ACC logo
পটুয়াখালী: প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অন্তরালে ৪২ বিত্তবানের নামে ২৫ কোটি টাকা মূল্যের ৭২ একর খাস জমি বন্দোবস্ত কান্ডে দায়েরকৃত ফৌজদারী অপরাধের বিষয়ে শ্রীঘ্রই তদন্ত শুরু করছে দুদক। এ সংক্রান্ত অনুমোদন পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পটুয়াখালী দুদক উপ-পরিচালকের কার্যালয় থেকে দুদক প্রধান কার্যালয়ে প্রেরন করা হয়েছে। অনুমোদন প্রাপ্তির পর ৪ আগষ্ট কলাপাড়া থানায় ইউএনও’র বাদী হয়ে দায়েরকৃত মামলাটি ফাইনাল রিপোর্টে নথিজাত করে এ ঘটনায় দুদকের একজন সহকারী পরিচালক বাদী হয়ে দুদক কার্যালয়ে মামলা দায়ের করবেন। এরপর নতুন করে মামলার তদন্ত করবে দুদক। তদন্তে এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার প্রমান মিললে রাঘব, বোয়াল কেউই ছাড় পাবেনা বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র।
এর আগে কলাপাড়া থানা পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত একমাত্র আসামী ভূমি অফিস সার্ভেয়ার মো: হুমায়ুন কবিরকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরন করে। পরবর্তীতে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনার মামলাটি
তদন্তের জন্য পটুয়াখালী দুদক উপ-পরিচালকের কার্যালয়কে লিখিত ভাবে বিষয়টি অবগত করে থানা পুলিশ। এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দুদক, পটুয়াখালী কার্যালয়ে প্রেরন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলাপাড়া থানার ওসি মো: জসিম।
এদিকে জেলা প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি এ ঘটনায় আজ ১১ আগষ্ট বৃহস্পতিবারও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেননি। এছাড়া ২৫ কোটি টাকা মূল্যের সরকারী জমি ভুয়া বন্দোবস্ত কান্ডে ইউএনও’র স্বাক্ষর সঠিক ছিল, না জাল করা হয়েছে তা নিশ্চিত হতে এখনও ইউএনও’র স্বাক্ষর যুক্ত কাগজপত্র সিআইডি বিশেষজ্ঞের মতামতের জন্য প্রেরন করা হয়নি। এতে থলের কালো বেড়াল কার পকেটে ঘাপটি মেরে আছে তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি। কিন্তু এর আগে বেশ কিছু প্রিন্ট, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল করে ভূমি অফিস সার্ভেয়ার এ অপরাধ সংঘটন করেছে বলে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। যাতে ঘটনার নেপথ্যের ঘটনা জানতে অনুসন্ধান থেমে থাকে।
তদন্ত কমিটির সদস্য কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ’আমি পুলিশ সুপার মহোদয়ের প্রতিনিধি হিসেবে কমিটির সাথে আছি। তদন্ত কার্যক্রম প্রায় শেষ, প্রতিবেদন দাখিলের আগে আমরা কমিটির সদস্যরা আর একবার বসবো।’
জেলা রেজিষ্ট্রার ও তদন্ত কমিটির অপর সদস্য মো: কামাল হোসেন বলেন, ’বন্দোবস্ত দলিলে ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল না সঠিক ছিল, এটি সিআইডি’র এক্সপার্ট ওপিনিয়ন ছাড়া বলা যাবে না। তদন্ত প্রতিবেদন কবে নাগাদ জমা দেয়া হবে এটি তদন্ত কমিটির প্রধান বলতে পারেবেন বলে জানান তিঁিন।’
তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: ওবায়দুর রহমান’র কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য জানতে তাঁর সরকারী নম্বরে ফোন দেয়ার পরও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
দুদুক, পটুয়াখালী সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো: মামুনুর রশিদ বলেন, ’৭২ একর খাস জমি বন্দোবস্ত কান্ডের মামলার কাগজপত্র আমরা থানা পুলিশের কাছ থেকে পেয়েছি। এ সংক্রান্ত অনুমোদন পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পটুয়াখালী দুদক উপ-পরিচালকের কার্যালয় থেকে দুদক প্রধান কার্যালয়ে প্রেরন করা হয়েছে। অনুমোদন প্রাপ্তির পর কলাপাড়া থানায় ইউএনও’র ৪ আগষ্ট বাদী হয়ে দায়েরকৃত মামলাটি ফাইনাল রিপোর্টে নথিজাত করে এ ঘটনায় দুদকের একজন সহকারী পরিচালক বাদী হয়ে দুদক কার্যালয়ে মামলা দায়ের করবেন। এরপর নতুন করে মামলার তদন্ত করবে দুদক।’
দুদক উপ-পরিচালক আরও বলেন,’ভুয়া বন্দোবস্ত বাতিল করলেই তো সব শেষ হয়ে যায় না, অপরাধ তো সংঘটিত হয়েছে। তাই আমরা ইউএনও কার্যালয়কে ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত অরিজিনাল দলিলাদি প্রস্তুত রাখার জন্য বলেছি। প্রধান
কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা তদন্ত শুরু করবো। ইউএনও’র স্বাক্ষর যাচাইয়ে সিআইডি বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হবে। এছাড়া সাব-রেজিষ্ট্রার কিসের ভিত্তিতে দুই শতাংশের বেশী পরিমান জমি রেজিষ্ট্রী করলেন সেটিও আমরা খতিয়ে দেখবো।’ - গোফরান পলাশ