News update
  • UNGA urges renewed int’l efforts for a resolution of Rohingya crisis      |     
  • First National AI Readiness Assessment Report Published     |     
  • China calls for implementation roadmap for new finance goal     |     
  • New gas reserve found in old well at Sylhet Kailashtila field     |     
  • Revenue earnings shortfall widens in October     |     

চুরির অর্থ ফেরাতে বিদেশি বন্ধুদের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2025-01-23, 7:43am

img_20250123_074021-99bb0e4fb9f973ccfaccf228ad182ca51737596603.jpg




দেশ থেকে চুরি হওয়া হাজার হাজার কোটি টাকা ফিরিয়ে আনতে বিদেশি বন্ধুদের সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ফাঁকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও আলোচনার সময় তিনি এ‌ সহায়তা চান।

জার্মানির ফেডারেল চ্যান্সেলারির প্রধান ও ফেডারেল মিনিস্টার ফর স্পেশাল টাস্কস ওল্ফগ্যাং স্মিড, বেলজিয়ামের রাজা কিং ফিলিপ, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা, সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল ডিপার্টমেন্ট ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স ফেডারেল কাউন্সিলর ইগনাজিও ক্যাসিস, দুবাই কালচার অ্যান্ড আর্টস অথরিটির চেয়ারপারসন শেখ লতিফা বিনতে মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধান উপদেষ্টা। এ ছাড়া ফোরামে দ্বিতীয় দিনে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদি, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সাবেক মার্কিন বিশেষ দূত জন কেরি এবং সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

এ সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশে কীভাবে দিবালোকে ডাকাতি হয়েছে- তা খতিয়ে দেখতে শীর্ষ বিশেষজ্ঞ, থিংক ট্যাংক, সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।

দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে ড. ইউনূস জার্মান মন্ত্রীকে বলেন, ‘আমরা যখন নতুন বাংলাদেশের কথা বলি, তখন পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশের কথাও বলি।’ এ বিষয়ে জার্মানির সরকারের সমর্থন কামনা করেন এবং জার্মান মন্ত্রীর সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্র নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।

জার্মান মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী এপ্রিলে জার্মানির একটি নতুন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নেপালের জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে ভারত, নেপাল ও ভুটানকে সম্পৃক্ত করে বাংলাদেশ একটি অর্থনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চায়। নেপাল বিদ্যুৎ বিক্রি করতে সত্যিই প্রস্তুত ও বাংলাদেশ একটি ভালো বাজার। এটি প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা হ্রাস করতে পারে।’

ড. ইউনূস সুইস ফেডারেল কাউন্সিলর ইগনাজিও ক্যাসিসের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও জলবায়ু অর্থায়নসহ পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে কার্বন নিঃসরণ বন্ধ রাখার প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করতে সুইজারল্যান্ডের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

বাংলাদেশের তরুণদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য সুইজারল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানান ড. ইউনূস। তিনি জানান, ২৭ বছরের কম বয়সী তরুণরা দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক।

এ সময় ড. ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার পরিকল্পনা ও আগামী সাধারণ নির্বাচনের পরিকল্পনা সম্পর্কে বিশ্বনেতাদের অবহিত করেন। এ ছাড়া জার্মান মন্ত্রী ও সুইস কাউন্সিলরের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।

বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ এবং কঙ্গোর রাষ্ট্রপতি ফেলিক্স শিসেকেদির সঙ্গে বৈঠককালে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয় যে কীভাবে বেলজিয়ামের একজন যুবরাজের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ দ্বারা চালু করা একটি ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি আফ্রিকার দেশটিতে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বন সংরক্ষণের আকার প্রসারিত করতে সহায়তা করেছে।

কঙ্গোর সংঘাতপ্রবণ এলাকায় ক্ষুদ্রঋণ প্রবর্তনকারী প্রিন্স ইমানুয়েল ডি মেরোড বলেন, ‘সংঘাতের পর ক্ষুদ্রঋণ সেখানে ২১ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পর কঙ্গোর বনাঞ্চলের আয়তন এখন ব্রিটেনের দ্বিগুণ। ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি এ অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে বড় ভূমিকা পালন করেছে।’

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট এবং জাহাজ চলাচলসহ অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়েও আলোচনা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমরা দ্রুত রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান করতে চাই। কারণ আরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসছে।’

বিশ্বের অন্যতম কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লবের পর দুদেশের মধ্যে তরুণদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, থাই প্রধানমন্ত্রীর বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রা ছিলেন ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক ব্যবসার বড় ভক্ত। দারিদ্র্য, সম্পদের কেন্দ্রীভবন, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে একটি আত্মধ্বংসী সভ্যতা উদ্ধারের লক্ষ্যে থাই প্রধানমন্ত্রীকে ‘থ্রি জিরো’ ধারণা সম্পর্কে অবহিত করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বের ৫৮টি দেশে প্রায় ৫ হাজার ‘থ্রি জিরো’ ক্লাব রয়েছে।’

থাই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছরের এপ্রিলে ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।’ প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে তিনি বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছেন।’

সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজিবিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ, জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

লুৎফে সিদ্দিকী চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধারে সরকারের প্রচেষ্টা সম্পর্কে জার্মান মন্ত্রী ভোল্ফগ্যাং স্মিডকে অবহিত করেন এবং বলেন, ‘সরকার এ বিষয়ে একটি সম্পদ পুনরুদ্ধার কমিটি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধারে সরকার প্রাথমিকভাবে শীর্ষ ২০ অর্থপাচারকারীকে টার্গেট করেছিল।’ আরটিভি