
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর জন্য ‘আচরণ বিধিমালা, ২০২৫’ এর গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবারের নির্বাচনে পোস্টার ব্যবহার, ড্রোন ওড়ানো ও বিদেশে প্রচারণাসহ বেশ কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এবারই প্রথমবারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের ক্ষেত্রে কিছু বিধান যুক্ত করেছে ইসি।
সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতে ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫’ জারি করে নির্বাচন কমিশন।
ইসি জানায়, আচরণবিধি লঙ্ঘনে প্রার্থীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা এবং দলের ক্ষেত্রে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশন প্রার্থিতাও বাতিল করতে পারবে।
নির্বাচনি আচরণবিধিতে যা আছে—
নির্বাচন-পূর্ব সময়ে অনুসরণীয় বিধানাবলি
নির্বাচন-পূর্ব সময়ে প্রত্যেক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তৎকর্তৃক মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্যকোনো ব্যক্তি বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তিকে এই বিধিমালার বিধি ৪ হইতে বিধি ২৫ পর্যন্ত বিধানাবলি অনুসরণ করিতে হইবে।
কোনো প্রতিষ্ঠানে চাঁদা, অনুদান ও বরাদ্দ প্রদান
> কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী কিংবা তাহার পক্ষ হইতে অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচন-পূর্ব সময়ে উক্ত প্রার্থীর নির্বাচনি এলাকায় বসবাসকারী কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা উক্ত এলাকা বা অন্যত্র অবস্থিত কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে বা গোপনে কোনো প্রকার চাঁদা বা অনুদান বা উপটৌকন প্রদান করিতে বা প্রদানের অঙ্গীকার বা প্রতিশ্রুতি প্রদান করিতে পারিবেন না।
> কোনো প্রার্থী কোনো প্রতিষ্ঠান বা সমিতি বা সংগঠন হইতে কোনো প্রকার সংবর্ধনা গ্রহণ করিতে পারিবেন না।
> কোনো প্রার্থী নির্বাচন পূর্ব সময়ে কোনো সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোন প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কিংবা ফলক উন্মোচন করা যাইবে না।
> নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারি বা আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল হইতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোনো প্রকার অনুদান ঘোষণা বা বরাদ্দ প্রদান বা অর্থ অবমুক্ত করিতে পারিবে না।
সার্কিট হাউজ, ডাক-বাংলো, ইত্যাদি ব্যবহার
> সরকারি ডাক-বাংলো, রেস্ট হাউজ, সার্কিট হাউজ বা কোনো সরকারি কার্যালয়কে কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে প্রচারের স্থান হিসাবে ব্যবহার করা বা এতদুদ্দেশ্যে উহাতে অবস্থান করা যাইবে না।
> অন্য কোনো বিধিমালা বা নীতিমালায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নির্বাচন পরিচালনার কাজে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ সরকারি ডাক-বাংলো, রেস্ট হাউজ ও সার্কিট হাউজ ব্যবহারে অগ্রাধিকার পাইবেন।
জনসভা, পথসভা ও সমাবেশ অনুষ্ঠান
নির্বাচনি প্রচারণায় কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তৎকর্তৃক মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তির জন্য নিম্নবর্ণিত বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে, যথা-
ক. প্রচারণার ক্ষেত্রে সকলে প্রার্থী সমান অধিকার পাইবেন, তবে প্রতিপক্ষের জনসভা, শোভাযাত্রা এবং অন্যান্য প্রচারাভিযান পন্ড বা উহাতে বাধা প্রদান বা ভীতিসঞ্চারমূলক কিছু করিতে পারিবেন না;
খ. নির্বাচনি প্রচারণা শুরুর পূর্বে রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী কর্তৃক যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট নির্বাচনি প্রচারণার পরিকল্পনা প্রদান করিতে হইবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাহা সমন্বয় করিবেন;
গ. জনসভার দিন, সময় ও স্থান সম্পর্কে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে লিখিত অনুমতি গ্রহণ করিবেন, তবে এইরূপ অনুমতি লিখিত আবেদন প্রাপ্তির সময়ের ক্রমানুসারে প্রদান করিতে হইবে এবং জনসভার অনুমতি গ্রহণের লিখিত কপি স্থানীয় নির্বাচন কমিশন অফিসে জমা দিতে হইবে;
ঘ. কোনো প্রার্থী জনসভা করিতে চাহিলে প্রস্তাবিত সভার কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা পূর্বে জনসভার স্থান এবং সময় সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিতে হইবে, যাহাতে উক্ত স্থানে চলাচল ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারে;
ঙ. জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করিতে পারে এমন কোনো স্থান, সড়ক, মহাসড়ক ও জনপথে জনসভা, পথসভা কিংবা কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ করিতে পারিবেন না এবং প্রার্থী বা দলের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তিও অনুরূপভাবে জনসভা বা পথসভা বা সভা-সমাবেশ করিতে পারিবেন না;
চ. কোনো জনসভা অনুষ্ঠানে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ বাধাদান করিলে বা অন্য কোনোভাবে গোলযোগ সৃষ্টি করিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জনসভার আয়োজকবৃন্দ পুলিশের শরণাপন্ন হইবেন এবং পুলিশ তৎক্ষণাৎ কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে;
ছ। কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করিয়া বিদেশে কোনো প্রকার জনসভা, পথসভা, সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠান বা কোনো প্রকার প্রচার-প্রচারণা করিতে পারিবেন না।
লিফলেট বা হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার ও বিলবোর্ড ব্যবহার
নির্বাচনি প্রচারণায়—
ক. কোনো প্রকার পোস্টার ব্যবহার করা যাইবে না;
খ. অপচনশীল দ্রব্য (যেমন- রেক্সিন, পলিথিন, প্লাস্টিক তথা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এরূপ কোন উপাদানে তৈরি কোনো প্রচারপত্র, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল, ফেস্টুন ও ব্যানার) ব্যবহার করা যাইবে না;
গ. কোনো প্রার্থী কিংবা তাহার পক্ষে অন্যকোনো ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় অবস্থিত কোনো দালান, দেওয়াল, গাছ, বেড়া, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি, সরকারি বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের স্থাপনাসমূহে, এবং বাস, ট্রাক, ট্রেন, স্টিমার, লঞ্চ, রিক্সা, অটোরিক্সা, লেগুনা, ট্যাক্সি, বেবিটেক্সি বা অন্য কোনো যানবাহনে কোনো প্রকার লিফলেট বা হ্যান্ডবিল, ফেস্টুন সাঁটাইতে পারিবে না, তবে অন্য কোনো স্থানে লিফলেট ও ব্যানার বা হ্যান্ডবিল টাঙ্গাইতে পারিবে;
ঘ. কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লিফলেট বা হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার ও বিলবোর্ড এর উপর অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লিফলেট বা হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার ও বিলবোর্ড লাগানো যাইবে না, এবং উক্ত লিফলেট বা হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার ও বিলবোর্ড এর কোনো প্রকার ক্ষতিসাধন তথা বিকৃতি বা বিনষ্ট করা যাইবে না:
ঙ. ইলেকট্রনিক ও ডিজিটাল মাধ্যম ব্যতীত নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যবহৃতব্য ব্যানার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ও ফেস্টুন সাদা-কালো রঙের হইবে এবং ব্যানার আয়তনে অনধিক ১০ (দশ) ফুট × ৪ (চার) ফুট, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল আয়তনে অনধিক A4 সাইজের (৮.২৭ ইঞ্চি × ১১.৬৯ ইঞ্চি) এবং ফেস্টুন আয়তনে অনধিক ১৮ ইঞ্চি x ২৪ ইঞ্চি হইবে, এবং ব্যানার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ও ফেস্টুনে প্রতীক ও নিজের ছবি ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির ছবি বা প্রতীক ছাপাইতে পারিবে না;
চ. দফা (ঙ) তে যাহাই থাকুক না কেন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত হইলে, সেইক্ষেত্রে তিনি কেবল তাহার বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবি ব্যানার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ও ফেস্টুনে ছাপাইতে পারিবেন, এবং উল্লিখিত ছবি Portrait আকারে হইতে হইবে, এবং উহা কোনো অনুষ্ঠান ও জনসভায় নেতৃত্বদান বা প্রার্থনারত অবস্থায় বা ভঙ্গিমায় ছাপানো যাইবে না;
ছ. নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যবহৃতব্য সাধারণ ছবি (Portrait) এর আয়তন ৬০ (ষাট) সেন্টিমিটার × ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) সেন্টিমিটারের অধিক হইবে না;
জ. কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনি প্রতীকের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ বা উচ্চতা ৩ (তিন) মিটারের অধিক হইবে না;
ঝ. মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা ও মুদ্রণের তারিখবিহীন কোন ব্যানার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ও ফেস্টুন ব্যবহার করা যাইবে না;
ঞ. ব্যানার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ও ফেস্টুনে পলিথিনের আবরণ, এবং প্লাস্টিক (পিভিসি) ব্যানার ব্যবহার করা যাইবে না।
ভোটার স্লিপ ব্যবহার
কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাহার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান—
ক. ভোটারের নাম, ভোটার নম্বর ও ভোটকেন্দ্রের নাম উল্লেখপূর্বক ভোটার স্লিপ প্রদান করিতে পারিবেন, তবে কোনো ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে উক্ত ভোটার স্লিপ বিতরণ করিতে পারিবেন না;
খ. দফা (ক) তে উল্লিখিত ভোটার স্লিপ ১২ সেন্টিমিটার × ৮ (আট) সেন্টিমিটার। আকারের অধিক হইতে পারিবে না, এবং উহাতে প্রার্থীর নাম বা ছবি, সংশ্লিষ্ট পদের। নাম, প্রতীক বা ভোট প্রার্থনা করিয়া কোনো কথা বা এইরূপ ইঙ্গিতবহ কিছু উল্লেখ করিতে পারিবেন না;
গ. মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, সংখ্যা ও তারিখবিহীন কোনো ভোটার স্লিপ মুদ্রণ করিতে পারিবে না।
যানবাহন ব্যবহার, মিছিল ও শোডাউন
কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তৎকর্তৃক মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি—
ক. নির্বাচনি প্রচারণায় কোনো বাস, ট্রাক, নৌযান, মোটরসাইকেল কিংবা অন্য কোনো যান্ত্রিক বাহন সহকারে কোনো মিছিল, জনসভা কিংবা কোনরূপ শোডাউন করিতে পারিবেন না;
খ. নির্বাচনি প্রচারে যানবাহন সহকারে কিংবা যানবাহন ব্যতীত কোনো ধরনের মশাল মিছিল করা যাইবে না;
গ. নির্বাচনি প্রচারে কোন হেলিকপ্টার বা অন্য কোনো আকাশযান ব্যবহার করিতে পরিবেন না, তবে দলীয় প্রধান বা সমপর্যায়ের পদধারী এবং সাধারণ সম্পাদক বা উহার সমপর্যায়ের পদধারী ব্যক্তিগণ যাতায়াতের জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করিতে পারিবেন, কিন্তু এইরূপ যাতায়াতের সময় হেলিকপ্টার হইতে লিফলেট, ব্যানার বা অন্য কোনো প্রচার সামগ্রী প্রদর্শন, বিতরণ বা নিক্ষেপ করা যাইবে না;
ঘ. মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল কিংবা শোডাউন করিতে পারিবেন না, এবং রিটার্নিং অফিসারের নিকট মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রার্থী বা তাহার প্রতিনিধিসহ পাঁচজনের অধিক ব্যক্তি গমন করিতে পারিবেন না;
ঙ. যান চলাচলের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন ভোটকেন্দ্রের নির্ধারিত চৌহদ্দির ভিতরে ও বাহিরে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ ব্যতীত অন্য কেহ মোটরসাইকেল বা অন্য কোনো যান্ত্রিক বাহন চালাইতে পারিবেন না;
চ. নির্বাচনি প্রচারণা এবং ভোটগ্রহণের সময় কোনো প্রকার ড্রোন, কোয়াডকপ্টার (Quadcopter) বা এইরূপ যন্ত্র ব্যবহার করিতে পারিবেন না।
মনোনয়নপত্র দাখিলে বাধা প্রদান
কোনো প্রার্থী বা কোনো প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট মনোনয়নপত্র দাখিল বা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করিবার সময় অন্য কোনো প্রার্থী বা কোনো ব্যক্তি কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিতে পারিবেন না।
দেওয়াল লিখন
কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তৎকর্তৃক মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো দেওয়ালে লিখিয়া বা অংকন করিয়া কোনো প্রকার নির্বাচনি প্রচারণা চালাইতে পারিবেন না।
প্রতীক হিসেবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার
নির্বাচনি প্রচারণায় প্রতীক হিসাবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার করা যাইবে না।
গেইট, ভোরণ, প্যান্ডেল ও ক্যাম্প স্থাপন এবং আলোকসজ্জাকরণ
নির্বাচনি প্রচারণার জন্য কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তৎকর্তৃক মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি—
ক. কোনো গেইট বা তোরণ নির্মাণ করিতে পারিবে না, এবং চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী কোনো সামগ্রী স্থাপন বা কোনো স্থাপনা নির্মাণ করিতে পারিবেন না:
খ. ৪০০ (চারশত) বর্গফুট এর অধিক স্থান লইয়া কোনো প্যান্ডেল তৈরি করিতে পারিবেন না:
গ. প্রচারণার অংশ হিসাবে কোনো প্রকার আলোকসজ্জা করিতে পারিবেন না;
ঘ. কোনো সড়ক কিংবা জনগণের চলাচল ও সাধারণ ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত স্থানে নির্বাচনি ক্যাম্প স্থাপন করিতে পারিবেন না;
ঙ. একজন প্রার্থী দলীয় ও সহযোগী সংগঠনের কার্যালয় নির্বিশেষে প্রতিটি ইউনিয়নে বা প্রতিটি পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন এলাকার প্রতি ওয়ার্ডে একটির অধিক নির্বাচনি ক্যাম্প অথবা কোনো নির্বাচনী এলাকায় একটির অধিক কেন্দ্রীয় নির্বাচনি ক্যাম্প স্থাপন করিতে পারিবেন নাঃ
চ. নির্বাচনি ক্যাম্পে ভোটারগণকে কোনোরূপ কোমল পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন বা কোনোরূপ উপটৌকন প্রদান করিতে পারিবেন না।
বিলবোর্ড ব্যবহার
নির্বাচনি প্রচারণার ক্ষেত্রে—
ক. যে কোনো ধরনের বিলবোর্ড ব্যবহার করা যাইবে, তবে বিলবোর্ডে প্রচারণার অংশের আয়তন অনধিক ১৬ (ষোল) ফুট × ৯ (নয়) ফুট হইতে হইবে;
খ. কোনো প্রার্থী কোনো নির্বাচনী এলাকায় ২০ (বিশ) টির অধিক বিলবোর্ড ব্যবহার করিতে পারিবেন না;
গ. বিলবোর্ড স্থাপনের মাধ্যমে কোনক্রমেই জনসাধারণের বা যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা যাইবে না, এবং পরিবেশের ক্ষতি বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে এমনভাবে বিলবোর্ড স্থাপন করা যাইবে না।
উস্কানিমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, বিস্ফোরক বহন এবং ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রচার
কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি—
ক. নির্বাচনি প্রচারণাকালে ব্যক্তিগত কুৎসা রটনা, অশালীন এবং আক্রমণাত্মক বা ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করিয়া বক্তব্য প্রদান বা কোনো ধরনের তিক্ত বা উস্কানিমূলক বা মানহানিকর কিংবা লিঙ্গ, সাম্প্রদায়িকতা বা ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কোনো বক্তব্য প্রদান করিতে পারিবেন না;
খ. মসজিদ, মন্দির, ক্যায়াং (প্যাগোডা), গির্জা বা অন্য কোনো ধর্মীয় উপাসনালয় এবং কোনো সরকারি অফিস বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো প্রকার নির্বাচনি প্রচারণা চালাইতে পারিবেন না;
গ. নির্বাচন উপলক্ষে কোনো নাগরিকের জমি, ভবন বা অন্য কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির কোনোরূপ ক্ষতিসাধন এবং অনভিপ্রেত গোলযোগ ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ দ্বারা কাহারও শান্তি বিনষ্ট করিতে পারিবেন না;
ঘ. কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে ভোটারদের প্রভাবিত করিবার উদ্দেশ্যে কেহ কোনো প্রকার বলপ্রয়োগ বা অর্থ ব্যয় করিতে পারিবেন না;
ঙ. ভোটকেন্দ্রের নির্ধারিত চৌহদ্দির মধ্যে কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ ব্যতীত অন্য কেহ কোনো ধরনের অস্ত্র বা বিস্ফোরক দ্রব্য এবং Arms Act, 1878 (Act No. XI of 1878) এর সংজ্ঞায় নিরুপিত অর্থে Firearms বা অন্য কোনো Arms, লাঠি বা দেশীয় কোনো ধারালো বা ভোঁতা অস্ত্র বহন করিতে পারিবেন না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচনি প্রচারণা
কোনো প্রার্থী বা তাহার নির্বাচনি এজেন্ট বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করিয়া নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা পরিচালনা করিতে পারিবেন, তবে সেই ক্ষেত্রে—
ক. প্রার্থী বা তাঁহার নির্বাচনি এজেন্ট বা দল বা প্রার্থী সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নাম, একাউন্ট আইডি, ই-মেইল আইডিসহ অন্যান্য শনাক্তকরণ তথ্যাদি উক্তরূপে প্রচার-প্রচারণা শুরুর পূর্বে রিটার্নিং অফিসারের নিকট দাখিল করিবেন;
খ. প্রচার-প্রচারণাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করিতে পারিবেন না;
গ. ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ভুল তথ্য, কাহারো চেহারা বিকৃত করা ও নির্বাচন সংক্রান্ত বানোয়াট তথ্যসহ কোনো প্রকার ক্ষতিকর আধেয় (content) তৈরি ও প্রচার করিতে পারিবেন না:
ঘ. প্রতিপক্ষ, নারী, সংখ্যালঘু বা অন্য কোনো জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করিয়া ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ বা উস্কানিমূলক ভাষা ব্যবহার করিতে পারিবেন না;
ঙ. নির্বাচনি স্বার্থ হাসিল করিবার জন্য ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতির অপব্যবহার করা হয় এইরূপ কোনো কর্মকান্ড করিতে পারিবেন নাঃ
চ. সত্যতা যাচাই ব্যতিরেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো কনটেন্ট শেয়ার ও প্রকাশ করিতে পারিবেন না;
ছ. রাজনৈতিক দল, প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি, ভোটারদের বিভ্রান্ত করিবার জন্য কিংবা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কোনো প্রার্থী বা ব্যক্তির চরিত্র হনন কিংবা সুনাম নষ্ট করিবার উদ্দেশ্যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য কোনো মাধ্যমে, সাধারণভাবে বা সম্পাদন (Edit) করিয়া কিংবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা [Artificial Intelligence (AI)] দ্বারা কোনো মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, পক্ষপাতমূলক, বিদ্বেষপূর্ণ, অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ এবং মানহানিকর কোনো আধেয় (content) তৈরি, প্রকাশ, প্রচার ও শেয়ার করিতে পারিবেন না।
মাইক ও লাউড স্পিকার ব্যবহার
১. কোনো প্রার্থী বা তাহার পক্ষে কোনো ব্যক্তি কোনো নির্বাচনি এলাকায় একইসঙ্গে ৩ (তিন) টির অধিক মাইক্রোফোন বা লাউড স্পিকার ব্যবহার করিতে পারিবেন না।
২. কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তৎকর্তৃক মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি প্রচারণার সময়কালে কোনো নির্বাচনি এলাকায় মাইক বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী অন্যবিধ যন্ত্রের ব্যবহার দুপুর ২ (দুই) ঘটিকা হইতে রাত ৮ (আট) ঘটিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখিবেন।
৩. নির্বাচনি প্রচারকার্যে ব্যবহৃত মাইক বা শব্দ বর্ধনকারী যন্ত্রের শব্দের মানমাত্রা ৬০ (ষাট) ডেসিবেলের অধিক হইতে পারিবে না।
প্রচারণার সময়
কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তৎকর্তৃক মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের ৩ (তিন) সপ্তাহ সময়ের পূর্বে কোনো প্রকার নির্বাচনি প্রচার শুরু করিতে পারিবেন না, এবং ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পূর্ববর্তী ৪৮ (আটচল্লিশ) ঘন্টা পূর্বে নির্বাচনি প্রচারণা সমাপ্ত করিবেন।
প্রচারণা সামগ্রী অপসারণ
ভোটগ্রহণ সমাপ্তির পরবর্তী ৪৮ (আটচল্লিশ) ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচনি এলাকায় ব্যবহৃত নিজ নিজ প্রচারণা সামগ্রী প্রার্থী নিজ দায়িত্বে অপসারণ করিবেন।
সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তিবর্গের নির্বাচনি প্রচারণা
সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণ—
ক. তাহাদের সরকারি কর্মসূচির সহিত কোনো নির্বাচনি কর্মসূচি বা কর্মকান্ড যোগ করিতে পারিবেন না;
খ. তাহাদের নিজের বা অন্যের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় সরকারি যানবাহন, সরকারি প্রচারযন্ত্রের ব্যবহার বা অন্যবিধ সরকারি সুবিধা ভোগ করিতে পারিবেন না এবং এতদুদ্দেশ্যে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী বা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ব্যবহার করিতে পারিবেন না:
গ. প্রার্থী কিংবা অন্য কোনো প্রার্থীর নির্বাচনি এজেন্ট না হইলে ভোটদান ব্যতিরেকে নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ কিংবা ভোট গণনার সময় গণনাকক্ষে প্রবেশ বা উপস্থিত থাকিতে পারিবেন না;
ঘ. জাতীয় সংসদের কোনো শূন্য আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় নির্বাচন-পূর্ব সময়ের মধ্যে কোনো সফর বা নির্বাচনি প্রচারণায় যাইতে পারিবেন না।
নির্বাচনি প্রচারণায় সরকারি সুবিধা গ্রহণ
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর—
ক. কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তৎকর্তৃক মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচনি এলাকায়, সংশ্লিষ্ট জেলায় বা অন্য কোনো স্থানে নির্বাচনি কাজে সরকারি প্রচারযন্ত্রের ব্যবহার, সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণকে ব্যবহার বা কোনোরূপ সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করিত পারিবেন না;
খ. কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তৎকর্তৃক মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কর্তৃক সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীসহ নির্বাচন আয়োজনের সহিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণকে কোনো দলীয় বা রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যবহার করিতে পারিবেন না;
গ. কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তাহার নির্বাচনি এলাকায় সরকারি উন্নয়ন কর্মসূচিতে কর্তৃত্ব করিতে পারিবেন না কিংবা এতদসংক্রান্ত সভায় যোগদান করিতে পারিবেন না;
ঘ. কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে সভাপতি বা সদস্য হিসাবে নির্বাচিত বা মনোনীত হইয়া থাকিলে নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হইবার পূর্বেই তাহাকে উক্ত পদ হইতে পদত্যাগ করিতে হইবে।
নির্বাচনি ব্যয়সীমা
১. কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী The Representation of the People Order, 1972 এর Article 44B(3) তে নির্ধারিত ব্যয়সীমা অতিক্রম করিতে পারিবেন না।
২. কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তৎকর্তৃক মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচন বিষয়ক কোনো কনটেন্ট তৈরি, বিজ্ঞাপন প্রদান, বুস্টিং ও স্পন্সরশিপসহ সকল প্রচারণা ব্যয় এর শিরোনামে সামগ্রিক নির্বাচনি ব্যয় এর সহিত নির্বাচন কমিশন বরাবর দাখিল করিবেন।
৩. নির্বাচনি ব্যয় রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা এবং প্রার্থীর ক্ষেত্রে ২০ (বিশ) হাজার টাকার উর্ধ্বে হইলে তাহা বাধ্যতামূলকভাবে ব্যাংকিং মাধ্যমে সম্পাদন করিতে হইবে;
৪. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচনি প্রচারণা বাবদ ব্যয়সমূহ প্রার্থীদের নির্বাচনি ব্যয়সীমার অন্তর্ভুক্ত হইবে।
৫. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণায় বিদেশি অর্থায়নে বিজ্ঞাপন প্রদান বা প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনা করা যাইবে না।
ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার
১. ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনি কর্মকর্তা ও কর্মচারী, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, নির্বাচনি এজেন্ট, পোলিং এজেন্ট, নির্বাচনি পর্যবেক্ষক, কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত ব্যক্তিবর্গ, এবং কেবল ভোটারদের প্রবেশাধিকার থাকিবে।
২. কোনো রাজনৈতিক দলের বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মীগণ ভোট প্রদানের উদ্দেশ্য ব্যতীত ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে প্রবেশ বা ঘুরাঘুরি করিতে পারিবেন না।
৩. পোলিং এজেন্টগণ তাহাদের জন্য নির্ধারিত স্থানে উপবিষ্ট থাকিয়া তাহাদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করিবেন।
৪. পোলিং এজেন্ট বা কোনো ভোটার প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণামূলক কোনো বক্তব্য ও প্রতীক সংবলিত কোনো শার্ট, জ্যাকেট, ফতুয়া, ক্যাপ, ব্যাজ বা এইরূপ কোনো কিছু পরিধান করিয়া ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করিতে পারিবেন না।
নির্বাচনি ইশতেহার পাঠ ও আচরণবিধি প্রতিপালনের ঘোষণা
প্রতীক বরাদ্দের পর পারস্পারিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচনি প্রচারণার উদ্দেশ্যে রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসার একই মঞ্চে সকল প্রার্থীদের উপস্থিতিতে তাহাদের নির্বাচনি ইশতেহার পাঠ এবং আচরণবিধি প্রতিপালনের ঘোষণা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন।
গণমাধ্যমে নির্বাচনি সংলাপ
নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী বা দলের প্রতিনিধি টেলিভিশন চ্যানেল কর্তৃক আয়োজিত নির্বাচনি সংলাপে অংশ নিতে পারিবেন, তবে কাহাকেও ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করিয়া কোনো বক্তব্য প্রদান করিতে পারিবেন না।
নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম
১. এই বিধিমালার যেকোনো বিধানের লঙ্ঘন ‘নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম’ হিসাবে গণ্য হইবে, এবং উক্তরূপ অনিয়মের দ্বারা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল প্রতিকার চাহিয়া নির্বাচনি তদন্ত কমিটি বা কমিশনের নিকট দরখাস্ত পেশ করিতে পারিবেন।
২. উপ-বিধি (১) এর অধীন প্রাপ্ত দরখাস্ত কমিশনের বিবেচনায় বস্তুনিষ্ঠ হইলে কমিশন উহা তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট বা যেকোনো নির্বাচনি তদন্ত কমিটির নিকট প্রেরণ করিবেন।
৩. কোনো তথ্যের ভিত্তিতে বা অন্য কোনোভাবে কমিশনের নিকট নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো অনিয়ম দৃষ্টিগোচর হইলে, কমিশন—
ক. উহা প্রয়োজনীয় তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট বা অন্য কোনো নির্বাচনি তদন্ত কমিটির নিকট প্রেরণ করিতে পারিবেন; অথবা
খ. তাৎক্ষণিকভাবে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা রিটার্নিং অফিসার বা প্রিজাইডিং অফিসার অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিতে পারিবন।
৪. এই বিধির উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নির্বাচনি তদন্ত কমিটি The Representation of the People Order, 1972 এর Article 91A এর বিধান মোতাবেক তদন্ত কার্য পরিচালনা করিয়া কমিশনের নিকট সুপারিশ প্রদান করিবে।
বিধিমালা লঙ্ঘন শাস্তিযোগ্য অপরাধ
The Representation of the People Order, 1972 এর Article 91B(3) মোতাবেক—
ক. কোনো প্রার্থী বা তাহার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচন পূর্ব সময়ে এই বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ডে অথবা অনধিক ১ (এক) লক্ষ ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদন্ডে অথবা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন;
খ. কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নির্বাচন-পূর্ব সময়ে এই বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য উক্ত রাজনৈতিক দল অনধিক ১ (এক) লক্ষ ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
কমিশন কর্তৃক প্রার্থিতা বাতিল
১. এই বিধিমালার অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক
না কেন, যদি কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত রেকর্ড কিংবা লিখিত রিপোর্ট হইতে কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী বা তাহার নির্বাচনি এজেন্ট এই বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করিয়াছেন বা লঙ্ঘনের চেষ্টা করিয়াছেন এবং অনুরূপ লঙ্ঘন বা লঙ্ঘনের চেষ্টার জন্য তিনি নির্বাচিত হইবার অযোগ্য হইতে পারেন, তাহা হইলে কমিশন বিষয়টি সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তদন্তের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
২. উপ-বিধি (১) এর অধীন তদন্ত রিপোর্ট প্রাপ্তির পর কমিশন যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাহার নির্বাচনি এজেন্ট বা তাহার নির্দেশে বা তাহার পক্ষে তাহার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিতে অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান এই বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করিয়াছেন বা লঙ্ঘনের চেষ্টা করিয়াছেন যাহার জন্য তিনি নির্বাচিত হইবার অযোগ্য হইতে পারেন, তাহা হইলে কমিশন, তাৎক্ষণিকভাবে লিখিত আদেশ দ্বারা, Representation of the People Order, 1972 এর Article 91E এর বিধান মোতাবেক উক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করিতে পারিবে।
৩. উপ-বিধি (২) এর অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশ কমিশন, যথাশীঘ্র সম্ভব, সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারকে অবহিত করিবে, এবং উহা সরকারি গেজেটে প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
রাজনৈতিক দল কর্তৃক প্রদত্ত অঙ্গীকারনামা
রাজনৈতিক দলসমূহ এই আচরণ বিধির সকল বিধান মানিয়া চলিবে এই মর্মে তফসিল-১ এ উল্লিখিত নমুনা অনুযায়ী একটি অঙ্গীকারনামা নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় দাখিল করিবে।
প্রার্থী কর্তৃক বিধিমালার বিধানসমূহ মানিয়া চলিবার অঙ্গীকারনামা
কোনো ব্যক্তি প্রার্থী হিসাবে ঘোষিত হইলে তাহাকে তফসিল-২ এ উল্লিখিত নমুনা অনুযায়ী এই মর্মে অঙ্গীকার করিতে হইবে যে, তিনি এই বিধিমালার সকল বিধান মানিয়া চলিবেন এবং যদি তাহার বা তাহার কোনো সহযোগীর দ্বারা এই বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করা হয় তাহা হইলে, তিনি প্রচলিত আইন বা এই বিধিমালার বিধান অনুযায়ী প্রদত্ত শাস্তি মানিয়া লইতে বাধ্য থাকিবেন।
রহিতকরণ ও হেফাজত
১. নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের প্রজ্ঞাপন এস, আর, ও নং ২৬৯-আইন/২০০৮, তারিখ ৩ আশ্বিন ১৪১৫ মোতাবেক ১৮ সেপ্টেম্বর ২০০৮ দ্বারা জারীকৃত সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮, অতঃপর উক্ত বিধিমালা বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্বারা রহিত করা হইল।
২. উপ-বিধি (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও, উক্ত বিধিমালার অধীন—
ক. কৃত কোনো কাজ-কর্ম, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা এই বিধিমালার আওতায় কৃত, গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;
খ. গৃহীত কোনো কার্যক্রম বা সূচিত কোনো কার্যধারা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে এইরূপভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে যেন উহা এই বিধিমালার অধীন গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে।