News update
  • Dreams of returning home dashed by reality in Gaza City     |     
  • Hospitals overwhelmed in DR Congo, food running out     |     
  • Israel’s Ban on UNRWA to Undermine Ceasefire in Palestine     |     
  • Dhaka’s mosquito menace out of control; frustration mounts     |     
  • 10-day National Pitha Festival begins at Shilpakala Academy     |     

ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ায় বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কে কোনও পরিবর্তন আসবে?

বিবিসি নিউজ বাংলা খবর 2024-11-08, 11:56am

676765767dg-dade030480de861376a5aa140111e3721731045395.jpg




মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এখন আলোচনার বিষয় সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কেমন হবে।

মানবাধিকার সংক্রান্ত কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কে শীতলতা চলছিলো। এসময় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বক্তব্যেও তা প্রকাশ পাচ্ছিলো।

তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কে অনেকটাই উষ্ণতা দেখা গেছে।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট নেতাদের সম্পর্ক বরাবরই বেশ ভালো। কিছুদিন আগে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে তার উচ্ছ্বসিত ছবিতেও তার প্রতিফলন দেখা যায়।

যদিও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন যে শুধু ডেমোক্র্যাট না, রিপাবলিকান পার্টির নেতাদের সঙ্গেও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সুসম্পর্ক রয়েছে। তার মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান সর্ম্পক আরও উচ্চ শিখরে পৌঁছাবে।

তবে সবকিছু ছাপিয়ে অবধারিতভাবেই এই প্রশ্ন আসছে যে গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বরফ যেভাবে গলতে শুরু করেছিলো, এখনও তা অব্যাহত থাকবে কি না। নাকি, ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ায় বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের মাঝে বড় কোনও পরিবর্তন আসবে?

ট্রাম্প প্রশাসনকে নিয়ে যেসব কারণে সংশয়

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের ওপর রাতারাতি কোনও প্রভাব না পড়লেও দীর্ঘমেয়াদে গিয়ে পড়বে। সেইসাথে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথেও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভালো সম্পর্ক নয়।

এর কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া যায় ২০১৬ সালে ফিরে গেলে। তখন রিপাবলিকান পার্টি থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ওই বছরই ফ্রান্সের এইচইসি প্যারিস নামের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য রাখার সময় মি. ইউনূস ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়কে ‘সূর্যগ্রহণ’ বা অন্ধকার সময় হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার এক চিঠিতে তিনি বলেন যে “দুই দেশের অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করতে ও টেকসই উন্নয়নের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে উন্মুখ রয়েছি।”

তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরাসরি ফোন-ই করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তিনি নিজেই তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ড থেকে (পূর্বের টুইটার) টুইট করে জানিয়েছেন।

এর আগে তিনি মি. ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে তাদের দু’জনের কিছু ছবিসহ আরও একটি টুইট করেছিলেন। এই দু’টো টুইটেই নরেন্দ্র মোদী মি. ট্রাম্পকে “বন্ধু” হিসাবে সম্বোধন করেছেন।

এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য যে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদী’র মধ্যকার সম্পর্ক সবসময়ই ভালো। সেইসাথে, রিপাবলিকান পার্টির সাথেও ভারতের সম্পর্ক সবসময়ই খুব ভালো থাকে।

তবে তাদের দু’জনের এই বন্ধুত্ব বাংলাদেশের জন্য কিছুটা চিন্তার কারণ, বলছেন বিশ্লেষকরা।

কারণ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সবচেয়ে ভালো বন্ধু ভারত এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই ভারতের লক্ষ্য হবে, আওয়ামী লীগকে ফের ক্ষমতায় আনতে সবরকম সহযোগিতা করা।

এই প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাজনীতির অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বুধবার বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের ওপর “চাপ তৈরি হতে পারে,” এটি সত্য।

কিন্তু “কোনও এক দেশের রেজিম চেঞ্জের (শাসনব্যবস্থা না সরকার পরিবর্তন) জন্য মি. ট্রাম্প অন্য কোনও এক দেশের পক্ষে চলে যাবেন, আই ডাউট (এ বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে)।”

সরকার পতনের পর নরেন্দ্র মোদীর “আচার-আচরণে মনে হয়েছে, তিনি এই (সরকার) পরিবর্তন মেনে নিতে পারেনি। তারা এক ধরনের অপেক্ষায় আছে। অস্থিরতা তৈরি করে রেজিম চেঞ্জের জন্য…”

যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় লবি কার্যকর

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে নিয়ে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা করার আরও একটি কারণ, কিছুদিন আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এক্সে (পূর্বের টুইটার) ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া একটি টুইট।

তিনি সেই টুইটে দাবি করেছেন যে বাংলাদেশে হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের ওপর ‘বর্বর নির্যাতন’ চলছে। তার ওই বিবৃতি তখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছিলো।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওই টুইট কিসের ইঙ্গিত? জানতে চাওয়া হয়েছিলো আলী রীয়াজের কাছে।

তিনি বলেন যে এই টুইট থেকে প্রমাণ হয়– “যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ভারত, ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের এক ধরনের লবি আছে এবং সেই লবির যথেষ্ট পরিমাণ শক্তি আছে। মার্কিন প্রশাসন ও রাজনীতিতে সেই লবি’র প্রভাব অনেক বেশি এবং সেগুলোই তারা ব্যবহার করছে।”

ওই টুইট প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও তখন বলেছিলেন, “কিছু লবি গ্রুপ হয়তো বা এটাকে ইনফ্লুয়েন্স করতে চেয়েছে এবং সেই আলোকেই তার এই স্টেটমেন্টটা এসেছে।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবির এই প্রেক্ষিতে বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে “ফিড করা হয়েছে”। অর্থাৎ, তাকে এটি বোঝানো হয়েছে।

তবে এসব ভারতীয় লবি যদি এগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করে, তাহলে “তার কনসিকোয়েন্স (প্রভাব) তো ভারতের জন্য ভালো না,” বলছিলেন অধ্যাপক রীয়াজ।

এছাড়া, দেশি-বিদেশি অনেক বিশ্লেষকই বিবিসি বাংলাকে বলেছেন যে নির্বাচনের আগে আগে “ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও হিন্দু মার্কিন নাগরিকদের ভোট পেতে” ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটটি করেছিলেন।

“রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার দীর্ঘদিনের এবং এটা সব দেশেই হয়” উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, “ওই টুইটের প্রভাবটা ওই মুহূর্তে প্রয়োজন ছিল বলে মি. ট্রাম্প ব্যবহার করেছেন। এটি হলো ধর্মের ব্যবহার।”

যদি “মেক্সিকানদের গালাগাল করে, কৃষ্ণাঙ্গদের ভালো লোক বলে, হিন্দুদের সমর্থন আদায়ের জন্য বাংলাদেশকে একটু হেয় করে ভোট পাওয়া যায়…এর সবই করেছেন উনি।”

কিন্তু এখন ডোনাল্ড ট্রাম্প যেহেতু এখন জিতে গেছেন, তাই ভারত চাইলেও এত সহজে সেই ঘনিষ্ঠতা ব্যবহার করতে পারবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প খুব “ট্রাঞ্জেকশনাল” (দেওয়া-নেওয়ায় বিশ্বাসী) মানুষ। তিনি গিভ অ্যান্ড টেকে বিশ্বাস করেন। তুমি এটা দিলে, আমি এটা দিবো। আমি এটা দিলে তোমারও ওটা দিতে হবে। এই ট্রাঞ্জেকশনাল পলিটিক্স খুবই ডেঞ্জারাস গেম।”

“এখন এই জায়গাতে যাওয়ার জন্য মি. মোদী কতদূর যাবেন, কী করবেন…তার ওপর নির্ভর করছে যে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সাথে বাংলাদেশ প্রসঙ্গটা বিবেচনা করবে কি না…আমি অবাক হব না, মোদী (বন্ধুত্ব) ব্যবহারের চেষ্টা করলে। কিন্তু এটা ট্রাম্পের ব্রডার ফরেন পলিসির সাথে মিলে না। তবে আবার তার (ডোনাল্ড ট্রাম্পের) ট্রাঞ্জেকশনাল আচরণের সাথে মিলে যায়,” বলছিলেন মি. রীয়াজ।

বাংলাদেশে কেমন প্রভাব পড়বে?

অধ্যাপক আলী রীয়াজের মতে, বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে হঠাৎ “নাটকীয় পরিবর্তন” ঘটে যাবে বলে তিনি মনে করছেন না। “কারণ এটিকে বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কোণ থেকে বিবেচনা করতে হবে যে মার্কিন নীতিতে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে কি না।”

তবে তিনি এটি এও বলেছেন, “বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কে একটা বড় ধরনের প্রভাব পড়বেই, এতটা ঘনিষ্ঠতা থাকবে না। উষ্ণতা থাকবে না।”

কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের মতো বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক “হসটাইল বা টেন্সড রিলেশনশিপে” (বৈরি সম্পর্ক) ফিরে যাওয়ার লক্ষণ দেখতে পাচ্ছেন না মি. রীয়াজ।

বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে চীনেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আলী রীয়াজের ভাষায়, “ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে কালো মেঘ চীন।”

“চীনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ভিত্তি কী, সেখানে ভারতকে যুক্তরাষ্ট্র কতটা প্রয়োজন মনে করে, তার জন্য ভারতকে কী কী দিতে হবে এবং ভারত কী কী চাইবে, এখানে এই সমস্ত সমীকরণ আছে।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবির বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেও চীনের প্রসঙ্গটি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

তার মতে– যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে দ্বিপাক্ষিকভাবে দেখে না। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে দেখে ভারতের চোখ দিয়ে এবং ভারতকে দেখে চীনের প্রেক্ষাপটে। চীনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে বলেই ভারত তার মিত্র।

“এশীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের যে কূটনীতি আছে, বাংলাদেশকে তার-ই একটি উপাদান হিসাবে দেখে তারা। সেই উপাদানের প্রেক্ষাপট হলো, এখন সে চীনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ব্যস্ত। ট্রাম্পের আমলে সেটি আরও ধারালো হবে। তা বজায় রাখতে হলে ভারতের সাথে তার কৌশলগত সম্পর্ক বজায় থাকবে।”

অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্র এখানে বাংলাদেশকে নিয়ে খুব বেশ মাথা ঘামাতে চাইবে না। কারণ “তারা এটি খুব ভালো করে জানে যে এখানে যদি স্থিতিশীল অবস্থা থাকে এবং অর্থনীতি ক্রমাগত উন্নতির দিকে যায়, তাহলে আমরা তাদের সাথে অংশীদারিত্ব ভালোভাবে চালিয়ে যেতে পারবো।”

দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। গুঞ্জন রয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিরে আসার কারণে সেই অর্থনৈতিক চাপ আরও বাড়বে। যদিও মি. কবির তা মনে করেন না।

তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের এখনকার বাস্তবতায়, আমাদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য যে সহায়তা করা দরকার, সেখানে কোনও ব্যত্যয় যুক্তরাষ্ট্র করবে না…এখানে যুক্তরাষ্ট্রকে আমাদের দরকার এবং এই সহায়তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিকভাবে বা বহুপাক্ষিকভাবে করতে পারে।”

“এটি যদি না করে তারা, তাহলে অর্থনীতি বসে পড়ে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। তারা বাংলাদেশকে স্থিতিশীল দেখতে চায়। কারণ এটি ছোট এবং ভৌগোলিকভাবে অনেক বড় জনসংখ্যার দেশ।”

বাস্তবতা বা প্রাতিষ্ঠানিক বিবেচনায় এই একটি জায়গায় মার্কিন-বাংলাদেশ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে, তা যে প্রশাসনই ক্ষমতায় আসুক না কেন। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ব্যক্তিগত প্রক্রিয়ায় হয় না। এটি প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আসে, বলছিলেন হুমায়ুন কবির।

“বাংলাদেশ যদি নিজস্ব গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, নিজস্ব অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা, একটি সৃজনশীল অর্থনীতি চালিয়ে যেতে পারে– যা মার্কিনিরা খুব পছন্দ করে; তাহলে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সাথেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবো। ভারতকে আর সেখানে দরকার নাই,” বলছিলেন মি. কবির।

ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতি ও বাংলাদেশের অর্থনীতির বিষয়ে প্রায় একই মতামত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আইনুল ইসলামের।

তার মতে, ভালো কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখতে পারলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি “বাণিজ্য ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে” বাংলাদেশের ওপর প্রভাব বিস্তার করবে না। “পলিটিক্যালটা আমি বলছি না।”

যদিও বাণিজ্য ও অর্থনীতি রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত, যোগ করেন এই অধ্যাপক।

এক্ষেত্রে তিনিও চীন-মার্কিন সম্পর্কের কথা টেনে এনে বলেন, “ট্রেড ওয়্যারের ক্ষেত্রে চীনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের একটা বৈরি মনোভাব সবসময়ই ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আচরণ যেমন, তা থেকে বুঝি যে সেটি অব্যাহত থাকবে। অব্যাহত থাকলেও তার ভালো দিকও আছে।”

“বাংলাদেশ যদি ভালোভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখতে পারে, যেসব জিনিস তারা চীন বা ভারত থেকে নিচ্ছে তারা, সেসব জিনিস ডাইভার্ট করে বাংলাদেশের সঙ্গেও এই বাণিজ্যটা উন্মোচন করতে পারে। বাংলাদেশ যদি চেষ্টা করে, তাহলে সে গার্মেন্টস খাতসহ সেই বাজারগুলো পেতে পারে।”

“সেই হিসাবে এখন পর্যন্ত আমি নেতিবাচক দিক দেখছি না। যেহেতু তার (যুক্তরাষ্ট্র) লক্ষ্য রাশিয়া ও চীন। চীনের সাথে তার বাণিজ্য সম্পর্ক আরও কঠিন হবে, এটা বোঝা যাচ্ছে।”