News update
  • Israeli strikes kill 43, including children, in Gaza     |     
  • WFP Deputy Chief Warns of Deepening Crisis in Gaza     |     
  • UN Warns Gaza Fuel Crisis Threatens Humanitarian Collapse     |     
  • WHO’s Saima Wazed placed on indefinite leave amid graft probe     |     
  • UNRWA Commissioner-Gen. on Gaza: 800 starving people killed     |     

ট্র্যাপের গুটি ছিল এস্কর্ট গার্ল সিলিস্তা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2024-05-24, 7:16am

img_20240524_072241-962c3c3d36187bcf121536785ada589b1716514133.jpg




এমপি আনারকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ খুনির সঙ্গে এক একজন নারীও ছিল। সিলিস্তা রহমান নামে ওই তরুণী আক্তারুজ্জামান শাহীনের বান্ধবী। দুই মাস আগেও সিলিস্তাকে নিয়ে কলকাতায় গিয়েছিলেন আক্তারুজ্জামান শাহীন। সিলিস্তাকে দিয়েই হানি ট্র্যাপের গুটি ফেলে এমপি আনারকে সঞ্জীবা গার্ডেনের ওই বাসায় নিয়ে যান। এমনটাই বলছেন গোয়েন্দা সংশ্লিষ্টরা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিলিস্তা দাবি করেছে, শাহীনকে সে আঙ্কেল বলে ডাকে। তাকে কলকাতায় ঘোরানো ও কেনাকাটা করে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে গিয়েছিল। ঘটনার সময় সে ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটের ওপরে ছিল। তবে এমপি আনারকে যখন ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে তখন দরজা সেই খুলে দিয়েছিল।

সিলিস্তার দাবি, ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটের নিচতলার কোনার একটি কক্ষ থেকে যখন ব্লিচিং পাউডারের গন্ধ আসে তখন সে এ বিষয়টি নিয়ে আমান ও অন্যদের জিজ্ঞাসা করেছিল। তারা ফ্লোরে মল পরিষ্কার করেছে বলে জানায়।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া সিলিস্তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুরে। ঢাকার উত্তরায় একটি ফ্ল্যাটে থাকতো সে। উচ্চবিত্ত পরিবারের অনেকের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। সে মূলত এস্কর্ট গার্ল হিসেবে কাজ করতো। এক বন্ধুর মাধ্যমে শাহীনের সঙ্গে তার পরিচয়। এরপর থেকে তাকে নিয়ে বিভিন্ন পার্টিতে যাতায়াত করতো শাহীন। বিনিময়ে সিলিস্তাকে মাসিক হিসেবে ৎনির্দিষ্ট পরিমাণ খরচও দিতো।

গোয়েন্দারা জানান, সিলিস্তা এই খুনের ঘটনা আগে থেকেই জানতো কিনা তা জানার জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সিলিস্তা অনেক চতুর। সে খুনের সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করছে। কিন্তু একই ফ্ল্যাটে একজন মানুষকে হত্যার পর কেটে টুকরো টুকরো করার ঘটনাটি তার অজানা থাকার কথা নয়। কারণ এমপি আনারকে হত্যার পর চাপাতি দিয়ে হাড়গুলো কেটে আলাদা আলাদা করা হয়। হাড় কাটার শব্দও তার শোনার কথা।

এদিকে ঝিনাইদহ-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের খণ্ডবিখণ্ড মরদেহ উদ্ধার করেছে কলকাতা পুলিশ।

যদিও মরদেহ পাওয়া গেছে কি না- তা এখনো পরিষ্কার নয়। কেননা পুলিশ আনুষ্ঠানিক কিছু বলেনি।

তবে কলকাতার বিভিন্ন সূত্র বলছে, এমপি আনারের মরদেহ খণ্ডবিখণ্ড অবস্থায় ইতোমধ্যেই কলকাতা পুলিশের হাতে এসেছে। এ নিয়ে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে নারাজ।

ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের পুলিশ ও এমপি আনারের পরিবারের সদস্যরা কলকাতায় পৌঁছানোর পরে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানাতে পারে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার তদন্ত করছে সংস্থাটি।

পুলিশ সূত্র জানায়, কলতাকার নিউ টাউনের পাশের ভাঙ্গর নামক এলাকার বাগজোলা খালের কৃষ্ণমাটি সেতুর পাশ থেকে মরদেহের টুকরা উদ্ধার করা হয়। রাত ১০টা নাগাদ এই উদ্ধার অভিযান চালায় কলকাতা সিআইডি ও পুলিশের একটি দল।

আটক ক্যাবচালক জুবেইর ওরফে জিহাদকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জিজ্ঞাসাবাদ করলে কীভাবে সংসদ সদস্য আজিমকে কলকাতার বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে হত্যা করা হয়েছে, সেই বিষয়ে সিআইডিকে বিস্তারিত তথ্য দেন ক্যাবচালক।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে পুলিশের বিরাট কনভয় (১৫টি গাড়ি) নিউ টাউন হয়ে বাগজোলা খালের পাশে এসে দাঁড়ায়। ১০০ জনের মতো পুলিশ খালপাড়ে তন্নতন্ন করে খণ্ডবিখণ্ড লাশ খুঁজতে শুরু করে। পরে কৃষ্ণমাটি সেতুর পাশ থেকে খণ্ড খণ্ড দেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। সেই দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় সিআইডি এবং কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টিম।

এলাকাবাসী জানান, রাতের অন্ধকারে পুলিশের এই অভিযান চলে। পুলিশের এত কনভয় দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ভাঙ্গরের মানুষ।

এর আগে, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য আনোয়ারুল আজিম আনার দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি তার ভারতীয় ঘনিষ্ঠ বন্ধু পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বরানগর থানার মলপাড়া লেনের বাসিন্দা স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন।

পরদিন ১৩ মে দুপুরে চিকিৎসক দেখানোর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান। কিন্তু সন্ধ্যায় ফেরার কথা থাকলেও আর ফিরে আসেননি। উল্টো দিল্লি গিয়ে সেখান থেকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে জানান তাকে আর ফোন করতে হবে না। দরকার হলে তিনি তাকে (গোপাল বিশ্বাস) ফোন করবেন। কিন্তু এরপর থেকে আর কোনোভাবেই তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

স্বাভাবিকভাবে উৎকণ্ঠা ছড়ায় তার বাংলাদেশের বাসায়। পাশাপাশি গোপাল বিশ্বাসও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এরপরই কোনো উপায় না দেখে গত ১৮ মে বরানগর থানায় একটি নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন গোপাল বিশ্বাস।

জিডিতে গোপাল বিশ্বাস লিখেছেন, গত ১৩ মে দুপুর দেড়টার পর ডাক্তার দেখানোর কথা বলে আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে যান আনোয়ারুল আজিম আনার। যাওয়ার সময় বলে যান, দুপুরে খাব না, সন্ধ্যায় ফিরে আসব। যাওয়ার সময় নিজে গাড়ি ডেকে বরাহনগর বিধান পার্ক কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে গাড়িতে উঠে চলে যান।

এরপর তিনি সন্ধ্যায় বরাহনগর থানার অন্তর্গত মণ্ডলপাড়া লেনে বাড়িতে না ফিরে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করেন, আমি বিশেষ কাজে দিল্লি যাচ্ছি। গিয়ে ফোন করব, তোমাদের ফোন করার দরকার নেই।

গোপাল বিশ্বাস মিসিং ডায়েরিতে আরও লিখেছেন, গত ১৫ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে জানান আমি দিল্লি পৌঁছালাম, আমার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন, ফোন করার দরকার নেই।

এরপর বুধবার (২২ মে) সকালে গোপাল বিশ্বাস স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, এমপি আজিমকে হত্যা করা হয়েছে বলে কলকাতা পুলিশ তাকে জানিয়েছে।

এ ঘটনায় বাংলাদেশে তিনজন এবং কলকাতায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।