এক যুগে রেলের উন্নয়নে খরচ হয়েছে দেড় লাখ কোটি টাকা, অথচ এখনও নিরাপদ হয়নি রেলপথ। তিন হাজার কিলোমিটার রেলপথের ৬৩ শতাংশই ঝুঁকিপূর্ণ। মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে ৭০ শতাংশ রেল ইঞ্জিন ও কোচ। আর তাই প্রতি বছর বাড়ছে ট্রেন দুর্ঘটনা। বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের পরও প্রতি বছর রেলের গড় লোকসান প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিকল্পিত উন্নয়নের খেসারত দিচ্ছে রেলওয়ে।
অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গত এক যুগে রেলের উন্নয়নে খরচ হয়েছে দেড় লাখ কোটি টাকা। এরপরও সিগন্যাল ব্যবস্থার উন্নয়ন তো হয়নি, উল্টো ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেই চালানো হচ্ছে ট্রেন।
রেলের তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে দেশে ঝুঁকিপূর্ণ রেললাইন ৬৩ শতাংশ। নষ্ট হয়ে যাওয়া কাঠের স্লিপার আর জং ধরা ফিশপ্লেটেই ঘুরছে ট্রেনের চাকা। ৭০ শতাংশ মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিন আর কোচ দিয়েই চলছে যাত্রী পরিবহন। লোকবল সংকটের কারণে ভাড়া করা অদক্ষ শ্রমিক দিয়ে করানো হচ্ছে অপারেশনাল কাজ। ফলাফল প্রতি বছর বাড়ছে দুর্ঘটনা। তাই নিরাপদ এই বাহনের যাত্রীদের চোখেমুখে এখন ভয় আর শঙ্কা।
যাত্রীরা বলছেন, বাসগুলো চলাচলের সময় প্রতিযোগিতা করে। তাই ট্রেনকেই নিরাপদ মনে করি। কিন্তু এখন তো দেখছি ট্রেনও দিন দিন অনিরাপদ হয়ে উঠছে। অব্যবস্থপনার কারণেই দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সব মিলিয়ে রেল কর্তৃপক্ষকে আরও গুরুত্ব দেয়া উচিত।
বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ হলেও বাড়েনি ট্রেনের গতি বরং কমেছে অনেক রুটেই। ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় কোথাও কোথাও ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার গতিতে চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে চালকদের। ১০ বছরেও কমেনি যাত্রীদের অভিযোগ। এখনও টিকিট সংকট আর শিডিউল বিপর্যয় নিত্যসঙ্গী রেলপথের যাত্রীদের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যা দরকার তা না করে বিলাসী প্রকল্পে ঝুঁকছে রেল। ফলে অপরিকল্পিত অর্থ খরচের খেসারত দিচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মো. হাদিউজ্জামান বলেন, মূলত অবকাঠামোর পেছনে একটা বিনিয়োগ হয়েছে। কিন্তু দক্ষ জনবল তৈরি করতে পারিনি। আমাদের রেল পরিচালনা এখনো অনেকটা প্রাগৈতিহাসিক ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
রেলে এই মুহূর্তে ৩৬টি উন্নয়ন প্রকল্প চলছে।