News update
  • UNGA urges renewed int’l efforts for a resolution of Rohingya crisis      |     
  • First National AI Readiness Assessment Report Published     |     
  • China calls for implementation roadmap for new finance goal     |     
  • New gas reserve found in old well at Sylhet Kailashtila field     |     
  • Revenue earnings shortfall widens in October     |     

৩ জুলাই: কোটাবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল শিক্ষাঙ্গন, সড়ক-রেলপথ অবরোধ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2025-07-03, 7:22am

img_20250703_072047-9c339d6a0309db373240307ffe7314321751505762.jpg




সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের চলমান আন্দোলন ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে। 

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে চলমান এই আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৩ জুলাই উত্তাল হয়ে উঠে দেশের শিক্ষাঙ্গন। এ দিন ময়মনসিংহে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়:

২০২৪ সালের ৩ জুলাই ছিল বুধবার। এইদিন আন্দোলনকারীরা রাজধানী ঢাকার শাহবাগ মোড় দেড় ঘণ্টার মতো অবরোধ করে রাখেন। দাবি আদায়ে বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এই কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত রাজধানীর সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে বের হওয়া মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে দোয়েল চত্বর ও সুপ্রিম কোর্টের সামনে দিয়ে শাহবাগে এসে জমায়েত হয় বিকেল পৌনে চারটার দিকে। এরপর তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন। আন্দোলনকারীরা বিকেল ৫টা ১২ মিনিট পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা শাহবাগ মোড়ের সড়কে অবস্থান করেন।

শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তারা সড়কে অবস্থান নিয়ে দাবির পক্ষে ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আঠারোর পরিপত্র-পুনর্বহাল করতে হবে’, ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক-মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘ছাত্রসমাজ গড়বে দেশ, মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’ ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘হাইকোর্ট না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’ ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। স্লোগানের ফাঁকে প্রতিবাদী গানও পরিবেশন করা হয়, পাশাপাশি চলে বক্তব্যও। 

শাহবাগ মোড়ের সড়কে অবস্থান নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামীকাল (৪ জুলাই) কোটা বাতিলের পরিপত্র বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের যে শুনানি রয়েছে, তার রায় যেন শিক্ষার্থীদের পক্ষে আসে। তারা আগামীকাল বেলা ১১টায় আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে জমায়েত হবেন বলেও ঘোষণা দেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়:

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে ২০২৪ সালের ৩ জুলাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার মোড় সড়ক অবরোধ করেন। সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। সেখানে তারা এক ঘণ্টা অবস্থান শেষে বিকাল সাড়ে চারটার দিকে তাঁতীবাজার মোড় ত্যাগ করে ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়:

এইদিন দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আগারগাঁও-খামারবাড়ি সড়ক অবরোধ করেন। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে দুপুর ১২টায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। 

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার দেশ আমার মা, বৈষম্য মানি না’, ‘কোটা বৈষম্য দূর কর, নইলে বুকে গুলি কর’, ‘সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ইত্যাদি ¯স্লোগান দেন। পরে তারা আগারগাঁও-খামারবাড়ি সড়ক অবরোধ করেন। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়:

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল, মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দাবিতে ৩ জুলাই ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বেলা সোয়া তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর বিকেল পাঁচটার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন আন্দোলনকারীরা।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়:

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল জব্বার মোড়ে রেললাইন অবরোধ করেন। ওই সময় ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেন আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন তারা। প্রায় ১ ঘণ্টা পর দুপুর ২টা ২০ মিনিটে তারা রেললাইন অবরোধ তুলে নেন। পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে শিক্ষার্থীরা দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে সমবেত হন এবং সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়:

এইদিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাফনের কাপড় পরে বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন। তাদের কর্মসূচির কারণে প্রায় ২ঘন্টা মহাসড়কের দুই পাশে কয়েকশ’ যানবাহন আটকা পড়ে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়:

৩ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করেন। বেলা পৌনে একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকায় অবরোধ শুরু হয়। চলে বেলা দেড়টা পর্যন্ত। চাকরিতে মেধাভিত্তিক নিয়োগ বহাল রাখার দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়’-এর ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

এছাড়াও সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে থেকে কোটাবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার গোল চত্বরে এসে সমবেশে মিলিত হয়। 

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়: 

৩ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পূর্বের পরিপত্র বহাল রেখে কমিশন গঠন করে কোটা সংস্কারের দাবিতে পদযাত্রা ও সমাবেশ করেন। বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে একটি মিছিল বের করা হয় এবং মিছিলটি ঢাকা-কুড়িগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন মডার্ন মোড় প্রদক্ষিণ করে ২ নম্বর গেটে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।সূত্র: বাসস