News update
  • 3 killed, 10 injured in Pabna Bus-truck collision     |     
  • UN Chief Appalled as Gaza Crisis Deepens, Aid Blocked     |     
  • Dhaka’s air quality ‘moderate’ also on Friday morning     |     
  • Russia 1st country to recognize Taliban rule in Afghanistan     |     
  • New report seeks reforms for free, pluralistic media in BD     |     

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে যত পথ পাড়ি দিয়েছেন শাহবাজ শরিফ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক গনতন্ত্র 2024-02-15, 8:11am

f3581890-cb3b-11ee-a734-b5c4e6ed1081-a8ce268d5a0542727383c5a5911d67701707963837.jpg




আবারও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শাহবাজ শরিফ

পাকিস্তানে নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলীম লীগ-পিএমএল-এন ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি মিলে নতুন সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। পিপিপি’র জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শাহবাজ শরিফ।

এর আগেও দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

২০২২ সালে অনাস্থা প্রস্তাবে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর বিরোধী দলীয় নেতা থেকে সংসদ নেতা বনে যান মি. শরিফ।

ওই সময়ও তাকে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে একজন নবাগত হিসেবে বিবেচনা করতেন অনেকে।

পাঞ্জাব প্রদেশের স্থানীয় রাজনীতির একজন নেতা হিসেবেই তার পরিচয় বেশি উজ্জ্বল ছিল।

তিন মেয়াদে ১৩ বছর ধরে প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মি. শরিফ।

ওই তের বছরে অনেকবারই আবেগপ্রবণ আচরণ ও ভিন্ন ধারার কাজের কারণে তিনি মিডিয়া ও বিরোধীদের আলোচনার কেন্দ্রে এসেছেন।

কখনো তাকে দেখা গেছে নৌকায় চড়ে বন্যা উপদ্রুত অঞ্চলে যেতে। কখনোবা তার সরকার সরকারি প্রতিষ্ঠানেই চালিয়েছে 'আকস্মিক অভিযান'।

এসব ঘটনায় বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া হতো - 'এ সবই লোক দেখানো কাজ, নইলে মিডিয়া কেন তার সঙ্গে থাকবে'?

যাইহোক সরকারি কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের যারা তাকে চেনেন, তারা মনে করেন তিনি একজন 'পরিশ্রমী নেতা'।

পাঞ্জাবে বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প তিনি নিয়েছেন।

তিনি কীভাবে বিখ্যাত হয়ে উঠলেন? মুখ্যমন্ত্রী থেকে কী করে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার পর্যন্ত পৌঁছালেন?

পরিবারিক ব্যবসা থেকে রাজনীতির হাল ধরেন যেভাবে

লেখাপড়া শেষে পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের এই ছোট ভাই।

লাহোরের একজন সিনিয়র সাংবাদিক সালমান গনি বহুদিন ধরে শরিফ পরিবার ও তাদের দল নিয়ে রিপোর্টিং করছেন।

বিবিসিকে তিনি বলেন, ১৯৮৫ সালে লাহোর চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট হন শাহবাজ শরিফ।

উনিশশো আটাশি সালে নির্বাচনে জিতে তিনি প্রথমবারের মত পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির একজন সদস্য হন। উনিশশো নব্বই ও তিরানব্বই সালেও তিনি পুনঃনির্বাচিত হন।

তিরানব্বই সালেই প্রাদেশিক পরিষদের বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত হন মি. শরিফ।

পরের সাধারণ নির্বাচনে পিএমএল-এন জেতার পর ১৯৯৭ সালে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হন শাহবাজ শরিফ।

ওই সময়ের রাজনীতির সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল একজন সাংবাদিক ও বিশ্লেষক মুজিব-উর-রহমান শামি। বিবিসিকে তিনি বলেন, "তিনি (শাহবাজ শরিফ) পাঞ্জাবে একটি ভাল টিম গঠন করেছিলেন"।

মি. শরিফ বেশ কিছু প্রকল্প নিয়ে কাজ করছিলেন পাঞ্জাবে, কিন্তু তার সরকারের অকাল-পতন ঘটে যখন ১৯৯৯ সালে সামরিক আইন জারি করে জেনারেল পারভেজ মুশাররফ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও শাহবাজ শরিফকে গ্রেপ্তার করেন।

নির্বাসন ও বারবার হাতছাড়া হওয়া মুখ্যমন্ত্রীত্ব

মি. শরিফ বেশ কিছু প্রকল্প নিয়ে কাজ করছিলেন পাঞ্জাবে।

কিন্তু, তার সরকারের অকাল-পতন ঘটে যখন ১৯৯৯ সালে সামরিক আইন জারি করে জেনারেল পারভেজ মুশাররফ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও শাহবাজ শরিফকে গ্রেপ্তার করেন।

দুই হাজার সালে শরিফ পরিবার সেনাশাসক পারভেজ মুশাররফের সাথে এক চুক্তি করার অভিযোগে ফেঁসে যায়।

এর ফলে এক পর্যায়ে শাহবাজ শরিফ দেশ ছেড়ে সৌদি আরবে পাড়ি জমাতে বাধ্য হন।

শরিফ পরিবার অবশ্য বরাবরই এই চুক্তির অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।

নওয়াজের শূন্যস্থান পূরণ

রাজনীতিতে সবসময়ই বড় ভাই নওয়াজ শরিফের ছায়াতলে দ্বিতীয় সারির ভূমিকায় থেকেছেন শাহবাজ শরিফ।

বড় ভাই যখনই প্রধানমন্ত্রী হন শাহবাজ শরিফ হন প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী।

মুজিব-উর-রহমান শামির বর্ণনায়, শাহবাজ শরিফ গণমানুষের নেতা ছিলেন না, বরং তিনি একজন ভাল প্রশাসক ছিলেন, যিনি সামরিক প্রতিষ্ঠানের সাথে অপ্রয়োজনীয় দ্বন্দ্বে জড়ানোর পক্ষপাতী নন।

যাইহোক, পরিস্থিতি বদলে যায় ২০১৭ সালে, যখন পানামা পেপার্স ফাঁসের জের ধরে সুপ্রিম কোর্ট নওয়াজ শরিফকে আজীবনের জন্য নির্বাচনে প্রার্থী হবার অযোগ্য ঘোষণা করে।

এরপর শাহবাজ শরিফ দলীয় প্রধানের পদ পান ঠিকই, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হন শহিদ খাকান আব্বাসি।

ওদিকে কিছুদিন জেল খাটার পর আদালতের অনুমতি নিয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডন চলে যান নওয়াজ শরিফ।

এই শূন্যস্থান পূরণের জন্য ২০১৮ সালের নির্বাচনে পাঞ্জাব থেকে বেরিয়ে এসে কেন্দ্রের রাজনীতিতে যোগ দিতে মনস্থ করেন শাহবাজ শরিফ।

তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পাওয়া দলের প্রধান হিসেবে বিরোধী দলের নেতা হন।

২০২২ সালের এপ্রিলে কয়েক সপ্তাহের রাজনৈতিক অস্থিরতা আর অনিশ্চয়তার পর পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে যান ইমরান খান।

জাতীয় পরিষদের অধিবেশন তিন চার দফা মুলতুবি হবার পর মধ্যরাতের পর অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হয়।

৩৪২জন সদস্যের মধ্যে ১৭৪ জন সদস্য তার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে ভোট দেন।

পাকিস্তানের ইতিহাসে এই প্রথম একজন প্রধানমন্ত্রীকে অনাস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে ক্ষমতা ছাড়তে হয়।

মি. শরিফ প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য তার প্রার্থিতা জমা দেন। অন্য বৃহৎ রাজনৈতিক দল পিপলস পার্টির বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারিও তার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছিলেন।

সেই দফায় প্রথমবারের মত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেন শাহবাজ শরিফ।

বাংলাদেশ-মিয়ানমারের জলসীমায় নিয়ে ফেরত দেয়া হবে বার্মিজ সৈন্যদের

চীনের সাথে সৗেহার্দ্য

দুই হাজার তের সালের ভোটে জিতে টানা দ্বিতীয়বারের মত পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন শাহবাজ শরিফ।

তিনি চীনের সাহায্যে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বসানোর প্রকল্পে হাত দেন।

সাংবাদিক সালমান গণি মনে করেন, পাকিস্তানের বিদ্যুৎ ঘাটতি দূর করার কৃতিত্ব ছিল শাহবাজ শরিফের এবং ২০১৩ সালের নওয়াজ শরিফের দলের জয়ের পেছনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

মি. গনি বলেন, চাইনিজদের কাজে মুগ্ধ হয়েছিলেন শাহবাজ শরিফ। একারণেই তিনি বহুবার চীন সফর করেছেন।

"তিনি চীনাদের পছন্দ করতেন। তার গতিতে মুগ্ধ ছিল চীনারা এবং তারা এর প্রশংসা করতো"।

উন্নয়ন প্রচেষ্টা

স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতের কিছু প্রকল্প নিয়েও কাজ করেছেন শাহবাজ শরিফ, কিন্তু তার সময়ের দুটো বড় প্রকল্প নিয়ে মারাত্মক সমালোচনা হয়েছিল।

তার একটি মেট্রোবাস প্রকল্প। লাহোরে যানজট কমাতে মেট্রো বাস চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। এর সমালোচনা করেন ইমরান খানসহ বিরোধী রাজনীতিকরা। কিন্তু প্রকল্পটি সফল হয়।

এর পর মুলতান, রাওয়ালপিন্ডি ও ইসলামাবাদেও একই রকম প্রকল্পের উদ্যোগ নেয়া হয়।

এমনকি ইমরান খানের প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়াতেও এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।

অন্য প্রকল্পটি অরেঞ্জ লাইন। পাকিস্তানের প্রথম মেট্রোরেল সেবাও চালু হয় তার হাত ধরে এবং ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।  বিবিসি বাংলা।