News update
  • UN Calls for Calm in Bangladesh After Protest Leader’s Killing     |     
  • DMP issues 7 traffic directives for Osman Hadi’s Janaza     |     
  • Vested quarter fuelling chaos to impose new fascism: Fakhrul     |     
  • Hadi’s namaz-e-janaza at 2:30pm Saturday     |     
  • Jashore’s Gadkhali blooms with hope; flowers may fetch Tk4 bn      |     

দ্রব্যমূল্যে স্বস্তি ফেরানো সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খাদ্য 2024-01-20, 4:47pm

oiewrew9rqo-9168194798349e0b180ff5d2c5e2cdea1705747752.jpeg




দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে সরকার গঠন করা হয়েছে এক সপ্তাহ আগে। এ সময়ে মানুষের মধ্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ে স্বস্তি ফেরানোটা আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর বলেন, অভ্যন্তরীণ সংকট কাটাতে সর্বপ্রথম উদ্যোগ নিতে হবে। দেশে অস্থিরতা থাকলে বাইরের সংকট কাটবে না। আর বাইরের সংকট না কাটলে ডলার সংকট কাটবে না। ডলার সংকট না কাটলে দেশি, বিদেশি কেউ বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন না। বিনিয়োগ না হলে অর্থনৈতিক সংকট থেকে যাবে। ফলে আমাদের নিজেদের আগে ঠিক হতে হবে। সরকারের উচিত হবে এই ধরনের অস্থিরতা নিরসনে মনোযোগ দেওয়া।

নির্বাচনের পর ভারত, চীন ও রাশিয়া সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি দাবি করে বিবৃতি দিলেও নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। বুধবার মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্কন্নোয়নের কথা বলেছেন। পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতও একই ধরনের আগ্রহ দেখিয়েছেন। এর ফলে কূটনৈতিক সংকট কিছুটা হলেও কমে এসেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্কন্নোয়নের চেষ্টা করতে হবে বলে মনে করেন তারা। অর্থনৈতিক সংকটকে এত বড় করে দেখার কারণ জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, গত দুই বছর ধরে আমাদের অর্থনীতিটা ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। মূল্যস্ফীতি কোনো ভাবেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না। ডলার সংকট কিছুতেই কাটছে না। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য সবখানেই এর প্রভাব পড়ছে। আর অর্থনীতি ভালো না থাকলে কোনো কিছুই ভালো থাকবে না। এইসব কারণে অর্থনীতিকেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

দ্রব্যমূল্য নিয়ে দেশের মানুষের অসন্তুষ্টি অনেক দিনের। যত দিন যাচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চান সাধারণ মানুষ। আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে। নতুন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল হক টিটু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন। আসন্ন রোজায় তিনি এর প্রভাব দেখতে চেয়েছেন। নির্বাচনের পরপরই চালের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় বড় মিল মালিক ও কর্পোরেট কোম্পানিকে দায়ী করে আমদানির সুযোগ চেয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

তাদের বক্তব্য শুনে নতুন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, সরকার বড় কোম্পানিগুলোকে সুবিধা দিয়েছিল কম দামে চাল প্রাপ্তির আশায়। কিন্তু এর সুফল মেলেনি। তারা সত্যিকারের ব্যবসায়িক আচরণ না করলে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুর সরকারি কৃষি পণ্যের পাইকারি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাকক্ষে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর এই মত বিনিময়ের আয়োজন করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার বলেন, দ্রব্যমূল্যটাই মানুষের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি সামনে যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন, সেগুলো অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে হবে। বিশেষ করে যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলো যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সেই উদ্যোগ নিতে হবে নতুন সরকারকে।

আমি মনে করি, আমাদের ব্যাংকিং সেক্টর নিয়ে অনেক কথা আছে। এই সেক্টরকে সঠিক পথে আনতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। এটা যদি করা যায়, তাহলে একটা গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে। যদিও কাজটা কঠিন।

পাশাপাশি টাকা পাচার হয়েছে বলে আলোচনা হয়। এখানেও মনোযোগ দিতে হবে। অর্থনীতিবিদরা অনেকদিন ধরেই বলছেন, ব্যাংকিং সেক্টর ধ্বংসের পথে। টাকা পাচারের কারণে এখন অনেকগুলো ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে। তারল্য সংকটে ভুগছে অনেক ব্যাংক। বিশেষ করে সরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে। এটা নিয়ন্ত্রণে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ অনেকের।

এ প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, অর্থনীতি নিয়ে মূলত উদ্বেগের প্রধান কারণ ছিল আমাদের রিজার্ভ এমনভাবে কমছিল, তাতে শঙ্কা জাগাটা স্বাভাবিক ছিল। আগে অর্থনীতিবিদদের অনেকেই বলেছিলেন, নির্বাচন পর্যন্ত রিজার্ভ ১৫ বিলিয়ন ডলারের উপরে থাকলে সংকট উত্তরণ সম্ভব হবে। রিজার্ভ তো এখন সেই পর্যায়েই আছে, তাহলে সমস্যা কী?

জবাবে তিনি বলেন, এটা ভালো ইন্ডিকেটর। মূল্যস্ফীতি কমাতে হলে আমাদের রিজার্ভ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি ডলার সংকট না কাটলে জিনিসপত্রের দামও কমবে না। তবে এই কাটাতে কারো উপর নির্ভরশীল হওয়া ঠিক হবে না। নিজেদের উপর আস্থা রাখতে হবে। নিজেদেরই সংস্কারে উদ্যোগ নিতে হবে।

বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, গার্মেন্টস সেক্টরে মাঝে মধ্যে যে অস্থিরতা দেখা যায়, সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখাও সরকারের আরেকটা চ্যালেঞ্জ হবে। তবে এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো রাজনীতি। রাজনীতি ঠিক হলে সবকিছুই ঠিক হয়ে যাবে। সেটা অর্থনীতি বলেন আর শ্রমনীতি বলেন। বিদেশিরা কী বলছে, সেটা নয়, আমাদের নিজেদের স্বার্থেই রাজনীতিটা ঠিক করা প্রয়োজন। তথ্য সূত্র ডয়েচে ভেলে