দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ক্রেতা সংকটে নওগাঁয় বন্ধ আম বেচাকেনা। তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় বাগানে দ্রুত পেকে যাচ্ছে আম। আর সরবরাহ করতে না পারায় পাকা আম বাগানেই নষ্ট হচ্ছে। বাগান মালিকরা বলছেন, এ অবস্থায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি গুনতে হচ্ছে তাদের।
মৌসুমের শেষ সময়, তারপরও বিস্তৃত বাগানে বিপুল আমের সমারোহ। হলুদ আভায় দুতি ছড়ানো এসব আম জানান দিচ্ছে গাছ থেকে দ্রুত নামানোর। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে নওগাঁর বরেন্দ্র এলাকার বাগান থেকে শুরু হয় আম নামানো। তবে বাণিজ্যিক জাতের আম্রপালি, বারি-৪, কাটিমন ও গৌড়মতি জাতের আমের জমজমাট কারবার শুরু হয় জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। চলমান এ কারবারে হঠাৎ কারফিউ ঘোষণায় বন্ধ হয়ে গেছে আম বেচাকেনা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে ঝুলছে আম। চলমান কারফিউ আর পরিবহন জটিলতায় এসব আম বাজারজাত করতে পারছে না বাগান মালিকরা। ফলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির কথা বলছেন বাগান মালিকরা।
বাগান মালিকরা জানান, যেখানে ৫ হাজার টাকায় মণপ্রতি বিক্রি হত, এখন সেটা ২ থেকে আড়াই হাজার টাকায় নেমে এসেছে। এদিকে গাছ থেকে নামানো আম সব পেকে গেছে এবং পচতে শুরু করেছে। অন্যদিকে, গাছের আমও আর রাখা যাচ্ছে না। ফলে ভয়াবহ লোকসানের মুখে পড়তে হবে। যতদ্রুত সম্ভব চলমান সংকট শেষ হলে বাগান মালিকদের উপকার হয়। নাহয় এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব নয়।
এদিকে আড়তেও বিপুল আম স্তুপাকারে পড়ে রয়েছে। গত ৪ দিনে এসব আড়তে ক্রেতা শূন্য থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে অনেক আম। ৫ হাজার টাকা প্রতিমণ বিক্রি করা আমের দর নেমে এসেছে অর্ধেকেরও নিচে।
আম ব্যবসায়ী মো. শহিদুজ্জামান বলেন, ‘দেশে যেহেতু কারফিউ চলছে, ফলে ক্রেতা নেই, কর্মচারীও নেই। এখন আম হচ্ছে কাঁচাপণ্য, চলমান সংকটে তো আর আম পাকা আটকানো যাবে না। এখন বাধ্য হয়ে অর্ধেকেরও কম দামে আম বিক্রি করতে হচ্ছে। তাও বাজারে আমের যা সরবরাহ সে পরিমাণে ক্রেতা নেই। সব ধরনের যোগাযোগই তো বন্ধ হয়ে আছে। অনলাইনও বন্ধ, ফলে পার্টির সঙ্গে যোগাযোগও করা যাচ্ছে না। এবার আর লাভের মুখ দেখতে পাবো না।’
আরেক আম ব্যবসায়ী মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘ একই তো সিজন তার উপর আবহাওয়ার কারণে আম দ্রুত পেকে যাচ্ছে। ফলে চাষিরা গাছে আম ধরে রাখতে পারছে না। এতে আড়াতে সরবরাহ বেড়েই চলছে আর দাম কমে যাচ্ছে। আবার আম পচে যাওয়ার লোকসানও আছে। সবমিলে পরিস্থিতি ভালো নয়। আমরা দ্রুত এ সংকটের সমাধান চাই।’
চলতি মৌসুমে জেলায় ৩২ হাজার হেক্টর জমির বাগান থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আম পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি বিভাগ। আর উৎপাদিত আমের বাজার ধরা হয়েছিল প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। সময় সংবাদ