ্যবাধকতা আছে জ্বালানি দক্ষতা বিষয়ে তথ্য নিয়মিত প্রদান করা। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে এ প্রকল্প থেকে ঋণ গ্রহণে কিছুটা অনীহা দেখা যাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চাইতে এখানে সুদহার বেশি। এছাড়া জ্বালানি দক্ষতা বাড়তে যেসব যন্ত্র কিনতে হয় তা বাজার মূল্যেও চাইতে বেশি দাম ধরা হয়।

এ বিষয়ে একটা বিজনেস মডেল ঠিক করা গেলে স্থানীয় ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ প্রদানে এগিয়ে আসবে। জ্বালানি দক্ষতা নিয়ে তথ্য যেন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে সে ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যারা সম্প্রতি যুক্ত করেছেন তাদেরও অর্থায়ন সুবিধা থাকা উচিত।

আলোচনায় স্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের লার্জ কর্পোরেট ক্লায়েন্ট কাভারেজ, কর্পোরেট, কর্মাশিয়াল অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল ব্যাংকিংয়ের প্রধান আরিফ আইনুল সুমন বলেন, আমরা মূলত দৃষ্টি দিচ্ছি নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে। এর জন্য অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বড় তহবিল প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ১০ বছরের জন্য এ খাতে অর্থ বিনিয়োগ করতে গেলে আমরা বেশ অসুবিধায় পড়ে যাই। ফলে প্রয়োজন বিদেশি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ আকর্ষণ করা।

এছাড়া সরকারের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো সোলার বিদ্যুতের মতো খাতে বিনিয়োগ পাওয়া। কারণ এক্ষেত্রে বিদ্যুতের মূল্য বেশি পড়ে। আবার এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সবসময় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায় না। তাই জ্বালানি সাশ্রয়ী বা নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র যেখানেই স্থাপন করা হোক না কেন তা যেন সবসময় চালু থাকে তার ব্যবস্থা নিতে হবে। জ্বালানি সাশ্রয়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র বিনিয়োগের জন্য অনেক তহবিল পাওয়া সম্ভব। তবে তা পাওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে।

জিআইজেড এর ইঞ্জিনিয়ার আল মুদাবির বিন আনাম বলেন, জ্বালানি দক্ষতার সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক সম্পর্ক রয়েছে। জলবায়ু নিয়ে সারা বিশ্বে যে আলোচনাটা এখন চলছে তার প্রধান উপাদান জ্বালানি দক্ষতা। ২০২৪ সালে উন্নত বিশ্বের দিকে আমরা একধাপ এগিয়ে যাব। এ উন্নয়ন ধরে রাখতে হলে যে অগ্রগতি প্রয়োজন তা করতে গেলে জ্বালানির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে। এখানেই প্রয়োজন হবে জ্বালানি দক্ষতার। যে জ্বালানি আমরা ব্যবহার করবো তা দিয়ে যেন আমার বেশি সেবা পেতে পারি সে ব্যবস্থা করতে হবে। এরপর আসবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার যতটা সম্ভব বাড়ান যায় তা দেখা। এছাড়া বিকল্প জ্বালানির বিষয়টিও গুরুত্ব দিতে হবে। জ্বালানি নিয়ে মহাপরিকল্পনায় এটা নিয়ে বিস্তারিত বলা আছে।

জ্বালানি দক্ষতার জন্য তহবিল খুব জরুরি। টেকসই জ্বালানিতে ঋণ প্রদান আশাব্যঞ্জক হলেও জ্বালানি দক্ষতা বাড়াতে ঋণ প্রবাহ তেমন দেখা যাচ্ছে না। এটা বাড়াতে হবে। এছাড়া দেশে নতুন প্রতিষ্ঠানে জ্বালানি দক্ষতা অর্জন বিষয়ে যে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে পুরোনো বা বর্তমান প্রতিষ্ঠানগুলোর জ্বালানি দক্ষতা বাড়াতে তেমন উদ্যোগ নেই। সাপ্লাই আর ডিমান্ড বিষয়ে ঐক্য হচ্ছে না।

আমাদের আসলে প্রতি একক বিদ্যুৎ উৎপাদন করচ কমাতে হবে। এখানে এখনও অনেক ভর্তুকি দিতে হয়। উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমান যেতে পারে।

খন্দাকার মুরশেদ মিল্লাত বলেন, ২০৫০ সালের মধ্যে জ্বালানি দক্ষ ব্যবহার, নবায়নযোগ্য জ্বালানি তথা শতভাগ সাসটেনেবল অর্থায়ন পদ্ধতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ শুরু করেছে। - ইপি টকস