News update
  • Bumper harvest of Jujube in Ramu Upazila     |     
  • Govt urged to offer scholarships to Palestinian students     |     
  • Caretaker Govt Review Hearing on Supreme Court Cause List     |     
  • Bangladesh Single Window to Launch by March: Lutfey Siddiqi     |     
  • UNRWA chief: Ceasefire is the start, not the solution     |     

স্মার্ট কার্ড নেই বিআরটিএতে, বিপাকে লাইসেন্স প্রত্যাশীরা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2024-01-28, 2:57pm

rttjutuy-0ed4666b7b30b59f16928ab7912845131706432250.jpg




স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন করে মাসের পর মাস বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) কার্যালয়ে ঘুরপাক খাচ্ছেন ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রত্যাশীরা। সমাধান না পেয়ে ব্যক্তিগত বাহন মালিকদের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন পেশাদার চালকরাও। নির্ধারিত সময়ে লাইসেন্স না পেয়ে চাকরি পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চালক পদে আবেদনকারী অনেকে। রুজির সন্ধানে বিদেশ গমনও আটকে গেছে অনেকের।

বিআরটিএ কার্যালয়ে গিয়ে কথা হয় সগীর আহমেদ নামে এমন একজনের সঙ্গে। সৌদি আরব যাওয়ার জন্য ইতোমধ্যে সব প্রয়োজনীয় কাগজ প্রস্তুত তার। ঝুলে আছেন শুধুমাত্র ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য। ভিসার শর্তানুযায়ী অবশ্যই তাকে ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে সেদেশে যেতে হবে।

সগীর বলেন, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমি যেতে না পারলে ভিসা বাতিল হয়ে যাবে। দ্রুত যাওয়ার জন্য আমার মালিক ও অ্যাম্বেসি থেকে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। আমার মেডিকেলের মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে। শুধু ড্রাইভিং লাইসেন্সটার জন্য ঝুলে আছি। সময়মতো কার্ড না পেলে আমার সব টাকা আর শ্রম জলে যাবে।

অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য (বিআরটিএ) সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন আল আমিন হোসেন। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই ড্রাইভিং লাইসেন্সের নির্ধারিত ফিও পরিশোধ করেছেন। কিন্তু এই ঘটনার প্রায় ৬ মাস পার হতে চললেও এখন পর্যন্ত তার ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ডটি প্রিন্ট করতে পারেনি বিআরটিএ।

আল আমিন বলেন, লাইসেন্সের জন্য লিখিত, মৌখিক, ব্যবহারিক পরীক্ষা ও টাকা জমা দিয়েছি গত বছরের জুলাই মাসে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার লাইসেন্স কার্ডটি প্রিন্ট হয়নি। এ বিষয়ে কারও কাছ থেকে কোনো তথ্যও পাচ্ছি না। বিআরটিএতে গেলে তারা জানায়, হয়ে যাবে। কিন্তু কবে হবে, সেটি কেউ আর জানায় না। দেখতে দেখতে ৬ মাস হয়ে গেল। অথচ জানতাম এক মাসের মধ্যে বিআরটিএ ড্রাইভিং লাইসেন্সের কার্ড সরবরাহ করে।

শুধু এই দুজনই নয়, এমন সমস্যা নিয়ে নিয়মিতই বিআরটিএর সদর কার্যালয়সহ সার্কেল অফিসগুলোতে ভিড় করছে হাজারো লাইসেন্স প্রত্যাশী। নির্ধারিত সময়ে বিআরটিএ কার্ড সরবরাহ করতে না পারায় সাধারণ আবেদনকারীদের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে বিদেশগামী ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনকারীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাপানোর কার্ড সংকট হওয়াতে এমন জটিলতায় পড়েছে বিআরটিএ। গত বছরের মাঝামাঝিতেও এমন ভয়াবহ কার্ড সংকটে পড়েছিল সরকারি এই সংস্থাটি।

বিআরটিএ সূত্র বলছে, ২০২০ সালের ২৯ জুলাই লাইসেন্স কার্ড মুদ্রণের জন্য বিআরটিএ’র সঙ্গে চুক্তি হয় মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স (এমএসপি) প্রাইভেট লিমিটেডে। এই কোম্পানির কাছে এখন কার্ড নেই। ২৫ হাজার স্মার্টকার্ড বিমানবন্দরে দুই সপ্তাহ আগে এলেও সেটি খালাস করতে পারেনি কোম্পানিটি। যদিও এই ২৫ হাজার কার্ডে চাহিদা মেটানো সম্ভব না।

জানা গেছে, কোম্পানিটি ডলার সংকটের অজুহাত দেখিয়েছে। যখন চুক্তি হয় তখন ডলারের দাম ছিল ৮৫ টাকা। যা বর্তমানে ১২৫ টাকায় পৌঁছেছে। এই কারণে বিআরটিএ কার্ড আনতে পারছে না ভারত থেকে। চুক্তির তিন বছরে ২৪ লাখ কার্ড সরবরাহের কথা থাকলেও এ পর্যন্ত ১৬ লাখের মত সরবরাহ করা হয়েছে। এখনও প্রায় ৮ লাখ কার্ডের ঘাটতি আছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিআরটিএর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ভারতীয় প্রিন্টিং কোম্পানিটি এখন বিআরটিএ'র জন্য বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এর আগে গত বছরের মাঝামাঝিতে লাইসেন্স কার্ডের চরম সংকটে পড়ে বিআরটিএ। তখন ঘাটতি ছিল প্রায় ৫ লাখের মতো। তবে তখন ৬ লাখ কার্ড দেশে এসেছিল আইপির (আমদানি অনুমতি) মাধ্যমে। সেটিও শেষ হয়েছে পুরোনো আবেদনকারীদের দেওয়ার জন্য। নতুন করে আর কাউকে কার্ড দিতে পারছে না বিআরটিএ।

কার্ড সংকট নিয়ে মাদ্রাজ প্রিন্টার্সের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক আশরাফ বিন মুস্তফা বলেন, আগে এলসি নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল, এখন এলসি নিয়ে সেই সমস্যা নেই। তবে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ব্যাংক তাদের বড় সংখ্যার এলসি দিতে চাইছে না।

তিনি বলেন, এলসির কারণে ছোট সংখ্যায় কার্ড আনা হচ্ছে। তবে সেটাতে বিআরটিএ খুশি নয়। এখন ৫০ হাজার করে কার্ড আনা যাচ্ছে। শুধু শেষবার ২৫ হাজার কার্ড এসেছে। সম্প্রতি তারা সাফটা (দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্তবাণিজ্য চুক্তি) চুক্তি করেছে। তবে সেই চুক্তিতে নাম ভুল থাকায় বিমানবন্দর শুল্ক কর্তৃপক্ষ কার্ড ছাড় দিচ্ছে না। ভারতীয় কোম্পানিতে তাদের পাঁচ লাখ কার্ড পড়ে থাকা স্বত্বেও কার্ড বাংলাদেশে আনা যাচ্ছে না।

এদিকে বিআরটিএ সূত্রমতে, বাংলাদেশে বর্তমান প্রতি বছর অন্তত ৭ লাখ কার্ড প্রয়োজন। এখন ঘটতি আছে আরও ৮ লাখ। এর সঙ্গে চুক্তি পরিবর্তনের সময় প্রায় ১২ লাখ আবেদন জমা পড়েছিল। ফলে এতো বিপুল সংখ্যক কার্ডের চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ ঠিক রাখতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।

এসব বিষয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, কার্ড নিয়ে কিছু সমস্যা আছে। এটা বৈশ্বিক সমস্যার একটি অংশ। তবে দেশে গাড়ি চালানোর জন্য এখন বিআরটিএ থেকে ‘ই-লাইসেন্স’ দেওয়া হচ্ছে। কার্ডের এই সমস্যা দ্রুতই কেটে যাবে। বিমানবন্দরে কিছু কার্ড এসেছে। দুই একদিনের মধ্যেই এগুলো ছাড় পাবে।