Kalapara Upazila
পটুয়াখালী: আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অন্তরালে ৪২ বিত্তবানের নামে ২৫ কোটি টাকা মূল্যের ৭২ একর খাস জমি বরাদ্দ দেয়ার ঘটনায় জড়িত সেই সার্ভেয়ারকে গ্রেফতার করেছে কলাপাড়া থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকার রুপাতলী আবাসিক এলাকা থেকে অভিযুক্ত সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির (৪৩) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। আজ শুক্রবার দুপুরে তাকে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
কলাপাড়া থানার ওসি মো: জসিম বলেন, 'ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শক্রমে মামলাটি তদন্তের জন্য আসামিকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। কেননা মামলায় অজ্ঞতনামা আসামি রয়েছে।' তবে আজ শুক্রবার আদালতে আসামীর ফরওয়ার্ডিং এর সাথে রিমান্ড আবেদন দাখিল করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জিআরও মোঃ শহীদ।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভূমি অফিস সার্ভেয়ার মো: হুমায়ুন কবিরকে প্রধান আসামী করে অজ্ঞাতনামা আসামীদের নামে দন্ডবিধির ৪০৮/৪০৯/৪৬৭/৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় কলাপাড়া থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। মামলায়
অজ্ঞাতনামা আসামীদের সংখ্যা স্পষ্ট করা হয়নি। তবে ৪২ বিত্তবান বন্দোবস্ত গ্রহীতার নাম, ঠিকানা, বন্দোবস্ত কেস ও দলিল নম্বর, জমির তফসিল উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার বাদি হয়েছেন ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক। যার স্বাক্ষরে বন্দোবস্ত রেজিষ্ট্রী হয়েছে। সেই স্বাক্ষর জাল না সঠিক সেটি নিশ্চিত হওয়ার আগেই সেই ইউএনও বাদী হওয়ায় মামলার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতে আলোচিত ৭২ একর খাস জমি বন্দোবস্ত কান্ডে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত ও অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিতে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে, এমন মন্তব্য করেছেন পটুয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর।
এদিকে গ্রেফতারকৃত সার্ভেয়ার মোঃ হুমায়ুন কবির আদালত চত্বরে গণমাধ্যমকে বলেছেন, ঊর্ধ্বতনদের কেবল আদেশ পালন করেছেন তিনি। কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি নথিপত্রে ইউএনও'র স্বাক্ষর ছিল।'
পটুয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বাদল বলেন, ’জেলা প্রশাসনের গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হতেই বন্দোবস্ত কান্ডের এ ঘটনায় ইউএনও’র বাদী হয়ে মামলা দায়ের করায় এর স্বচ্ছতা নিয়ে তো প্রশ্ন উঠতেই পারে। কেননা তিঁনি এখনও এ ঘটনার সাথে জড়িত নন বলে তদন্তে নিশ্চিত হয়নি, তদন্তে তাঁর নামও তো আসতে পারে। তাই তদন্ত শেষ না হতেই সে বাদী হয়ে মামলা করলো। এতে অনেকটা মনে হয় তাঁর অপরাধটাকে সে ধামাচাপা দিতে চায়।’ - গোফরান পলাশ