News update
  • UNRWA Situation Report on Crisis in Gaza & Occupied West Bank     |     
  • Intimidation or bloodshed cannot halt Bangladesh’s march to democracy     |     
  • Khaleda Zia integral to an important chapter in BD history: Yunus     |     
  • Enthusiasm marks Victory Day celebrations across Bangladesh     |     
  • Dhaka-Delhi ties deep; to be shaped by trust, dignity, mutual respect     |     

প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিদের দুর্দশার কথা আমলে নিয়ে নতুন নীতিমালা দাবি

খবর 2022-02-26, 9:53pm

Poultry Farm



বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারি ঐক্য পরিষদ মতস ও পানিসম্পদ মন্ত্রির কাছে তাদের দুর্দশার কথা আমলে নিয়ে নতুন পোল্ট্রি নীতিমালা প্রনয়নের দাবি করেছে। এ ব্যপারে ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে মন্ত্রির বরাবর একটি দরখাস্ত দাখিল করেছে। দরখাস্তটি নিম্নরূপঃ  

আমরা বাংলাদেশের প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারি, ১৯৮৮ সালে বন্যার পর সরকারের যুব মন্ত্রানালয় আমাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে পোল্টিধ ব্যবসায় উদবুদ্ধ করে এবং প্রশিক্ষিত খামারিদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে আরো কয়েক লক্ষ খাামারি তৈরী হয়।এমনি ভাবে প্রায় কয়েক লাখ বেকার যুবক এই পেশায় নিয়োজিত হয়। পরিবারের লোকজন তথা  ̄স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে দিন-রাত পরিশ্রম করে এই ব ̈বসা আমরা এতদিন যাবত চালিয়ে আসছিলাম এবং সংসারের যাবতীয় খরচ এই ব ̈বসা থেকেই আসতো, কিন্ত আজ প্রায় ১০ বছর যাবৎ প্রান্তিক খামারিদের উপর নানান দূর্যোগ নেমে আসে এক দিনের বাচ্চা, খাদ ̈ ও ঔষধের দাম অ ̄স্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি এবং বিক্রী করার সময় মুরগি ও ডিমের দাম অ ̄স্বাভাবিক ভাবে কমে যাওয়ার বিষয়টি খামারিদের জীবনকে মহাসংকটে ফেলে দেয়।

মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়,

আপনি অবশ ̈ই অবগত আছেন যে, প্রান্তিক খামারিরাই প্রথম বাংলাদেশে বানিজ্যিক ভাবে বধয়লার ও লেয়ার মুরগিপালন করা শুরু করে, তখন হাচ্চারি, ফিডমিল ও ঔষধ কিছুই ছিলনা। বাচ্চা আসতো বিদেশ থেকে, কিছু বাচ্চা বাংলাদেশ বিমান সরবরাহ করত। মানুষের ঔষধ মুরগিকে খাওয়ানো হতো, বাজার থেকে খুচরা নানান পণ্য কিনে হাতে মিক্স করে মুরগিকে খাওয়ানো হতো।

এই ভাবে যখন সারা বাংলাদেশে বাজার তৈরী হয় তখন ১৯৯৩/৯৪ সাল থেকে শুরু হয় দেশি বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আগমন। এখন প্রতি সপ্তাহে প্রায় দেড় কোটি বাচ্চা উৎপাদন হয়, কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো হ্যাচারির মালিকেরা নিজেরাই প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৭০ লক্ষ বধয়লার মুরগি বানিজ্যিক উদ্দেশে ̈ পালন করে থাকে এবং তাদের এই রেডি মুরগি যখন বাজারে ছাড়ে তখন মুরগির বাজার একদম কমে যায়, যার ফলশ্রুতিতে খামারিরা নিজেদের পুজি হারায়। এই ভাবে লোকসান দিতে গিয়ে খামারিরা শুধু সর্বস্ব হারায়নি, প্রতিটি খামারি আজ ডিলারদের কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণী, যা প্রতিটি ডিলারদের খাতা দেখলেই বুঝা যাবে। তাছাড়া আরও পরিতাপের বিষয় হল লোকসান দিতে গিয়ে অতিষ্ট হয়ে অনেক খামারি যখন খামার বন্ধ করে দেয়, তখন ডিলারেরা মামলা করে এবং হুমকি ধামকি দেয়।

হ্যাচারির মালিকেরা বাচ্চা, খাদ ̈ উৎপাদন করে এমনকি কেউ কেউ ঔষধও উৎপাদন করে, তারা ডিলার নিয়োগ দেয়, ডিলাররা আমাদের খাদ ̈, বাচ্চা ও ঔষধ দেয়। আবার হাচারির মালিকেরা নিজেরাই মুরগি পালন করে বাজারে বিক্রী করে, তাহলে তারা ডিলারই নিয়োগ দিলো কেন এবং আমাদেরকে বাচ্চা দিল কেন? আর আমরা দিন-রাত পরিশ্রম করে যে বাজার তৈরী করলাম সে বাজার থেকে আমাদেরকে কেন বিতাড়িত করছে? আমরা নিজেদের জায়গার উপর নিজেদের অর্থ বিনিয়োগের মাধ্য ̈মে খামার তৈরী করি, প্রাথমিক পুজি বিনিয়োগ করে খামার ব্যবসা শুরু করি। আমরা সরকারের কাছ থেকে লোন নেইনি। শুধু ঘর বানাতেই বাংলাদেশের প্রান্তিক খামারিদের বিনিয়োগ প্রায় আট হাজার কোটি টাকা। নগদ বিনিয়োগ প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা এবং ডিলারদের কাছে ঋনী আছে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা। তাই আপনার কাছে আমাদের আকুল আবেদন সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এতদসঙ্গে সংযু৩ করা আমাদের দাবির আলোকে নতুন নীতিমালা বাস্তবায়ন করুন এবং অসহায় খামারিদের জীবন রক্ষা করুন।

মজলুম খামারিরা এক হও প্রান্তিক খামারিদের ৮ দফা মানতে হবে, মেনে নাও।

১। কোন হাচারীর মালিক বানিজি ̈ক ভাবে রেডি বয়লার মুরগী ও লেয়ার মুরগী পালন করতে পারবে না এবং অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

২। খাদ্য ও বাচ্চার মান প্রানীসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক সর্বক্ষনিক মনিটরিং করতে হবে।

৩। খামারিদের বিদু ̈ৎ বিল, শিল্প হারে নিতে হবে।

৪। বিগত ১৪-০৩-২০১০ইং তারিখে সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করা ১ দিনের বধয়লার ও লেয়ার বাচ্চার দাম ৩০ ও ৩২ টাকা হারে নিতে হবে।

৫। রাণীক্ষেত, গাম্বরো ও বার্ডফ্লু জাতীয়- জটিল রোগের টিকা ও ঔষধ বিনা মূল্যে খামারিদের দিতে হবে।

৬। প্রতিটি উপজেলায় প্রাণীসম্পদ, কর্মকর্তার সহযোগিতায় উপজেলাধীন সকল খামারিদের একটি সমিতির আওতায় এনে জামানত ছাড়া স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের ব ̈বস্থা করতে হবে। এই ঋণ এর টাকা দিয়ে খামারিরা তাদের খামার পুর্নসংস্কারর ও চলতি পুজির চাহিদার লক্ষ্যে ব ̈বহার করবে। ঋনদাতা ব্যাংক ও সমিতির নির্বাহি কমিটি ঋনের টাকা ব্যবহার ও আদায়ের তদারকি করবে।

৭। রানীক্ষেত- বার্ডফ্লু ও প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের সম্পূর্ণ ভর্তুকি দিতে হবে অথবা ইন্সুরেন্সের আওতাভুক্ত করে, ক্ষতি পূরণ দিতে হবে।

৮। প্রতে ̈ক উপজেলার প্রধান বা বড় বাজারগুলিতে খামারিদের সমিতির অনূকুলে ২/৩ শতক জায়গার উপর মুরগি ও ডিম বিক্রির দোকান নির্মাণ করে দিতে হবে, তাতে করে মন্দা মৌসুমে খামারিরা নিজেদের মুরগি ও ডিম বিক্রি করে অন্তত মূলধনের কিছুটা হলেও সংগ্রহ করতে পারবে।

মিজান বাশার,  সভাপতি, কাজী মোস্তাফা কামাল, মহাসচিব, বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারি ঐক্য পরিষদ।