News update
  • Hasina Found Guilty of Crimes Against Humanity     |     
  • UN Security Council to Vote on Gaza Stabilisation Force     |     
  • COP30 Enters Final Stretch with Urgent Calls for Action     |     
  • Dhaka’s air turns ‘moderate’ Tuesday morning     |     
  • Russian Navy ship arrives in Ctg for goodwill visit     |     

সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ৩ শত বছরের পুরেনো জমিদার বাড়ি

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2022-05-08, 1:13pm




সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের ভৈরব মজুমদারের তিন শত বছরের পুরনো জমিদার বাড়ি। 
জানা গেছে, ১৭৪৮ সালে বরদৈন মুন্সি বাড়িতে তৎকালীন এ অঞ্চলের বিখ্যাত জমিদার ভৈরব মজুমদারের নয়নাভিরাম ও নান্দনিক বাড়িটি নির্মাণ করেন। সংস্কারের অভাবে সৌন্দর্যমন্ডিত এ বাড়িটি তার জৌলুশ হারাচ্ছে। সু-প্রাচীন বাড়িটির দরজা জানালাগুলো ভেঙ্গে গেলেও দ্বিতল এ নিদর্শনটি কালের রাজস্বাক্ষী হয়ে এখনো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে।
কুমিল্লা শহরের বাসিন্দা ভাস্কর মজুমদার বাসসকে বলেন, ১৬০০ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশ থেকে ভৈরব মজুমদারের পূর্ব-পুরুষরা এ  অঞ্চলে আসেন। মোগল সাম্রাজ্যের উত্তর প্রদেশের প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর একটি ইউনিটের দায়িত্বে ছিলেন ভৈরব মজুমদারের পিতা রঘু নারায়ণ মজুমদার। পরে এ  অঞ্চলের একটি বিশাল মৌজার অধিকৃত হয়ে যান তিনি। তারই পুত্র ছিলেন ভৈরব মজুমদার। পাশের আরেকটি অঞ্চলের ভাটির বাঘখ্যাত বর্তমান বৃহত্তর (নোয়াখালীর) শমসের গাজী যখন ত্রিপুরার মহারাজার খাজনা দেয়া বন্ধ করে দেন এবং ১৭৩৯ ও ১৭৪০ সালে মহারাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হন। তখন তার সাথে একমত পোষণ করেন এ  অঞ্চলের বরদৈনের ভৈরব মজুমদার। পরবর্তীতে মহারাজাকে যুদ্ধে পরাজিত করে ত্রিপুরার শাসন কর্তা হয়ে যান শমসের গাজী। বৃটিশ রাজা পলাশীর যুদ্ধে জয়ী হলে ত্রিপুরার পরাজিত কৃষ্ণ মানিক্য বৃটিশদের সহযোগিতায় শমসের গাজীকে আক্রমণ করে পরাজিত করেন। বন্দি হন ভৈরব মজুমদার।
সুদর্শন ভৈরব মজুমদারের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে রানী রাজাকে অনুরোধ করেন তাকে মুক্ত করে দিতে। রানীর কথা রাখতে গিয়ে রাজা কৌশলে খাবারের সাথে মিশিয়ে ভৈরব মজুমদারের শরীরে বিষ প্রয়োগ করে মুক্ত করে দেন। ত্রিপুরার উদয়পুর থেকে ঘোড়ায় চড়ে বরদৈন আসলে তার শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সাথে সাথে ঘোড়া থেকে পড়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। মৃত্যুর পর একই স্থানে তাকে সমাহিত ও তার সম্মান রক্ষার্থে তার বংশধররা তৎকালীন সময়ে (১৭৬০ সালে) ২টি সু-উচ্চ মট নির্মাণ করেন। যা আজও বিরাজমান রয়েছে। তখন থেকেই এলাকাটি মটের তল নামে পরিচিত।
জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত ভৈরব মজুমদারের বংশধররা এ অঞ্চলের প্রজাদের কল্যাণে অনেক অবদান রেখেছেন। ভৈরব মজুমদারের চতুর্থ প্রজন্ম অনাথ বন্ধু মজুমদার কুমিল্লা শহরে এসে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করেন। বর্তমানে অনাথ বন্ধু মজুমদারের এক পুত্র শক্তি ভূষন মজুমদার বসবাস করেন কুমিল্লা নগরীর পুরাতন চৌধুরী পাড়ায়। তার একমাত্র পুত্র ভাস্কর মজুমদার প্রতিবছর পূর্ব-পুরুষদের স্মৃতিধন্য বরদৈন মুন্সিবাড়িতে কিছুটা সময় কাটিয়ে আসেন। ইতিহাসের পুথি-কাব্যে ভৈরব মজুমদারকে নিয়ে লেখা না হলেও লোকমুখে পালা গানে তিনি বেঁচে আছেন দীর্ঘদিন। যেগুলো সংরক্ষণ করা এখন সময়ের দাবি।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মনজুরুল হক বাসসকে বলেন, প্রাচীন নিদর্শনটি কি অবস্থায় আছে, আমি সরেজমিনে যাবো এবং নিদর্শনটি সংরক্ষণে পদক্ষেপ নেয়া হবে। তথ্য সূত্র বাসস।