এক দশক ধরে ভারতীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আসছে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি। দলটি সেই অবস্থান ধরে রাখবে বলেই মনে করছিলেন অনেক। বুথফেরত জরিপও বলছিল সেই কথা। কিন্তু মঙ্গলবার (৪ জুন) ভোট গণনা শুরুর পর বড় ধাক্কা খেয়েছে গেরুয়া শিবির।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, এখন পর্যন্ত পাওয়া ফলাফল অনুযায়ী, বিজেপি এককভাবে সরকার গঠন করতে পারছে না বলেই মনে হচ্ছে। সরকার গঠনের জন্য দলটির নির্ভর করতে হতে পারে মিত্রদের ওপর।
কিন্তু কীভাবে এই ভরাডুবি? এর জন্য ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, বিতর্কিত সেনা নিয়োগ সংস্কার এবং মোদির আক্রমণাত্মক ও বিভাজনমূলক প্রচারণাকে দায়ী করেছেন বিশ্লেষকরা।
বিবিসি বলছে, এই উদ্বেগগুলো বিশ্বাসযোগ্য প্রাক-নির্বাচন জরিপেও স্পষ্ট হয়েছে।
এদিকে নির্বাচনী প্রচারণায় মোদির স্লোগান ছিল ‘আব কি বার, ৪০০ পার’। কিন্তু এবার সেই আশার গুড়েবালি। ভোট গণনা শুরু হওয়ার পরই পাল্টে যেতে শুরু করে সব সমীকরণ। সময় যত গড়াচ্ছে, এনডিএ ও কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের মধ্যে ব্যবধান তত কমছে।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ জোট পেয়েছিল ৩৫৩টি আসন। আর বিজেপি এককভাবে জিতেছিল ৩০৩টি। এবার নির্বাচনী প্রচারণায় মোদি বলেছিলেন, বিজেপি এককভাবে ৩৭০টি আসনে জিতবে।
কিন্তু আনুষ্ঠানিক ফলাফলের প্রবণতায় দেখা যাচ্ছে, তাতে বিজেপির সম্মান টেকানোই দায় হয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে। গণনা শুরু হওয়ার পর আট ঘণ্টারও বেশি সময় পার হলেও ফলের মূল প্রবণতা খুব বেশি পরিবর্তিত হয়নি।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ৪০০ দূরে থাক, এবার বিজেপির ২৭২ আসনের প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতেও হিমশিম খেতে হবে। এখন পর্যন্ত প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, দলটি এককভাবে ২৪১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। যা দল ও প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম।
বিজেপি ২০১৯ সালে এককভাবে ৩০৩টি এবং ২০১৪ সালে ২৮২টি আসন জিতেছিল। আর বিরোধী কংগ্রেস ২০১৯ সালে ৫২টি এবং ২০১৪ সালে ৪৪টি আসন জিতেছিল। এবার জয়ের ধারায় ফিরেছে কংগ্রেস। এখন পর্যন্ত ৯৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে দলটি। জোটগতভাবে এগিয়ে আছে ২৩১টিতে।
শেষ পর্যন্ত একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে জোট সরকারের পথেই হাটতে হবে। সেক্ষেত্রে নির্ভর করতে হবে অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলোর ওপর। জোট সরকারে পার্লামেন্টে কোনো সিদ্ধান্তই আর নিজের মতো করে নিতে পারবে না বিজেপি।