
শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে সঙ্গেই ঘরে ঘরে সর্দি, কাশি আর জ্বরের প্রকোপ বেড়ে যায়। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা জরুরি হয়ে পড়ে।
চিকিৎসকদের মতে, এই মৌসুমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এমন খাবার তালিকায় রাখা উচিত। আর শীতকালীন সবজিগুলোর মধ্যে গাজর অন্যতম একটি উপকরণ যা শরীরকে ভেতর থেকে সুরক্ষিত রাখে।
মূলত বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন-এ, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও খনিজ উপাদানে ভরপুর গাজর সর্দি-জ্বর ও বিভিন্ন ভাইরাসজনিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরকে প্রাকৃতিক শক্তি জোগায়।
গাজরকে বিটা-ক্যারোটিনের অন্যতম উৎস ধরা হয় যা শরীরে প্রবেশ করে ভিটামিন-এ-তে রূপান্তরিত হয়। এটি কেবল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই বাড়ায় না, বরং চোখের জ্যোতি বজায় রাখতে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধে জাদুর মতো কাজ করে। বিশেষ করে বয়স জনিত দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার সমস্যা রোধে গাজর অত্যন্ত কার্যকর।
এছাড়া গাজরে থাকা পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং এর ফাইবার উপাদানগুলো রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে হার্টের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, গাজরের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট তথা কেরাটিনয়েডস ক্যানসার কোষ তৈরির প্রবণতা কমিয়ে শরীরকে প্রাকৃতিক ভাবে সুরক্ষিত রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক সবজি সীমাবদ্ধ থাকলেও গাজর বেশ নিরাপদ। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়িয়ে দেয় না। পাশাপাশি যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য গাজর একটি আদর্শ খাবার। কারণ এতে ক্যালোরি খুব কম এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা পেকটিন থাকে যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরপুর রাখার অনুভূতি দেয় এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়।
স্যুপ, স্ট্যু কিংবা সাধারণ রান্না—যেকোনোভাবেই গাজর গ্রহণ করা হোক না কেন, এটি শরীরের ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ হিসেবে কাজ করে। তাই সুস্থ থাকতে এবং শীতকালীন সতেজতা বজায় রাখতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় নিয়মিত গাজর রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।