News update
  • From DUCSU to JUCSU, Shibir Extends Its Winning Streak     |     
  • Dhaka's air quality in 'moderate' range on Saturday morning     |     
  • Deadly Floods Displace Over 100,000 in South Sudan     |     
  • Nepal has first woman Prime Minister as March elections set     |     
  • 50 Killed as Israel Intensifies Strikes on Gaza City     |     

সেই তামান্না বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক পরীক্ষা 2022-08-05, 10:36am




যশোরের অদম্য শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার নূরা প্রতিবন্ধী কোটায় পরীক্ষা না দিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ‘ক’ ইউনিটে উত্তীর্ণ হয়েছেন।


বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়।


‘ক’ ইউনিটে গুচ্ছ পরীক্ষায় পাসের হার ৫৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ। প্রকাশিত ফলাফলে তামান্না ৪৮.২৫ নম্বর অর্জন করেছেন। তামান্না আক্তার নূরা নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেন।


এর আগে গত ৩০ জুলাই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের কেন্দ্রীয় গ্যালারিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তামান্না। তিনি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া আলীপুরের রওশন আলী ও খাদিজা পারভীন শিল্পী দম্পতির সন্তান।

শিক্ষাজীবনে অদম্য এই তরুণী শুধুমাত্র এক পা দিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সবকটি পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে সারাদেশে চমক দেখিয়েছেন। তামান্নার এই সাফল্যের কারণে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা খোঁজখবর নেন। একইসঙ্গে তারা দুই বোন তামান্নার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসেন। তার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থাও করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা।


এদিকে মেধাতালিকায় প্রাথমিকভাবে উত্তীর্ণ হয়ে উচ্ছ্বসিত তামান্না। তিনি বলেন, প্রাথমিক রেজাল্টে খুশি লাগছে। নম্বরও ভালো পেয়েছি। আশা করি যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাব।


তামান্না বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও অন্যান্য ভাই-বোনদের খরচ চালিয়ে বাবার পক্ষে আমাকে পড়ানো কঠিন হয়ে পড়বে। তাই আমার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছা রয়েছে। যে নম্বর এসেছে সেই নম্বর দিয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ চয়েজ দেবেন।


তামান্নার বাবা রওশন আলী জানান, তামান্নার স্বপ্ন গবেষণাধর্মী কোনও বিষয়ে পড়াশোনা করে বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকরি করার। স্বপ্ন পূরণে কয়েকমাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত সেখানে তার চান্স হয়নি। যবিপ্রবিতে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। সেই রেজাল্টে উত্তীর্ণ হয়েছে। আশাকরি তার স্বপ্ন পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার চান্স হবে।


তিনি আরও বলেন, যবিপ্রবিতে চান্স হলে সেটা তামান্না আর আমার পরিবারের জন্য ভালো হবে। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ল্যাব ও বিভিন্ন ব্যবহারিকের জন্য বিভিন্ন ভবনে যাওয়া আসা করা লাগতে পারে তার। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে লিফট নেই। যবিপ্রবিতে রয়েছে। সেটা তামান্নার পড়াশোনার ক্ষেত্রে ভালো ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া আমি একটি ননএমপিওভুক্ত দাখিল মাদরাসার শিক্ষক। টিউশনি করে সংসার চালাই। আমার পক্ষে জেলার বাইরে পড়াশোনার খরচ বহন করাও সম্ভব হয়ে উঠবে না।

তাছাড়া তামান্না যেখানেই পড়াশুনা করবে সেখানে তার সঙ্গে পরিবারের থাকা লাগবে। কেননা তার চলাচলে সকল কাজে একজনের সহযোগিতা লাগে। তাই তার ইচ্ছা বাড়ির কাছে নিজ শহরে যবিপ্রবিতে পড়াশোনা করার। আমার চাকরিটাও করা যাবে, আবার সে ভালোভাবে লেখাপড়াটাও করতে পারবে। তামান্নার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।


যবিপ্রবির জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুর রশিদ অর্ণব বলেন, তামান্নার প্রতিবন্ধী কোটায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু সেই সুযোগ সে নেয়নি। নিজের মেধার জোরে পড়াশোনা করতে চায়। তার এই অদম্য ছুটে চলা অবশ্যই প্রশংসিত।


উল্লেখ্য, তামান্না আক্তার নূরার জন্ম ২০০৩ সালের ১২ ডিসেম্বর। তামান্নার বাবা রওশন আলী ঝিকরগাছা উপজেলার দাউলিয়া মহিলা দাখিল মাদরাসার (ননএমপিও) শিক্ষক। মা খাদিজা পারভীন গৃহিণী। তিন ভাইবোনের মধ্যে তামান্না সবার বড়। ছোট বোন মুমতাহিনা রশ্মি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। ভাই মুহিবুল্লা তাজ প্রথম শ্রেণিতে। ছয় বছর বয়সে তামান্নাকে পায়ে কাঠি দিয়ে লেখানোর চেষ্টা করে তার পরিবার। গেল বছরে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পরে গত ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করাসহ দুটি স্বপ্নের কথা জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন তামান্না।


সেই চিঠির প্রেক্ষিতে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ফোন দিয়ে তামান্নাকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা। একইসঙ্গে দুই বোন তামান্নার স্বপ্ন পূরণে যেকোনো সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।