News update
  • Storm Alert Issued for Dhaka and Eight Other Regions     |     
  • 58 killed in deadliest US strike on Yemen     |     
  • BNP Opposes Reforms to Constitution’s Core Principles      |     
  • Time to Repair Bangladesh–Pakistan Ties     |     
  • Dhaka’s air quality recorded ‘unhealthy’ Friday morning     |     

নতুন সরকারের সঙ্গে বহির্বিশ্বের ব্যবসায়িক সম্পর্ক কেমন হবে?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2024-08-12, 10:56pm

img_20240809_083154-176b5b2275377777e5851f90087bc1bb1723481904.jpg




নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্তর্বর্তী সরকার দেশের অর্থনীতির গতিধারা কতখানি সচল রাখতে পারবে- তা নির্ভর করছে বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্কের ওপর। এমনটি মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শীতল সম্পর্কের একমুখী সমীকরণ থেকে বাংলাদেশের বের হয়ে আসার সুযোগ করে দিতে পারবে এ সরকার। এতে সবদিক থেকে নিজেদের সুবিধামতো ব্যবসায়িক সম্পর্ককে উষ্ণ করার সুযোগ পাওয়া যাবে।

অনেকের মতে, শেখ হাসিনার পতনের সঙ্গে সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও পারস্পরিক বিশ্বাসে ভাটা পড়ার বড় আশঙ্কা আছে। তবে খোদ ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, দ্বিপাক্ষিক স্বার্থের জায়গা থেকেই ভারত চাইবে না বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে।

ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দুর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক শেখ হাসিনাকেন্দ্রিক না, বরং দুই দেশের বহু বছরের চলমান পারস্পরিক বিশ্বাসের ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে আছে। এরইমধ্যে ঢাকার অনেক নীতিনির্ধারক দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, তারা ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের ফেলো গবেষক শাফকাত মুনীর বলেন, বাংলাদেশের কোনো সরকারই চাইবে না ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শীতল করতে। একইভাবে ভারতকেও বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। সম্পর্কটা আওয়ামী লীগ-ভারত না, বরং ভারত-বাংলাদেশের। সুতরাং বাংলাদেশের সিংহভাগ মানুষের সিদ্ধান্তের ওপর আস্থা রেখে ভারত পাশে থাকবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

দ্য হিন্দুকে বাংলাদেশের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ইমিরেটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, মানুষ ভাবে আওয়ামী লীগ মানে ভারতপন্থী আর বিএনপি মানে ভারতবিরোধী। ব্যাপারটিকে এতটা সোজাসাপ্টাভাবে দেখা উচিত না। ইউনূস সরকার দায়িত্ব নিয়েছে এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক মোটেই খারাপ না। সে হিসেবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে যেসব আশঙ্কা করা হচ্ছে তা আপাতত অমূলক।

এদিকে এতদিন চীনের সঙ্গে সম্পর্ক এক রকমের সাম্য অবস্থায় থাকলেও এবং ভারতের সঙ্গে বেশি দহরম মহরমের কারণে অঘোষিত শীতলাবস্থা বিরাজ করলেও, এবার বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আবারও উষ্ণ হবে বলে মনে করছে খোদ নয়াদিল্লি।

নয়াদিল্লির অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্শ পান্থ ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, চীন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনেশিয়েটিভ নিয়ে এতদিন বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগ না করলেও এবার বড় বিনিয়োগের পথে হাঁটতে পারে। এতদিন দিল্লির সঙ্গে থাকা একপাক্ষিক সম্পর্ক থেকে বের হয়ে এলে ঢাকার সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক ভালো হবে।

ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি, হাসিনা নয়াদিল্লির স্বার্থ রক্ষা করেই বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছে। কিন্তু যদি ক্ষমতা বিএনপির হাতে যায় তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে বেইজিংয়ের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে এবং সেখানে দিল্লির স্বার্থরক্ষা মুখ্য বিষয় আর থাকবে না। তবে ইউনূস যতদিন আছেন ততদিন দিল্লি বা বেইজিং কেউই একপাক্ষিক ব্যবসায়িক সুবিধা আদায় করতে পারবে না বলে মত তাদের।

আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে বিগত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে ভাটা পড়লেও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউনূস সরকারের আমলে এ সম্পর্ক উন্নয়নের বড় সুযোগ আছে।

এ ব্যাপারে শুক্রবার (৯ আগস্ট) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেশটির পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম এবং প্রধান প্রত্যাশা গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার সক্ষমতা সৃষ্টি করা।

নতুন সরকারের জন্য অন্যান্য অনেক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে বড় একটি চ্যালেঞ্জ বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানো।

বিশ্বব্যাংকের সবশেষ হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ যেখানে জিডিপির দেড় শতাংশের কম, সেখানে মালদ্বীপে বিদেশি বিনিয়োগ ১২ শতাংশের বেশি, আর অর্থনৈতিক সংকট পাড়ি দিয়ে শ্রীলঙ্কায় বৈদেশিক বিনিয়োগও ২০ শতাংশের বেশি। যেখানে মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা বিদেশি বিনিয়োগে এত এগিয়ে আছে, সেখানে বাংলাদেশ কেন পারছে না- এটি বড় প্রশ্ন।

অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আঙ্কটাডের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের পর ২০২২ সালে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লেও ২০২৩ সালে এসে কমে গেছে। মূলত যে উদ্দেশ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, সেটি এখন পর্যন্ত পূরণ না হওয়ায় বিনিয়োগের ওপর নেতিবাচক এ প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

মূলত আলোচনার টেবিলে বাংলাদেশ সক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে বৈদেশিক বিনিয়োগের যে ভাটা চলছে সেটি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তবে এসবের জন্য শুরুতেই দেশের অভ্যন্তরের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এরপর বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারে আরও ১৬ জন উপদেষ্টাও এরই মধ্যে শপথ নিয়েছেন।  সময় সংবাদ।