News update
  • Bangladesh Bank Buys $115 Million to Support Forex Market     |     
  • Tarique Rahman, Daughter Zaima Added to Voter List     |     
  • NCP and LDP Join Jamaat-Led Eight-Party Alliance     |     
  • Tarique Rahman’s gratitude to people for welcoming him on his return     |     
  • Attorney General Md Asaduzzaman resigns to contest election     |     

আনসার বাহিনীকে আটকের ক্ষমতা দেয়ার নেপথ্যে

গ্রীণওয়াচ ডেক্স খবর 2023-10-25, 8:12am

resize-350x230x0x0-image-245041-1698172674-5d6eb04836269538c8897051e8c9c9391698199961.jpg




আটক, তল্লাশি ও জব্দ করার ক্ষমতা আনসার সদস্যদের দেয়া হলে তা জটিলতার সৃষ্টি করবে বলে মনে করেন সাবেক পুলিশ প্রধান মোহাম্মদ নুরুল হুদা৷ বিরোধী রাজনীতিবিদদের অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে৷

সোমবার সংসদে এ নিয়ে বিল উত্থাপনের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, দুর্যোগ এলে আনসার বাহিনীর সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে পরিমাণ সদস্য প্রয়োজন, পুলিশ বাহিনীতে এত পরিমাণ সদস্য নেই৷ এ পর্যন্ত ছয় লাখ আনসার সদস্য নিয়োগ করতে হয়েছে৷ নির্বাচনের সময় সমপরিমাণ আনসার সদস্য মোতায়েন করতে হবে৷

২০১৪ সালের নির্বাচনকে ঘিরে অগ্নিসন্ত্রাসের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তখন দেশ অচল করে দেওয়ার সময় আনসার বাহিনী যানবাহন চলাচলের জন্য নিশ্চয়তা প্রদান করেছে৷ সংসদে যে বিল উত্থাপন করা হয়েছে তার আট ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের (আনসার) সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে অপরাধীকে আটক করে অবিলম্বে পুলিশের কাছে সোপর্দ করবে এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে আটক ব্যক্তির দেহ তল্লাশি; কোনো স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি এবং মালামাল জব্দ করতে পারবে৷

সংসদে এই বিলের বিরোধিতা করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম৷ তার আপত্তি কণ্ঠ ভোটে নাকচ হয়ে যায়৷ বিলটি পরীক্ষার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠিয়ে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে৷ সংসদের এই শেষ অধিবেশনেই বিলটি পাস হতে পারে বলে জানা গেছে৷

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, প্রতিটি বাহিনীর জন্য আলাদা আইন আছে৷ সেই আইনের অধীনে তারা কাজ করে৷ শৃঙ্খলাবাহিনী হলে তা সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদের আলোকে তৈরি করতে হবে৷ আনসার তো একটা সেবামূলক বাহিনী৷ তাদের আলাদা আইনে তৈরি করা হয়েছে৷ আনসারকে তো আটক বা তল্লাশির ক্ষমতা দেয়া যায় না৷ দেয়া হলে তা হবে পুলিশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক৷ প্রস্তাবিত বিলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে আটক করার কথা বলা হলেও সেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি৷ তার সেই অনুমোদন দেয়ার ক্ষমতা আছে কী না সেটাও বড় প্রশ্ন বলে উল্লেখ করেন তিনি৷

তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত ক্ষমতা পেলে তারা ইচ্ছামতো গ্রেপ্তারের সুযোগ পাবে, তল্লাশি করবে৷ আনসারের কাছে তো অভিযোগ করার বিধান নেই৷ তাহলে তারা আটক করবে কীভাবে? আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে তো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই বলেছেন যে সামনে নির্বাচন, পুলিশের জনশক্তি কম আছে৷ নির্বাচনকে টার্গেট করেই এটা করা হচ্ছে৷

এদিকে গনফোরামের সংসদ সদস্য মেকাব্বির খান মনে করেন, আনসারকে আটক ও তল্লাশির ক্ষমতা দেয়ার এই বিলের মধ্যে অবশ্যই একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে৷ তিনি বলেন, তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এমনিতেই সহায়তা করছে৷ কিন্তু তারা তো পুলিশ নয়৷ পুলিশের কাজ তো আনসারকে দিয়ে করানো যাবে না৷ তাদের তো সেই দক্ষতা বা প্রশিক্ষণ নেই৷ যদি তাদের দিয়ে আটক বা তল্লাশি করাতেই হয় তাহলে তাদের পুলিশে আত্মীকরণ করা হোক৷

তার মতে, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য এর মাধ্যমে সরকার আরেকটি মাত্রা যুক্ত করলো৷ বিএনপির অভিযোগ এই উদ্যোগের মাধ্যমে এখন আনসার সদস্যরাও তাদের উপর নিপীড়ন চালাবে৷

সাবেক সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ বলেন, সরকার এখন বিদায়ের পথে৷ তাই নতুন নতুন আইন পাস করতে অস্থির হয়ে গেছে৷ এমনিতেই তারা পুলিশ দিয়ে, র‌্যাব দিয়ে, বিভিন্ন সংস্থা দিয়ে বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর গত ১৫ বছর ধরে জুলুম নিপীড়ন চালিয়েছে৷ এখন নতুন করে আরেকটি বাহিনীকে এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হলো৷ এটা অপ্রয়োজনীয় এবং অনাকাক্ষিত৷

তিনি বলেন, এর উদ্দেশ্য একটাই৷ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দমনপীড়ন৷ তাদেরকেও বিরোধী নেতা-কর্মীদের উপর গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনে কাজে লাগানো হবে৷

অন্যদিকে পুলিশের সাবেক আইজি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, আটক, তল্লাশি এবং জব্দ করা ফৌজদারি কার্যবিধি মোতাবেক তদন্তের একটি অংশ৷ আর সেই তদন্ত ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী পুলিশ করে৷ পুলিশের কোন র‌্যাংক করবে তা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অর্ডারে ঠিক করে দেয়া থাকে৷ সেই জিনিসটা অন্য কারো হাতে গেলে এখানে একটা জটিলতা সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে৷

তিনি জানান, ফৌজদারি তদন্ত করার যাদের এখতিয়ার আছে তাদের মধ্যে পুলিশ ও র‌্যাব অন্যতম৷ এছাড়াও দুদক, শুল্ক বিভাগ, বন বিভাগের এই ক্ষমতা আছে৷ তবে প্রধানতম তদন্তকারী সংস্থা হলো পুলিশ৷ তার মতে, পুলিশের কাজ অন্যকে দিলে জটিলতা তৈরি হবে৷

তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, এখানে তো অপরাধের তদন্ত এবং অভিযোগ গ্রহণের বিষয় আছে৷ অভিযোগ নেয়ার দায়িত্ব তো পুলিশের৷ অবশ্য এই ক্ষমতা পুলিশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে কী না তা কার্যকর হওয়ার পরই বোঝা যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি৷ তথ্য সূত্র ডয়চে ভেলে বাংলা।