News update
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     
  • Storm Alert Issued for Dhaka and Eight Other Regions     |     
  • 58 killed in deadliest US strike on Yemen     |     
  • BNP Opposes Reforms to Constitution’s Core Principles      |     
  • Time to Repair Bangladesh–Pakistan Ties     |     

যেসব বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব ও বিরোধ বাড়ছে জাতীয় নাগরিক কমিটিতে

বিবিসি বাংলা খবর 2025-02-18, 10:51am

tewrewrw-3e9d6f474ec1a5401dbdde16053f4f2a1739854301.jpg




চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া তরুণদের প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটি। কিন্তু নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে যাত্রা শুরুর আগেই দলটির নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়েছে।

এই বিরোধ এতটাই প্রকাশ্যে এসেছে যে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পোস্ট দিচ্ছেন প্ল্যাটফর্মের শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ।

বিবিসি বাংলা বিষয়টি নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকজন নেতার সাথে কথা বলেছে।

তারা বলেছেন, নতুন এই দলের আহ্বায়ক হিসেবে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে মেনে নিয়েছে সব পক্ষই। তবে বাকি তিনটি পদে কারা আসবেন সেই প্রশ্নেই বিরোধ তৈরি হয়েছে।

এই ইস্যুতে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যে অন্তত চারটি বলয় তৈরি হয়েছে বলে এর নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যাচ্ছে।

শিবির-সংশ্লিষ্টতার কারণে সংগঠনটির সাবেক নেতাদের শীর্ষ চারটি পদ থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন প্ল্যাটফর্মের শিবিরপন্থি একটি গ্রুপের নেতারা।

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি রাফে সালমান রিফাত বিবিসি বাংলাকে বলেন, "অতীতে বাংলাদেশে শিবির ট্যাগিং দেয়া হতো। এখনও দেখছি আমাদের অতীত রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে আমাদেরকে উপরের পদে যেতে বঞ্চিত করা হচ্ছে একই রকম ট্যাগিং করে।"

যে কারণে শিবিরপন্থীদের এই পক্ষটির কেউ কেউ জুলাই আন্দোলনে তাদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিচ্ছেন। এরপরই এই বিষয়টি পুরোপুরি প্রকাশ্যে আসে।

ফলে আত্মপ্রকাশের আগেই কমিটি গঠন নিয়ে বিভক্তি ও বিরোধে অনেকটাই বিব্রত সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বিবিসি বাংলাকে বলেন, "আমি সব পক্ষের সাথে যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করছি। সবার ভেতরই ছাড় দেয়ার মানসিকতা আছে। আশা করি সবার চেষ্টায় সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।"

এমন অবস্থায় আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দেয়ার কথা রয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটির। যদিও এখনও দলের নাম চূড়ান্ত করা হয়নি।

নাগরিক কমিটিতে বিরোধ কী নিয়ে?

গত জুলাই-অগাস্টে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া তরুণদের সমন্বয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে যাত্রা শুরু করে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংগঠিত করে দেশ পুনর্গঠনের উদ্দেশ্য নিয়ে এই প্ল্যাটফর্ম যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে তারা রাজনৈতিক দল আনার ঘোষণাও দেয়।

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের আগে শীর্ষ নেতৃত্বে কারা থাকবেন তা নিয়ে দলটির মধ্যে দফায় দফায় বৈঠকও হয়।

ওইসব বৈঠকে বেশিরভাগ সদস্যই নতুন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে জুলাই আন্দোলনের নেতা ও তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক করার পরামর্শ দেন। এতে সম্মতিও রয়েছে মি. ইসলামের।

আহ্বায়ক পদটি ছাড়াও নতুন রাজনৈতিক দলে আরও তিনটি শীর্ষ পদ রয়েছে। সেই পদগুলোয় কারা আসবেন সেটি নিয়ে গত কয়েকদিন দফায় দফায় আলোচনা হয় জাতীয় নাগরিক কমিটির মধ্যে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাদের একজন শীর্ষ নেতা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, মূলত ওই তিনটি পদের জন্য গত কয়েকদিন ধরে নানা ধরনের দর কষাকষি চলছে।

নাগরিক কমিটির সদস্য সচিবের পদে থাকা আখতার হোসেনকে নতুন দলেও একই পদে রাখার জন্য সদস্যদের একটি পক্ষের চাপ রয়েছে।

একই পদে সংগঠনটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর নামও প্রস্তাব করেছেন কেউ কেউ।

নাহিদ ইসলাম আহ্বায়ক হওয়ার বিষয়টি অনেকটাই নিশ্চিত। যে কারণে বর্তমান আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীকে সদস্য সচিব করতে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে থাকা একজন ছাত্র প্রতিনিধি চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় একজন নেতা।

এর বাইরেও নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ও নাগরিক কমিটির বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জোনায়েদের নামও প্রস্তাব করছেন কেউ কেউ।

নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বিবিসি বাংলাকে বলেন, "শীর্ষ পদে কারা থাকবেন সেটা নিয়ে যে কোনো রাজনৈতিক দলের একটা কনসার্ন থাকে। এই আলোচনার মধ্যে দিয়ে অভ্যন্তরীণ ডেমোক্রেসি কেমন হবে সেটা দেখতে চাই আমরা।"

পদের ইস্যু ছাড়াও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নানা ইস্যুতে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে বলেও কেন্দ্রীয় কমিটির দুই জন নেতা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন।

নতুন দল চালুর আগেই কেন বিরোধের বিষয়গুলো সামনে আসছে–– এমন প্রশ্নও উঠেছে।

জবাবে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বিবিসি বাংলাকে বলেন, "যারা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের নিয়েই দল গঠিত হবে। সেটি আশা করি সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতাও পাবে।"

"এখানে সামান্যতম যে মত-দ্বিমত তৈরি হয়েছে সে বিষয়ে আমাদের মধ্যে আন্তরিকতার সাথে আলোচনা চলছে," যোগ করেন তিনি।

শিবির ইস্যুতে প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব

ছাত্র রাজনীতি করে আসা নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীকে আহ্বায়ক ও আখতার হোসেনকে সদস্য সচিব করে জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়।

নাগরিক কমিটি যখন ধীরে ধীরে তাদের পরিসর বড় করতে শুরু করে তখন তাতে যোগ দেন বাম ঘরানার ছাত্র সংগঠন ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ইউনিয়ন, রাষ্ট্রচিন্তার অনেকে।

পাশাপাশি ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র শক্তি, ইসলামী ছাত্র শিবির ও ছাত্র মজলিসহ কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের অনেকেও যোগ দেন এই প্ল্যাটফর্মে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক সংগঠনের বাইরে থাকা বিভিন্ন অ্যাক্টিভিস্টও এতে যুক্ত হন।

আবার কোনো ধরনের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন না এমন কয়েকজন ব্যক্তিকেও ব্যক্তিগত যোগাযোগের ভিত্তিতে নাগরিক কমিটির সদস্য করা হয় বলে আলোচনা আছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, নতুন রাজনৈতিক দল গঠনকে কেন্দ্র করে এই ছাত্র নেতৃত্ব চারটি বলয়ে বিভক্ত হয়ে গেছে গত কয়েকদিনে।

এর মধ্যে শক্তিশালী দুটি বলয়ের একটিতে রয়েছেন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি থেকে আসা নেতারা। আরেকটিতে রয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির ও বিভিন্ন ইসলামী দলের ছাত্র সংগঠনের সাবেক নেতারা।

নতুন রাজনৈতিক দলের আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখ্য সংগঠক ও মুখপাত্র শীর্ষ এই চারটি পদ নিয়ে আগ্রহ সব গ্রুপের।

এর মধ্যে নাহিদ ইসলামের আহ্বায়ক হওয়ার বিষয়টি অনেকটা চূড়ান্ত হওয়ায় বাকি তিনটি পদের মধ্যে অন্তত একটি পদ পেতে চান কমিটিতে থাকা সাবেক শিবির নেতারা।

কেন্দ্রীয় কমিটি থাকা শিবিরের সাবেক একজন নেতা (নাম প্রকাশ করতে চাননি) বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, তারা এই বিষয়টি যখন নাগরিক কমিটির অভ্যন্তরীণ বৈঠকে তুলেছে তখন 'শিবির' পরিচয়ের কারণে তাদেরকে শীর্ষ চারটি পদে না আনতে প্রভাবশালী একটি পক্ষ আপত্তি তুলেছেন।

মূলত ওই ঘটনার পরই রোববার নাগরিক কমিটির কমিটিতে থাকা সাবেক শিবির নেতাদের কেউ কেউ জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনে ছাত্র শিবিরের ভূমিকার বিষয়গুলো তুলে ধরে ফেসবুকে পোস্ট দেন।

যে কারণে এই ইস্যুটি গত কয়েকদিনে বিষয়টি নাগরিক কমিটির অভ্যন্তরে থাকলেও তা প্রকাশ্যে রূপ নেয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ও নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব রাফে সালমান রিফাত বিবিসি বাংলাকে বলেন, "এখানে একটা অংশ ক্ষমতায়িত হচ্ছে, আরেকটা অংশ বঞ্চিত হচ্ছে। এটা তো ন্যায্যতার প্রশ্ন। ফলে ভেতরের সূক্ষ্ম মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপারগুলো একটা সময় বাইরে চলে আসছে।"

দল শুরুর আগেই দ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় এই বিষয়টি নিয়ে অনেকটা বিব্রত জাতীয় নাগরিক কমিটি।

মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বিবিসি বাংলাকে বলেন, "তারা বিষয়গুলো এমন কোনো পাবলিক ফোরামে নিয়ে যাচ্ছে যেখানে সমাধানের চেয়ে বেশি সমস্যাই তৈরি করছে। তাদের ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না সেটার ব্যাপারেও আমাদের ফোরাম আলাপ করেছে। এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।"

পদত্যাগ করবেন নাহিদ ইসলাম?

চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে দলটির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ হওয়ার কথা। তবে এখন পর্যন্ত দলের নাম ও শীর্ষ নেতৃত্বে কারা থাকছেন সেটি চূড়ান্ত হয়নি।

তবে প্রাথমিকভাবে এটি নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করে দলটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারেন নাহিদ ইসলাম।

নতুন দল গঠনের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব নিয়ে জটিলতা ও প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব তৈরির পর নাহিদ ইসলামের নতুন দলে যোগ দেয়া নিয়ে কোনো শঙ্কা রয়েছে?

এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীর কাছে।

জবাবে মি. পাটোয়ারী বিবিসি বাংলাকে বলেন, "নাহিদ আহ্বায়ক হলে এ বিষয়ে কারো কোনো আপত্তি নাই। সবাই ওই পোস্ট ওনার জন্য ছেড়ে দেবে। তবে তিনি এখনও আমাদের অফিসিয়ালি বিষয়টি কনফার্ম করেননি। শুধু ইচ্ছা পোষণ করেছেন।"

"তবে উনি (নাহিদ) যে আসবেনই সেটা কনফার্ম বলা যায় না। কারণ, এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, দেখা গেলো উনি আসলেন না। আমরা তো কোনো কিছুই নিশ্চিত করে বলতে পারি না," যোগ করেন তিনি।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জানিয়েছে, আগামী ২১ থেকে ২৬শে ফেব্রুয়ারি মধ্যে তাদের নতুন দলের আত্মপ্রকাশ করবে।

আহ্বায়ক মি. পাটোয়ারী বিবিসি বাংলাকে বলেন, "এক্ষেত্রে বিপ্লব, গণতন্ত্র এমন বিষয়গুলোর সমন্বয়ে দল গঠিত হবে। তবে সেই নাম চূড়ান্ত হবে সবার মতামতের ভিত্তিতে।"

বৈষম্যবিরোধীদের নেতৃত্বে নতুন ছাত্র সংগঠন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে বেরিয়ে শিগগিরই নতুন ছাত্র সংগঠন গঠন করার কথা জানিয়েছেন প্ল্যাটফর্মটির বেশ কয়েকজন নেতা।

তারা বলছেন, মূলত জুলাই আন্দোলনে অংশ নেয়া ছাত্রদের নেতৃত্বে গড়ে তোলা হবে এই নতুন ছাত্র সংগঠন।

সোমবার বেলা সাড়ে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তারা।

তারা বলেন, 'স্টুডেন্ট ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট' অর্থাৎ, 'সবার আগে ছাত্র, সবার আগে বাংলাদেশ' এই নীতির ওপর ভিত্তি করে এই সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার জানান, এই সংগঠনটি কোনো মূল দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে না। এটি স্বতন্ত্র ছাত্র সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।

নিজেদের কর্মসূচি অনুযায়ী সংগঠন পরিচালনা করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি চর্চা করবে না তারা। দলের নেতৃত্ব গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে। যারা রাজনীতি করতে ইচ্ছুক তারা এই ছাত্র সংগঠনে যোগ দেবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, "আন্দোলন চলার সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বাম ছাত্র সংগঠনসহ একাধিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসে যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু আন্দোলন পরবর্তী সময়ে সবাই তাদের নিজস্ব সংগঠনে ফিরে গেছেন।"

"এর বাইরে একটা বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী এসেছিলেন, যারা কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। সেই দিকটা বিবেচনা করেই আমরা একটা ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভাজন হয়নি বা এখানে অনুমতি নেওয়ার তেমন কিছু নেই।"

কবে নাগাদ সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করবে বা সংগঠনের নাম কী হবে সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কিছু বলা হয়নি।

এক্ষেত্রে জনমত জরিপ ও কর্মসূচির ভিত্তিতে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের নাম প্রকাশ করা হবে বলে জানান তারা।

বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ দুই নেতা আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল জাতীয় নাগরিক কমিটির নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন বলে নিশ্চিত করেছে নাগরিক কমিটির শীর্ষ এক নেতা।

ওই নেতা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, মূলত নতুন দলে যোগ দেয়ার কারণেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব থেকে সরে যাচ্ছেন তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নতুন ছাত্র সংগঠনের অন্যতম নেতা আব্দুল কাদের বিবিসি বাংলাকে বলেন, উনারা যেহেতু আজ ছিলেন না তাইলে হয়তো অন্য কোথাও যেতে পারেন।

আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তাদের নতুন ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বের বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে মনে করেন মি. কাদের।