News update
  • Dilapidated bridge forces Lalmonirhat residents to risk life daily     |     
  • High-level consultation to shape BD climate finance strategy     |     
  • Economic stability under threat without bank resolution regime     |     
  • WHO Says Traditional Medicine Use Surges Worldwide     |     
  • UN Report Calls for New Thinking to Secure a Sustainable Future     |     

আর্চবিশপ বিজয় এন ডি ক্রুজের বড়দিনের বাণী

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ধর্মবিশ্বাস 2024-12-24, 9:25am

img_20241224_092238-9127287308360d40a786e855ab5c0f8a1735010727.jpg




বিশ্বের খ্রিস্টান সম্প্রদায় ২৫ ডিসেম্বর মহাসমারোহে ক্রিসমাস অর্থাৎ বড়দিন উদযাপন করেন। আজ থেকে প্রায় দুহাজার চব্বিশ বছর পূর্বে ঈশ্বর তনয় আশ্চর্যজনকভাবে ঐশী শক্তিতে মেরীর কোলে বেথলেমের জীর্ণ গোসালায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ইহুদি জাতি যুগ যুগ ধরে মুক্তিদাতা মশিহর জন্য অপেক্ষা করছিল। নবীগণ তার আসার কথা ঘোষণা করেছেন, তাদেরকে প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। হৃদয়-মনপরিবর্তন করে সৎ, পবিত্র, ন্যায়-নিষ্ঠ জীবন এবং অন্যের কল্যাণ ও দরিদ্রদের প্রতি দয়া করার আহ্বান জানিয়েছেন।

সময় পূর্ণ হলে মানবজাতির প্রতীক্ষিত মুক্তিদাতা প্রভু যিশু ত্রিশ বছর বয়সে প্রকাশ্যে তিনি প্রচারকার্য শুরু করেন। বাণীপ্রচারের সঙ্গে সঙ্গেই চারিদিকে তার সুনাম ছড়িয়ে পরে। অনেক লোক তার অমৃতময় বাণী শোনার জন্য তার চার পাশে ভিড় জমায়। শ্রোতাদের তিনি মনপরিবর্তনের আহ্বান জানান। পাপ, অসত্য, অন্যায় থেকে মন ফিরিয়ে সত্য, সুন্দর ও ভাল কাজে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান। তিনি শিক্ষা দেন আমরা যাতে পাপকে ঘৃণা করি, পাপীকে নয়। তিনি অবহেলিত, নির্যাতিত নিপীড়িতদের পক্ষ অবলম্বন করেন।

তিনি বলতেন যে, অসুস্থদেরই ডাক্তার প্রয়োজন সুস্থদের জন্য নয়। পৃথিবীতে থাকাকালীন অবস্থাতে তিনি অনেক আশ্চর্য কাজ করেছেন। অন্ধকে দিয়েছেন দৃষ্টি, মানুষকে দিয়েছেন শোনার ক্ষমতা, প্রতিবন্ধীকে দিয়েছেন হাঁটার শক্তি, এমন কি মৃতকে দিয়েছেন জীবন। তিনি একে অন্যকে নিঃস্বার্থভাবে ভালবাসতে শিক্ষা দেন। শুধু পাড়া-প্রতিবেশী ও বন্ধুদেরই নয় এমনকি শক্রদেরকে তিনি ভালবাসতে বলেন। তিনি একে অপরকে ক্ষমা করতে শিক্ষা দেন। তিনি বলেছেন যে, তিনি সেবা পেতে নয় সেবা করতে এ জগতে এসেছেন। অন্যকে সেবা করার মধ্য দিয়েই আমরা মুক্তি এবং পরিত্রাণ লাভ করি।

প্রতিবেশী ভাই-বোনদের, বিশেষ করে ক্ষুধার্তকে অন্ন দান, তৃষ্ণার্তকে জল, বস্ত্রহীনকে বস্ত্র, অসুস্থের সেবা করি, অসহায় ও গরীব দুঃখী মানুষদের যখন আমরা সেবা করি তখন তিনিই সেই সেবা গ্রহণ করেন। তার কাছে ব্যক্তির স্থান ছিল অনেক উর্ধ্বে কারণ ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে সে সৃষ্ট। তাই তো তিনি ধর্মের উর্ধ্বে তাকে স্থান দিয়েছেন। ধর্মের জন্য মানুষ নয় বরং মানুষের কল্যাণ ও মঙ্গলের জন্য ধর্ম।

এ বছর অক্টোবর মাসে বিশ্ব কাথলিক চার্চের অনেক বিশপগণ পোপ ফ্রান্সিসের উপস্থিতিতে ভাটিকানে এক মাসের সিনডের দ্বিতীয় এবং শেষ সম্মেলন করেছেন। এখানে বিশ্ব কাথলিক চার্চের ভূমিকা সম্পর্কে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, কাথলিক চার্চ হলো মানব মুক্তি ও বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর, ভাষাভাষীর মানুষের মধ্যে বিশ্বে একতার দৃশ্যমান চিহ্ন। চার্চ সমস্ত মানবজাতির মধ্যে একটা সেতুবন্ধন স্থাপন করতে আগ্রহী। ভ্রাতৃত্ব, ভালবাসা ও একতার সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে গভীর ইচ্ছা প্রকাশ করে। এই একতা স্থাপনের জন্য একসঙ্গে সবাইকে চলতে হবে। একে অপরের কথা শুনতে হবে। নারীদের মর্যাদার কথা বলা হয়েছে, প্রতিটি নর-নারী ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে সৃষ্ট। তাই নারী-পুরুষের মধ্যে সম-মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নারী-পুরুষের মধ্যে সকল বৈষম্য দূর করতে হবে।

এ বছর আমরা যখন বড়দিন উদ্যাপন করছি তখন যিশুর জন্মস্থান ও পুণ্যভূমিতে চলছে যুদ্ধ, ইসরায়েল এবং প্যালেস্টানের মধ্যে। ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সঙ্গে আমেরিকাসহ ইউরোপের অনেক দেশ জড়িত হয়ে পড়েছে সেই যুদ্ধে। শান্তিরাজ প্রভু যিশু খ্রিস্টের আগমনে এ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছেন। ছাত্র-জনতা আমাদের নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে। আমরা প্রার্থনা ও প্রত্যাশা করি এই দেশটি হয়ে উঠুক গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ ও উন্নত একটা দেশ। প্রভু যিশুর আগমনে আপনাদের জীবন ভরে উঠুক নির্মল আনন্দ, অনাবিল সুখ ও শান্তি। আমি সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, শুভ বড়দিন। আরটিভি