News update
  • ‘With Science, We Can Feed the World of 9.7 Billion by 2050′     |     
  • WHO warns of severe disruptions to health services for funding cuts     |     
  • ICJ hears Sudan’s case accusing UAE of ‘complicity in genocide’     |     
  • Bombardment, deprivation and displacement continue in Gaza     |     
  • Aged and Alone: The hidden pains in old age homes     |     

সংখ্যালঘু নিপীড়নের মিথ্যা প্রেপাগাণ্ডা নিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিবাদ দাবী

সাম্য ও ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ চান আলেম সমাজ

ধর্মবিশ্বাস 2024-08-12, 12:13am

mufti-foyzul-karim-addressiong-an-opinion-exchange-meeting-of-the-ulema-mashaekh-aimma-parishad-at-reporters-unity-on-sunday-885ed87cb04472f5475b1e4ba6f4b2e11723399991.jpg

Mufti Foyzul Karim addressiong an opinion exchange meeting of the Ulema Mashaekh Aimma Parishad at Reporters Unity on Sunday.



দীর্ঘ দেড় দশক ক্ষমতায় থাকার পর স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতন হলেও পরাজিত শক্তি এখনো দেশে শান্তি বিনষ্ট করতে মরিয়া হয়ে আছে। এমতাবস্থায় দেশের সকল নাগরিককে স্ব-স্ব জায়গায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আলেমসমাজ অনুরোধ জানান।

আজ বুধবার দুপুর ১২টায় ‘ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সাগর-রুনি হলে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নূরুল হুদা ফয়েজীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুফতী রেজাউল করীম আবরারের সঞ্চালনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : কেমন বাংলাদেশ চাই” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়েখে চরমোনাই বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার এরশাদ এর পতন ও সর্বশেষ ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার স্বৈরাচার বিরোধি গণঅভ্যুত্থানÑ সর্বক্ষেত্রেই গণমানুষের ক্ষোভ, অপ্রাপ্তি ও জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে মূল আকুতি ছিলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের। তাই দেশের আইন, বিচার, সংসদ, প্রশাসন, অর্থ, শিক্ষা, শিল্প ও দেশপরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা সাম্য ও ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ চাই।

উপস্থিত আলেমগণ বলেন, এদেশ হাজার বছর ধরে ধর্মীয় স্প্রীতির দেশ। এখানে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট হলেও আমরা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, উপজাতি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিসহ সকলে মিলেমিশে থাকি। এমনকি জাতীয় সংকটে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের পাশে দাঁড়ানোর যে নজীর আমরা স্থাপন করেছি, তা পৃথিবীতে খুব বিরল। কিন্তু অতীতে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জাঁতাকলে পিষ্ঠ হয়েছে আমাদের সেই ঐতিহ্য। আজও দেশকে অস্থিতিশীল করতে ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোকেই হাতিয়ার বানানো হচ্ছে। এমাবস্থায় সবাইকে সতর্ক অবস্থানে থাকার এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান করেন তারা। কবি মূসা আল-হাফিজ বলেন, দেশে সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো হচ্ছে, এমতাবস্থায় আমরা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রাষ্ট্রীয়ভাবে এর প্রতিবাদ দাবী করছি।

মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী (খেলাফত মজলিস), মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী, ড. মাও. ওবায়দুল কাদের নদভী, মাওলানা ফখরুদ্দীন (মজলিসুল মুফাসসিরীন) মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন (বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস) মাওলানা আবদুল্লাহ আল মাসউদ, মাওলানা আবদুল আখির, সৈয়দ মো. হাসান আজহারী, কবি মূসা আল-হাফিজ, সাংবাদিক জোবায়ের হোসেন, লেখক রুহুল আমীন সা‘দী, মাওলানা মোস্তফা রাহিম আজহারী, মাওলানা আবদুল হাই মো. সাইফুল্লাহ, মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দীক কুয়াকাটা, মাওলানা লুৎফুর রহমান ফরায়েজী।

আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রফেসর ড. মোখতার হোসেন, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুফতি মোহাম্মদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতী হেমায়েতুল্লাহ কাসেমী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতী কেফায়েতুল্লাহ কাশফী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শামসুদ্দোহা আশরাফী, হাফেজ মাওলানা কামাল উদ্দিন সিরাজ, মুফতি রফিকুন্নাবী হক্কানী, মুফতী আব্দুল আজিজ কাসেমী, মাওলানা শাহজাহান আল হাবিবী, মাওলানা নুরুল করীম আকরাম, মুফতী জোবায়ের আব্দুল্লাহ কাসেমী।

ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থান পরবর্তী গঠিত অন্তর্বর্থীকালীন সরকারের নিকট দেশের সর্বঘরানার ওলামায়ে কিরামের পক্ষে জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ কর্তৃক প্রস্তাবনা

মৌলিক প্রস্তাবনা

০১. অগ্রাধিকারভিত্তিক কর্মপন্থা নির্ধারণ

দীর্ঘ স্বৈরশাসন পরবর্তী নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি এদেশের মানুষেল প্রত্যার শেষ নেই। এমতাবস্থায় দেশে পূর্ণ শৃঙ্খলা ফেরাতে ও সামগ্রিক সংস্কারের স্বার্থে প্রায়োরিটি বেইজড কর্মপন্থা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।

০২. বাংলাদেশের মানুষের মনস্তত্ব পাঠ পূর্বক সিদ্ধান্তগ্রহণ

এদেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠি স্ব-স্ব ধর্মের ব্যাপারে অনেকটা রক্ষণশীল ও পরম ধর্মপ্রাণ। অতীতের সরকারগুলো সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বর্জনে উক্ত বিষয়কে পাশ কাটিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে একচেটিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ফলশ্রুতিতে জনমনে ক্ষোভ তো দেখা দিয়েছেই, সেইসাথে সরকারগুলো পর্যায়ক্রমে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তারাও মানুষের ভাষা বুঝতে সক্ষম হয়নি, মানুষও তাদের ভাষা বোঝেনি। তাই দেশের মানুষের চিন্তা ও মননের সঙ্গে সঙ্গতির্পণূ সিদ্ধান্তই দেশকে স্থিতিশীল একটা পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারে।

০৩. আদ-দীনু ওয়াল-মুলকু তাওয়ামান

হাদীসে এসেছে, দীন এবং রাষ্ট্র পরস্পর এক অপরের সাথে সম্পৃক্ত। তাই কোন মুসলমান ধর্মহীন চরিত্রে রাষ্ট্রকে মেনে নিতে কষ্ট হয়। যেহেতু এদেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠি মুসলমান এবং ধর্মে-কর্মে ক্ষেত্রবিশেষ গাফিল হলেও ধর্মীয় আবেগ খুব প্রকট, তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেয়ে উভয়ের সমান্তরাল প্রবাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমেই কেবল ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ ও রাষ্ট্রগঠন সম্ভব।

০৪. সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার এরশাদ এর পতন ও সর্বশেষ ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার স্বৈরাচার বিরোধি গণঅভ্যুত্থানÑ সর্বক্ষেত্রেই গণমানুষের মূল ক্ষোভ অপ্রাপ্তি ও প্রত্যাশার জায়গা ছিলো উক্ত শ্লোগাণকে ঘিরেই। তাই দেশের আইন, বিচার, প্রশাসন, অর্থ, শিক্ষা, শিল্প ও দেশপরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিশ্চিত হোক সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার।

০৫. কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন

সর্বোপরি এমন একটি রাষ্ট্রের প্রত্যাশা, যেখানে মানুষ মানবিক মূল্যবোধ, পারস্পরিক বোঝাপড়া, সত্যবাদিতা ও দায়িত্ববোধে পরিপূর্ণ হবে। অপরকে ঠকিয়ে জেতার মানসিকতা, আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়া, ভয় দেখিয়ে বধ করে রাখা, লোভে পড়া সততা বিকিয়ে দেয়ার মতো কোন পরিবেশ গড়ে উঠবে না। সকলে মিলে উন্নতি ও কল্যাণের দিকে অগসর হওয়া যাবে। - - জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ