পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বক্তৃতা বা মন্তব্য প্রচার নিষিদ্ধ করেছে দেশটির মিডিয়া নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ পিইএমআরএ।
এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, মি. খান রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন এবং ঘৃণাসূচক বক্তব্য ছড়াচ্ছেন।
ইমরান খান দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আদালতে তোলার অভিযোগ আনার পর এ পদক্ষেপের কথা জানা গেল।
এর আগে আজ ইমরান খানকে গ্রেফতার করার এক প্রয়াস চালিয়ে ব্যর্থ হয় দেশটির পুলিশ।
. খানকে গ্রেফতারের চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে লাহোর শহরে তার বাড়ির সামনে সমবেত হন তার শত শত সমর্থক।
রোববার লাহোরের জামান পার্ক এলাকায় তার বাসভবনের বাইরে পুলিশের একটি দল অপেক্ষা করছিল তাকে গ্রেফতার করার জন্য। ইসলামবাদ পুলিশের এক টুইট বার্তায় জানানো হয়, মি. খানকে গ্রেফতার করার জন্য লাহোর পুলিশের সহায়তার একটি অপারেশন চলছে।
সেসময় ইমরান খান তার বাসভবনে দলের কর্মীদের সামনে বক্তব্য রাখেন, এবং তার ডাকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেবার জন্য সমর্থকদের ধন্যবাদ দেন। পুলিশ জানায়, মি. খান গ্রেফতার এড়ানোর চেষ্টা করছেন।
তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশ ইমরান খানকে গ্রেফতার না করেই চলে যায়।
গত সপ্তাহে আদালত একটি মামলায় ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। ওই মামলাটিতে অভিযোগে বলা হয়, মি. খান প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় বিদেশের নেতাদের কাছ থেকে যেসব উপহার পেয়েছিলেন সেগুলোর কথা তিনি সঠিকভাবে জানাননি।
ইমরান খান মামলাটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বর্ণনা করেছেন।
ইমরান খানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফ হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে তাদের নেতাকে গ্রেফতার করা হলে পাকিস্তানের রাজনৈতিক সংকট পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি হবে।
গত বছর পার্লামেন্টের এক ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হবার পর থেকে ইমরান খানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়। এগুলোর মধ্যে তার রাজনৈতিক দলের জন্য অবৈধ অর্থ সংগ্রহ এবং রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার উস্কানি দেবার অভিযোগও রয়েছে।
গত বছর একটি বিক্ষোভ সমাবেশে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ইমরান খান আহত হন। তার আইনজীবীরা এর আগে স্বাস্থ্যগত ও নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে মি. খানের সশরীরে আদালতে হাজির হওয়া ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলেন, তবে আদালতে এসব আবেদন খারিজ হয়ে যায়।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন গত বছর ইমরান খানকে সরকারি পদে থাকার অযোগ্য ঘোষণা করে।
তার বিরুদ্ধে বিদেশি নেতাদের কাছ থেকে পাওয়া উপহারসামগ্রী এবং সেগুলো বিক্রি করে পাওয়া অর্থের কথা সঠিকভাবে না জানানোর অভিযোগ আনা হয়।
এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মি. খান আদালতে মামলা করেছেন।
ইমরান খানের সমর্থকরা এর আগেও তাকে গ্রেফতার করা হলে দেশব্যাপি বিক্ষোভ শুরু করার কথা বলেছেন। তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা।