News update
  • 70% of envir journalists report attacks, threats, pressure: UN     |     
  • Dhaka air ‘unhealthy’ Friday morning     |     
  • Arakan Army frees 12 Bangladeshi fishermen     |     
  • A soothing respite: Rain in Dhaka after prolonged heatwave     |     
  • Palestine economy in ruins, as Gaza war sets dev back 2 decades     |     

বিশ্বে গম, চালের দাম চড়াই থাকছে, নতুন ধাক্কায় বাড়তেও পারে : বিশ্বব্যাংকের শংকা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খাদ্য 2023-03-17, 9:08am

image-83031-1678980071-6d2a31778da8428e25f17caf86ed24c81679022506.jpg




বিশ্বব্যাংক বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বব্যাপী খাদ্যদ্রব্যের দামে যে ঊর্ধ্বগতির সূচনা হয়েছিল, এক বছরে তা কিছুটা কমে এলেও, দাম বাড়তির দিকে থাকা এবং নতুন কোনো ধাক্কায় তা আবারো  বেড়ে যাওয়ার মতো শঙকার কারন রয়ে গেছে। 

বিশ্বব্যাংক আরো বলেছে, ‘রুশ বাহিনী ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগর বন্দর অবরোধ করে বিশ্বের বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশগুলোর অন্যতম ইউক্রেনের গমের চালান বন্ধ করে দেয়। তখন খাদ্যের দাম বেড়ে যায়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অনেক দেশ অভ্যন্তরীণ খাদ্য সরবরাহ অব্যহত রাখার জন্য খাদ্য বা সার রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এসব পদক্ষেপে হিতে বিপরীত হয় এবং কেবল খাদ্যের দামই বাড়িয়ে দেয়। খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্বল্প সময়ের জন্য খাদ্য সংকটের হুমকি দেখা দেয়।’ 

বিশ্বব্যাংক বলছে, এখন অবশ্য সেই পদক্ষেপের অনেকগুলোই আর কার্যকর নেই। এই উচ্চমূল্য মূলত বিস্তৃত বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির প্রতিফলন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভুট্টার গড় মূল্য ২০২১ সালের জানুয়ারির তুলনায় ৩১ শতাংশ বেশি ছিল এবং গমের মূল্য ছিল ১৪ শতাংশ বেশি।  চালের মূল্য ছিল দুই শতাংশ কম। তারপরও, অবশিষ্ট বিধিনিষেধগুলোও সংকট সৃষ্টি করছে। গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরু হওয়ার এক বছর পর- কোটা, লাইসেন্স এবং সরাসরি নিষেধাজ্ঞাসহ ১০১টি রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের মতে, এগুলো ডব্লিউটিও নীতির পরিপন্থী। আর এর সবগুলোর মেয়াদও অস্থায়ী নয়। অর্থাৎ এগুলো সাময়িক নিষেধাজ্ঞা নয়। এই নিষেধাজ্ঞাগুলি ২০২২ সালের খাদ্য বাণিজ্যের ১১ শতাংশেরও বেশির ওপর প্রভাব ফেলে। শুধুমাত্র রপ্তানি নিষেধাজ্ঞাগুলোই বিশ্বব্যাপী খাদ্য বাণিজ্যে ৩.৮ শতাংশ পর্যন্ত প্রভাব ফেলে।

বিশ্বব্যাংক  জানায়, এই যুদ্ধের ফলে খাদ্যমূল্য ৫২.৭ শতাংশ বেড়ে যায় এবং ২০২২ সালের প্রথমার্ধে রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা এই মূল্যবৃদ্ধির এক চতুর্থাংশের জন্য দায়ী। দেশটি বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ গমের সরবরাহ করে এবং অন্যান্য রপ্তানিকারকরা বৈশ্বিক গমের ৩৪.৫ শতাংশ চালান দেয়। বৈশ্বিক গম রপ্তানির ৫.২ শতাংশ চালানের ওপর নিষেধাজ্ঞা সার্বিক গমের ১৬.৭ শতাংশ  মূল্যবৃদ্ধির তিন চতুর্থাংশেরও বেশির জন্য দায়ী।

তবে গত বছরের মাঝামাঝি থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক বলছে, ওই বছরের ২২ জুলাই ইউক্রেন, রাশিয়া, তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যে একটি চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেনের তিনটি বন্দর থেকে খাদ্য রপ্তানি পুনরায় শুরু হয়। চুক্তিটির আওতায় রাশিয়া ও অন্য প্রধান তিন গম উৎপাদনকারী দেশ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে এবং এর পাশাপাশি গ্রীষ্ম মৌসুমে শস্যের আবাদ ভাল হওয়ায় বিশ্ব বাজারে খাদ্যের মূল্য হ্রাসে সহায়ক হয়। ওই সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অস্ট্রেলিয়া রপ্তানি বাড়ায়- যার ফলে কানাডার রপ্তানি হ্রাস পায়।

মার্কিন কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ৩০ জুন ২০২২ পর্যন্ত ১২ মাসে বিশ্ব খাদ্য বাণিজ্য ৫ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে এই সময়ে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের চাল রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বের অপর এই প্রধান খাদ্যটির রপ্তানি ৪.৫ শতাংশ বেড়েছে। অধিকন্তু ভারতও চাল রপ্তানি বাড়িয়ে দেয়। 

বিশ্বব্যাংক আশঙ্কা করছে যে, এরপর যদি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন করে কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়, তবে বড় ধরনের মূল্যবৃদ্ধি হয়ে নিত্যপণ্যে বাজার অস্থিতিশীল হতে পারে। রুশ-উইক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভুত বিশ্ব বাজার পরিস্থিতিতে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত ক্ষুদ রপ্তানি নিষিদ্ধ করে- যা মূলত পশুখাদ্য। এছাড়াও ধান উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গড়ের চেয়ে কম হওয়ায় ভারত অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ বাড়াতে ও স্থানীয় খাদ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে অন্যান্য জাতের চাল রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়ে দেয়। 

বিশ্বব্যাংক জানায়, ‘ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈশ্বিক চালের বাজারে ৫ শতাংশ চালান হ্রাস পায় এবং বিশ্ববাজারে চালের মূল্য ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়া আশঙ্কা দেখা দেয়। আর অন্যান্য রপ্তানিকারকরা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে চালের দাম আরো ২.৩ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। আর এরপর ভারত চাল রপ্তানির ওপর আবারো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে বিশ্ববাজারে     চালের দাম ৪.৩ শতাংশ থেকে ১২.১ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। আর থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামও যদি এই নিষেধাজ্ঞায় যোগ দেয়- তবে বিশ্ববাজারে চালের দাম ২০ শতাংশ বেড়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে।’ বিশ্বব্যাংক বলছে যে,

অনুরূপভাবে ভুট্টা অথবা গম রপ্তানিকারক শীর্ষ তিন দেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে বিশ্ববাজারে ভুট্টার দাম ৪৪ শতাংশ ও গমের দাম ৮ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। এভাবে খাদ্যমূল্যে আরো বৃদ্ধি পেলে, নিম্ন ও নিম্নমধ্য আয়ের দেশগুলো সংকটে পড়বে- যারা রপ্তানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। তথ্য সূত্র বাসস।